রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ধার্য প্রথম দিনে কোনো সাক্ষী আদালতে হাজির হননি। আলোচিত এ মামলায় আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য বাদীসহ সাতজন সাক্ষীকে হাজির থাকার জন্য সমন জারি করেছিলেন।
আজ মঙ্গলবার কক্সবাজার জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু কোনো সাক্ষী হাজির হননি। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফরিদুল আলম।
আইনজীবী ফরিদুল ইসলাম জানান, সকালে জেলা কারাগার থেকে মামলার ১৪ আসামিকে আদালতে তোলা হয়। কিন্তু দুপুর ২টা পর্যন্ত মামলার বাদীসহ সাক্ষীরা কেউ আদালতে উপস্থিত হননি। এতে সাক্ষ্যগ্রহণ সম্ভব হয়নি। বিচারক সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পিছিয়ে পরবর্তী দিন ধার্য করবেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, এ মামলায় মোট সাক্ষী ৩৮ জন। অভিযুক্ত ২৯ আসামির মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে ১৪ জন আসামি কারাগারে রয়েছেন। বাকি ১৪ জন পলাতক।
২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়া উপজেলার লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ডি ব্লকে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) সংগঠনের কার্যালয়ে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন মুহিবুল্লাহ। তিনি ওই সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন। পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। প্রায় সাড়ে আট মাস পর তদন্ত শেষে উখিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী সালাহ উদ্দিন গত ১৩ জুন ২৯ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
নিহতের পরিবার ও এআরএসপিএইচের নেতারা এই ঘটনায় মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) জড়িত বলে অভিযোগ করে আসছে। স্বদেশে প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করা ও রোহিঙ্গাদের কাছে মুহিবুল্লাহর জনপ্রিয়তার কারণে আরসা প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনির নির্দেশে তাঁকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। জুনুনিসহ সাতজনের পরিচয় ও অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি বলে তাঁদের নাম অভিযোগপত্রে আনা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত ১১ সেপ্টেম্বর ২৯ জনকে আসামি করে আদালত অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন। ওই দিন শুনানি শেষে আদালত মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন।
এদিকে মুহিবুল্লাহর পরিবার তাঁর হত্যাকাণ্ডের পর জাতিসংঘের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে তৃতীয় কোনো দেশে আশ্রয়ের দাবি জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুই দফায় তাঁর স্ত্রী, সন্তান, মা ও পরিবারের ২৫ জন সদস্য কানাডায় আশ্রয় পেয়েছেন। কেবল মামলার বাদী মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ ট্রানজিট ক্যাম্পে রয়েছেন।