রোহিঙ্গা সংকট সমাধান ও নির্বাচনী প্রস্তুতির কাজ—যুগপৎ ও সমানতালে করে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে, এমনটা ধরে নিয়ে নির্বাচনী মাঠ গোছাচ্ছে দলটি। রোহিঙ্গা সংকট সামলানো নিয়ে ব্যস্ততার মধ্যেও নির্বাচনী কর্মকাণ্ড থেমে নেই। দলের সংসদ সদস্যদের নিজ এলাকায় নির্বাচনী নানা তত্পরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে। সরকারের মেয়াদের শেষ বছরে এসে ভোটারদের মন জয়ে সংসদ সদস্যরা বিশেষ তত্পর হয়েছেন। চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দ্রুত শেষ করতে তদারকির পাশাপাশি তাঁরা নতুন নানা প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিরোধ, মান-অভিমান ভুলে দলের নেতাকর্মীদের একাট্টা করতে সভা, সমাবেশ, মতবিনিময়, বৈঠকসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দিতে বিভিন্ন এলাকার মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা যাচ্ছেন। তবে বেশির ভাগ সংসদ সদস্য স্থানীয় কর্মসূচিতে আগের চেয়ে বেশি সময় ব্যয় করছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে তাঁদের ব্যস্ততার এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুটি মানবিক।
মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগও রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতির কাজ থেমে নেই। নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠপর্যায়ে আমাদের তত্পরতা অব্যাহত আছে। ’
খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি পুরনো রাজনৈতিক দল। এখানে জনবলের অভাব নেই। রোহিঙ্গা ইস্যু ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড, দুটিই সমানতালে চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। নির্বাচনী মাঠ গোছানোর কাজে আমাদের জোরালো তত্পরতা চলছে। ’
জয়পুরহাট থেকে নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে সরকার খুবই তত্পর রয়েছে। সরকার তার নির্ধারিত লক্ষ্য পূরণে আন্তরিকভাবে কাজ করছে। সরকারের চলতি মেয়াদের লক্ষ্য পূরণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সংশ্লিষ্টরা ব্যাপক তত্পরতা চালাচ্ছেন। ’
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন গত ৩ অক্টোবর নিজ এলাকায় তিনটি আনুষ্ঠানিক সভায় অংশ নেন। সকালে জয়পুরহাটে অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে সমন্বয়সভায় অংশ নেন। জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার তুলসীগঙ্গা ও মাহমুদপুর ইউনিয়নের বিলে বিশেষ অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার অনুরোধ নিয়ে গত ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। ৩ অক্টোবর বিকেলে জয়পুরহাট পৌরসভায় চার লেন রাস্তার জমি অধিগ্রহণ বিষয়ে এক নাগরিক মতবিনিময়সভায় অংশ নেন। সন্ধ্যায় জয়পুরহাট চেম্বার অব কমার্সের সঙ্গে মতবিনিময়সভা করেন। এ ছাড়া প্রায় প্রতি সপ্তাহেই নিজ নির্বাচনী এলাকায় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময়, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নানা সভা-সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন তিনি।
রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ দারা নিয়মিত তাঁর নির্বাচনী এলাকায় তত্পরতা চালাচ্ছেন। সাংগঠনিক কর্মসূচি, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে মতবিনিময়সভা করছেন।
জানতে চাইলে আব্দুল ওদুদ দারা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি নিয়মিত এলাকায় যাচ্ছি। বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে জনসাধারণকে নিয়ে উঠান বৈঠক করছি। নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়সহ বিভিন্ন বৈঠক করছি। এলাকার রাস্তাঘাট উন্নয়নের যে প্রকল্পগুলো চলমান আছে সেগুলো দ্রুত শেষ করার তাগিদ দিচ্ছি। ইতিমধ্যে আমার এলাকায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ৫৫ কিলোমিটার নতুন রাস্তার কাজের প্রকল্প খুব শিগগির শুরু হবে। ’
মুন্সীগঞ্জ-২ নির্বাচনী (টঙ্গিবাড়ী-লৌহজং) এলাকার জনসাধারণের মধ্যে গুঞ্জন চলছে যে আগামী নির্বাচনে এ আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে পারেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম। স্থানীয়রা জানায়, এলাকায় বিভিন্ন ধরনের কাজ করে যাচ্ছেন মাহবুবে আলম। নিয়মিত জনসংযোগ করছেন। বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় কাজে অর্থনৈতিক সহযোগিতাও করছেন। দুর্গাপূজা উপলক্ষে দুই উপজেলার প্রতিটি মণ্ডপে অনুদান দিয়েছেন। পূজা চলাকালে নির্বাচিত এলাকার প্রতিটি মণ্ডপ পরিদর্শনও করেছেন। এলাকার বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে সাধারণ মানুষকে সহায়তা করছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দলীয় কাজেও নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন।
আবার সিলেট-৩ (ফেঞ্চুগঞ্জ-দক্ষিণ সুরমা) আসনের ভোটারদের মধ্যে আলোচনা রয়েছে যে এ আসনে আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়তে পারেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুর রকিব মন্টু। তিনিও নিজ এলাকায় বিভিন্ন তত্পরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আবার এলাকায় উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে জোটের শরিকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনের এমপির বিরোধের ঘটনাও আছে। হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মুনিম চৌধুরী। এ এলাকার সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী। কেয়া চৌধুরীর উদ্যোগ ও চেষ্টায় এলাকায় বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আগামী নির্বাচনে প্রত্যক্ষ ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। নিয়মিত এলাকায় মতবিনিময়, গণসংযোগ করছেন। এটিকে ভালোভাবে দেখছেন না মুনিম চৌধুরী। হবিগঞ্জের বাহুবলে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। কেয়া চৌধুরী এ স্টেডিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দায়িত্ব পান। কিন্তু মুনিম চৌধুরী তা মেনে নিতে রাজি হননি। এ নিয়ে রবিবার হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কক্ষে দুই এমপিকে নিয়ে বৈঠকও হয়।
কেয়া চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি নিয়মিত এলাকায় কাজ করে যাচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় আমি শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলাম। এখানকার এমপি এলাকায় তেমন কোনো কাজই করেননি। তিনি আমার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে বাধা দিতে চেয়েছিলেন। ’
রাজশাহী বিভাগের ৩৯টি আসনের প্রায় সব এমপিই আগামী নির্বাচন কেন্দ্র করে নানাভাবে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। গণসংযোগ থেকে শুরু করে সরকারি বিভিন্ন দিবস পালনসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করা ছাড়াও এলাকার উন্নয়নে জোর কাজ করে যাচ্ছেন। কেউ কেউ নির্বাচনী এলাকায় নৌকাবাইচ, হাডুডু খেলা, ফুটবল খেলার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও যোগ দিচ্ছেন। এসব করছেন সামনের নির্বাচনকে ঘিরে। এমপিদের পদচারণায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝেও দেখা দিয়েছে নির্বাচনী হাওয়া। রাজশাহী অঞ্চলের সর্বত্র এখন নির্বাচনী হাওয়া বিরাজ করছে। সেই হওয়ার অনুকূলে পাল তুলছেন স্থানীয় সংসদ সদস্যরা। অধিকাংশ এমপিই এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে গণসংযোগ করার কারণে নেতাকর্মীদের মাঝেও উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে।
রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক প্রায় প্রতি সপ্তাহেই যাচ্ছেন তাঁর নির্বাচনী এলাকায়। গত ২ অক্টোবর বাগমারার বিলসুতি বিলে বজ্রপাতে নিহত তিন জেলের পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেন তিনি। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পেরও উদ্বোধন করছেন এনামুল। এ ছাড়া বিভিন্ন দিবস পালন থেকে শুরু করে এলাকায় নেতাকর্মীদের ছেলে-মেয়ের বিয়েসহ নানা ধরনের সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানেও যোগ দিচ্ছেন তিনি। মোটরসাইকেল শোডাউন নিয়ে এলাকায় গণসংযোগেও নেমে পড়ছেন।
বন্যায় বিধ্বস্ত উত্তরের বিভিন্ন জেলায় ত্রাণ ও বিভিন্ন সহায়তা নিয়ে ভোটারদের কাছে যেতে শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল ছাড়াও রয়েছেন বীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকারিয়া জাকা, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আবু হুসাইন বিপু, বীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, বীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শিবলী সাদিক। বীরগঞ্জে দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ বাড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
দিনাজপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ইকবালুর রহিম। তিনি ছাড়াও দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মির্জা আশফাক ও আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান মাইকেলও এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-১ আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী আটজন। তাঁদের মধ্যে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা আহমেদ, প্রয়াত সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের সহধর্মিণী ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দা খুরশিদ জাহান স্মৃতি, বড় বোন আনন্দ গ্রুপ অব কম্পানিজ অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা বারী, পৌর মেয়র ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সৈয়দা মাসুদা খাজা, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও দলের উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগ নেতা আলোকিত সুন্দরগঞ্জ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা রেজাউল আলম রেজা। সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের মধ্যে তুলে ধরতে প্রচার চালাচ্ছেন তাঁরা।
গাইবান্ধা-২ আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের মাহাবুব আরা বেগম গিনি। তিনি সংসদে সরকারদলীয় হুইপ। মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী কমোডর (অব.) শফিকুর রহমানকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য হন তিনি। দশম সংসদে তিনি দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। দুইবারের সংসদ সদস্য মাহাবুব আরা বেগম গিনি দল থেকে মনোনয়ন চাইবেন—এ ব্যাপারে দলের নেতাকর্মীরা নিশ্চিত। আওয়ামী লীগ সূত্রে, দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবীণ নেতা সৈয়দ শামস-উল-আলম হীরু, সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, সহসভাপতি ফরহাদ আব্দুল্লাহ হারুন বাবলু, দলের সদর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ঘাগোয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর জামান রিংকু, জেলা কমিটির সদস্য শাহ সারোয়ার কবীর, একই কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মোজাম্মেল হক মণ্ডল, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মানিক ঘোষ। তাঁরা প্রতিযোগিতা করে গণসংযোগ করছেন বলে জানা গেছে।
সিলেট জেলার ছয় আসনের মধ্যে চারটিতে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুজন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দুটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বে। সিলেট-১ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আগামী নির্বাচনে আবারও ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হবেন বলে আভাস দিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী নিয়ম করেই সিলেট সফরে আসেন। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের উদ্বোধন, পরিদর্শন ছাড়াও দলীয় সভা এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সর্বশেষ গত ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর সিলেট সফর করেন অর্থমন্ত্রী। এ সময় আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংকখ্যাত লাক্কাতুরা চা বাগানে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে নগদ অর্থ ও বস্ত্র বিতরণ করেন।
সিলেট-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সিলেট এলেই নিজের নির্বাচনী এলাকা সফরে যান তিনি। সর্বশেষ ৬ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিজ নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগদান করেন শিক্ষামন্ত্রী।
ছয় সিটি করপোরেশনেও উত্তাপ : সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। এ জন্য পথচলার নকশা চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁরা সব দলের অংশগ্রহণে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে কর্মসূচি সামনে রেখে এগোচ্ছেন। তবে সংসদ নির্বাচনের আগেই ছয় সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে এ ছয় সিটি করপোরেশনে তত্পরতার সঙ্গে নতুন উত্তাপ যোগ হয়েছে সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘিরে। এ ছয় মহানগরীর মধ্যে আছে রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, রংপুর ও গাজীপুর। তার মধ্যে দলীয় হাইকমান্ড থেকে মনোনয়নের সবুজসংকেত পেয়ে মাঠে তত্পর আছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, রাজশাহীতে এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। শুভেচ্ছা বিনিময়, পোস্টারে প্রার্থিতার ইচ্ছা প্রকাশ ও নগরীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে রাজশাহী ও সিলেট ছাড়াও খুলনা, বরিশাল, রংপুর ও গাজীপুরে আওয়ামী লীগে শুরু হয়েছে নানা হিসাব-নিকাশ। সব সিটি করপোরেশনের আগে রংপুর সিটি নির্বাচন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বরে রংপুর সিটি করপোরেশনে প্রথম ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তাতে আওয়ামী লীগ নেতা সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু জয়লাভ করেন। এখন শুভেচ্ছার নগরীতে পরিণত হয়েছে রংপুর নগরী। জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বর্তমান মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টুসহ দলটির ১০ নেতা দলীয় মনোনয়নের জন্য মাঠে নেমেছেন। সুত্র: কালেরকন্ঠ