মিয়ানমারে টেকসই স্থায়ী শান্তি, স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্র দেখতে আগ্রহী বাংলাদেশ। প্রতিবেশী দেশটিতে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে রাখাইনে ফেরার আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে বাংলাদেশ সেখানে অনুকূল পরিবেশ দেখতে চায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এক অনানুষ্ঠানিক পরামর্শক সভায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এ মন্তব্য করেন। এ সময় রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য অগ্রাধিকার দিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য একটি ব্যাপক রোডম্যাপের (পথনকশা) আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস সাঙ্গিয়াম্পংসার সভাপতিত্বে সকালে ব্যাংককে ছয় দেশের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অন্যদের মধ্যে মিয়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সোয়ে উপস্থিত ছিলেন।
গত কয়েক মাসে মিয়ানমার থেকে বাড়তি ৬০ হাজার মানুষের অনুপ্রবেশের ফলে দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা মানবিক পরিস্থিতির অবনতিতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি সীমান্ত এলাকায় চলমান সশস্ত্র সংঘাতের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ, ব্যক্তি, মাদক ও অস্ত্র পাচার বিষয়েও গভীর উদ্বেগ জানান। মিয়ানমারে শান্তি, নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য আসিয়ান এবং অন্যান্য প্রধান আঞ্চলিক পক্ষের প্রতি আহ্বান জানান উপদেষ্টা। রাখাইন রাজ্যের অর্থনীতি পুনর্গঠনসহ বাংলাদেশের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তার প্রস্তাব দেন তিনি।
আন্তঃরাষ্ট্রীয় অপরাধ দমনে সরকারের ভূমিকার কথা টেনে মিয়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সোয়ে বলেন, এসব অপরাধী চক্র মিয়ানমারে সশস্ত্র সংঘাতে মদদ জোগাচ্ছে। রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের প্রত্যাবর্তনের জন্য সরকারের উদ্যোগের কথা জানান তিনি।
এর আগে বুধবার ব্যাংককে পৌঁছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। তারা দুই দেশের স্বার্থের ক্ষেত্রে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে এবং দু’পক্ষের মধ্যে সম্মত হওয়া ব্যবস্থার আলোকে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।