প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) হাতিয়ে নেয়া মো. রফিক ওরফে রোহিঙ্গা রফিকের ব্যবহৃত এনআইডিটি স্থগিত করেছে জেলা নির্বাচন অফিস। কার্ডটি বাতিল করে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে। রফিক কক্সবাজার শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সমিতিপাড়ায় বসবাস করেন।
মঙ্গলবার বেলা ৩টায় রোহিঙ্গা ভোটার ও পাসপোর্ট প্রতিরোধ কমিটি নামে একটি সামাজিক সংগঠনের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা নির্বাচন অফিস এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, রোহিঙ্গা ভোটার ও পাসপোর্ট প্রতিরোধ কমিটি নামে একটি সংগঠন রফিককে মিয়ানমারের নাগরিক উল্লেখ করে তার এনআইডি বাতিল করতে আবেদন করেছিল। আমরা আবেদনপত্রটি গ্রহণ করেছি। আমরা প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত ব্যক্তির এনআইডি ব্লক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রোহিঙ্গা ভোটার ও পাসপোর্ট প্রতিরোধ কমিটির নেতারা জানান, অভিযুক্ত রোহিঙ্গা রফিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। নিজের মা-বাবার নাম গোপন করে কথিত মা-বাবার নাম-ঠিকানা ও সূত্র ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশি এনআইডি হাতিয়ে নেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল তার বিরুদ্ধে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন জমা দেন রোহিঙ্গা ভোটার ও পাসপোর্ট প্রতিরোধ কমিটি কক্সবাজার জেলা শাখার নেতারা।
সংগঠনির সভাপতি ও জেলার সাংবাদিক নেতা মো. শহীদুল্লাহ বলেন, রোহিঙ্গাদের অনেকেই প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে এ দেশের নাগরিক হয়ে যাচ্ছে। তারা জেলাজুড়ে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। অবিলম্বে এদের খুঁজে বের করে এনআইডি বাতিলসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে তৎপর হতে হবে।
শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সমিতিপাড়ায় বসবাসকারী একাধিক জনপ্রতিনিধিও ভুল তথ্য দিয়ে রোহিঙ্গা রফিকের এনআইডি হাতিয়ে নেয়ার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তারা জানান, এনআইডি হাতে পেয়ে রফিক অপরাধ জগতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তার বিরুদ্ধে মাদক বিক্রি, নারী ও শিশু নির্যাতন, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহারসহ কমপক্ষে ৮টি মামলা রয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে রোহিঙ্গা রফিক বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমি রোহিঙ্গা হলে আমার মতো হাজার হাজার লোক আছে। তাদের বিরুদ্ধে তো কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয় না।’ নিজেকে বাংলাদেশি দাবি করার পক্ষে এনআইডি ছাড়া জন্ম সনদ বা অন্য কোনো নথি হাতে রয়েছে কি না- এ প্রশ্ন জানতে চাইলে ‘খুব ঝামেলায় আছি’ বলে মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।
পাঠকের মতামত