ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১৪/০১/২০২৫ ৭:২৫ এএম

মিয়ানমারে অবস্থিত জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) গত ১৬ ডিসেম্বর একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছে। এতে তারা গত ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী কোথায় কোথায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে সেই পরিসংখ্যান ও তথ্য উল্লেখ করেছে। প্রকাশিত মানচিত্রে উল্লেখিত তথ্য-উপাত্তে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। যদিও ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পরও বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ইউএনএইচসিআর-এর এমন অপতথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইসকে সোমবার ডেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এমন ঘটনার লিখিত ব্যাখ্যাও দাবি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় অনুপ্রবেশ ঘটে ২০১৭ সালে। ওই বছরের আগস্টে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের কমবেশি ৭ লাখ মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তবে নতুন করে রোহিঙ্গাদের জায়গা দিতে বাংলাদেশ সরকার অস্বীকৃতি জানালেও এখনও অনুপ্রবেশ থামেনি। ২০২১ সালের পরও বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ২০২৪ সালের সংঘাতের প্রেক্ষিতে অক্টোবরেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নতুন করে ৪০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের তথ্য দিয়েছে।

ঢাকার একজন কূটনীতিক দৈনিক সময়ের আলোর এই প্রতিবেদককে সোমবার সন্ধ্যায় বলেন, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা মিয়ানমার এর অফিস ‘মিয়ানমার ইমার্জেন্সি ওভারভিউ ম্যাপ’ শীর্ষক একটি মানচিত্র গত ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশ করেছে। এই মানচিত্রে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা এবং তারা কোথায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন সেখানকার অবস্থান উল্লেখ করা হয়। মানচিত্রে বলা হয়েছে যে, উল্লেখিত সময়ের মধ্যে ভারতের মনিপুর ও মিজোরামে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিক ৭০ হাজার ৯০০ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী প্রবেশ করেছে। উল্লেখিত ওই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশেও মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিপুলসংখ্যক মানুষ প্রবেশ করেছে। কিন্তু ইউএনএইচসিআরের মানচিত্রে বাংলাদেশের তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

ইউএনএইচসিআরের মানচিত্র অনুযায়ী ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর বাংলাদেশে কোনো রোহিঙ্গা প্রবেশ করেনি, যা অপতথ্য। বিষয়টি বাংলাদেশের নজর কেড়েছে। এ জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট মহাপরিচালক তৌফিক হাসান সোমবার দুপুরে ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস-কে তার দফতরে ডেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ এই বিষয়ে জাতিসংঘের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছে।

আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস জানিয়েছেন যে মানচিত্রটি মিয়ানমারের ইউএনএইচসিআর প্রস্তুত করেছে। বিষয়টি তারা ভালো বলতে পারবে। মিয়ানমারের ইউএনএইচসিআর-কে বিষয়টি জানান হবে এবং কেন এমন হলো তাও জানতে চাওয়া হবে। গোয়েন লুইস আরও জানান যে তারা মিয়ানমারের ইউএনএইচসিআর থেকে বিষয়টি জেনে বাংলাদেশকে জানাবে।

অভিবাসন ও শরণার্থীবিষয়ক বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বলেন, মানচিত্র অনুযায়ী, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর কোনো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। এই তথ্য সঠিক নয়। মিয়ানমার ইউএনএইচসিআর কীভাবে এই মানচিত্র প্রকাশ করল তারাই ভালো বলতে পারবে।

আসিফ মুনীর বলেন, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর প্রচুর রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এ ক্ষেত্রে সংখ্যার তারতম্য হতে পারে কিন্তু কোনো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করার তথ্য না থাকা যথাযথ নয়। এই মানচিত্র কীভাবে কোন যুক্তিতে প্রকাশ করা হলো তা বলা ইউএনএইচসিআরের দায়িত্ব।

তার মতে, এমন হতে পারে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর তথ্যভান্ডারে হালনাগাদ করা হয়নি, যে কারণে মানচিত্রে তা আসেনি। তবে সে ব্যাপারেও ইউএনএইচসিআরই ভালো বলতে পারবে। সুত্র: দৈনিক সময়ের আলো

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারে এক সপ্তাহে তিন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর বোমাবর্ষণ

মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী বৃহস্পতিবার রাখাইন রাজ্যের পাউকতাউ টাউনশিপে বিমান হামলা চালিয়ে কয়েকজন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা ...

মালয়েশিয়ায় জাকির নায়েকের প্রকাশ্যে বক্তব্য দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

ভারতীয় ইসলামী চিন্তাবিদ ও বক্তা ড. জাকির নায়েকের প্রকাশ্যে বক্তৃতা দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে মালয়েশিয়া। ...

মিয়ানমার জান্তা প্রধান ও সু চিসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

রোহিঙ্গা গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রধান কমান্ডার সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং, ...