উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮/০৮/২০২৩ ৯:৫৬ এএম

মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) ২০১৭ সালে দেশটির সামরিক বাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গা জনগণের ওপর সংঘটিত ভয়াবহ নৃশংসতার ষষ্ঠ বার্ষিকীতে দুঃখ প্রকাশ করে বলেছে, জাতীয় ঐক্য সরকার রোহিঙ্গা জনগণকে মিয়ানমারের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

এক বিবৃতিতে এনইউজি জানায়, হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা ও গুম করা হয়েছে। গণধর্ষণসহ ও যৌন সহিংসতাকে রোহিঙ্গা নারী ও মেয়েদের ভয় দেখানো ও শাস্তি দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। ভেঙ্গে গেছে শত শত গ্রাম। জীবন ধ্বংস হয়েছে এবং ইতিহাস মুছে ফেলা হয়েছে। গত বছর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার বলেছিল যে এই অপরাধগুলো গণহত্যার সমান।

আজ ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মানুষ শুধু তাদের গ্রাম ও বাড়ি থেকে নয়, তারা দেশ থেকেও বাস্তুচ্যুত হয়ে আছে। অনেকেই বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে সংকট ও গভীর দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতীয় ঐক্য সরকার রোহিঙ্গা জনগণকে মিয়ানমারের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। রোহিঙ্গা এবং অন্যান্য ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চলা বৈষম্যমূলক নীতি ও অনুশীলনকে আমরা অত্যন্ত লজ্জার সাথে স্বীকার করি। এই কাজগুলো সামরিক নৃশংসতার ভিত্তি স্থাপন করেছিল এবং সামরিক নেতাদের একটি অবৈধ জান্তার নেতৃত্বে দেশব্যাপী অপরাধ করতে উত্সাহিত করেছিল।

একজন রোহিঙ্গা নেতা জাতীয় সরকারে আছে জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতীয় ঐক্য সরকার রোহিঙ্গা এবং অন্যান্য বাস্তুচ্যুত সম্প্রদায়কে স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসই উপায়ে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সামাজিক পরিবর্তন এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং তাদের প্রতিনিধিদের সাথে পরামর্শ করে বৈষম্যমূলক আইনের সম্পূর্ণ সংশোধনের জন্যও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রোহিঙ্গাদের দৃষ্টিভঙ্গি সরকারি নীতি ও কর্মসূচি এবং আইন প্রণয়নের উন্নয়নে সহায়তা নিশ্চিত করতে একজন রোহিঙ্গা নেতা এখন আমাদের মানবাধিকার উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

জাতীয় ঐক্য সরকার ঐতিহাসিক এবং অব্যাহত সামরিক নৃশংসতা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের ন্যায়বিচার প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছে তারা। সত্য বলা এবং জবাবদিহিতা অপরিহার্য তাই রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের প্রকৃত মাত্রাকে আমরা স্বীকৃতি দিচ্ছি। আমরা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতসহ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জবাবদিহিতা ব্যবস্থার সাথে আমাদের পূর্ণ সহযোগিতার অঙ্গীকার করছি।

মিয়ানমারের নতুন ফেডারেল ডেমোক্রেসি চার্টার শান্তি, ন্যায়বিচার, সমতা, মানবাধিকার এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার ওপর প্রতিষ্ঠিত একটি জাতি গঠনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। আমরা মিয়ানমারের সকল জাতি, ধর্ম, সামাজিক গোষ্ঠী এবং সম্প্রদায়ের জনগণকে এটিকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য আহ্বান জানাই।

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বিদেশে অবস্থান করা নাগরিকদের নিয়ে মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) গঠিত হয়েছে। যারা ছায়া সরকারের মতো মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করে।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারে বিদ্রোহী জোটে ভাঙন, যুদ্ধ থামিয়ে জান্তার সঙ্গে হাত মেলাল দ্বিতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী

মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ থামাতে চীনের কূটনৈতিক তৎপরতার ফল মিলল। বেইজিংয়ের মধ্যস্থতায় বিদ্রোহী জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’-এর ...

মার্কিন সহায়তা স্থগিত:থাই হাসপাতাল ছাড়ছে মিয়ানমারের শরণার্থীরা

বিদেশে মার্কিন সহায়তা স্থগিত করতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিশ্বজুড়ে। ইতোমধ্যেই ...

বাংলাদেশেও সব মার্কিন সহায়তা বন্ধ, জানিয়ে দিল ইউএসএআইডি

মার্কিন সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির অর্থায়নে বাংলাদেশে বাস্তবায়নাধীন সব প্রকল্প ও কর্মসূচির ব্যয় অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশনা ...

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের সাথে কাজ করবে ইউএনএইচসিআর

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেছেন যে তার সংস্থা রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান খুঁজে ...

যুক্তরাষ্ট্রের সব বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি বন্ধ করলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি বন্ধ ঘোষণা করেছেন সদ্য শপথ নেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ...

নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তদন্ত করবে জাতিসংঘ

মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হাতে নির্যাতনের শিকার হওয়া রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তদন্ত কর‌বে জাতিসংঘ। মিয়ানমারে ...