কক্সবাজার সীমান্তের নাফ নদীতে দুইটি দ্বীপ। একটি হলো জালিয়ার দ্বীপ, আর অন্যটির নাম লালদ্বীপ। এই জেলার টেকনাফ মূল সড়কের ঠিক মাঝখানে ১৪ নং ব্রিজের পশ্চিম পাশে আছে পাহাড়। আর ঠিক পূর্বপাশেই রয়েছে সেই নাফ নদী। নদীর পাশেই লালদ্বীপটি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, এই লালদ্বীপ আর জালিয়ার দ্বীপকে ঘিরেই এখন নানা অপকর্ম সংঘঠিত হচ্ছে সেখানে। ১৪ নং ব্রিজ থেকে এসব ঘটনার সূত্রপাতও হচ্ছে। অপহরণ ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশসহ নানা অপকর্মে জড়িত এখানকার স্থানীয় ও রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। মিয়ানমারের বিভিন্ন বাহিনীসহ আরকান আর্মির বিদ্রোহী গোষ্ঠীর আনাগোনা সেখান বেড়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
লালদ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে নাফ নদী পাড়ি দিলে বাংলাদেশের জালিয়ার দ্বীপ পাওয়া যায়। সেখানে লোকজনের আনাগোনা না থাকায় রোহিঙ্গারা জালিয়ার দ্বীপটিতে অবস্থান করেন। পরে সুযোগ বুঝে দালালের হাত ধরে বাংলাদেশ ঢুকে পড়ে বলে জানান স্থানীয়রা।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নজির আহমদ জানান, ১৪ নং ব্রিজের যে স্থানটিতে রয়েছে নাফ নদী জালিয়ার দ্বীপ, সেখান থেকে রাত হলে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অনেক রোহিঙ্গা দালালদের মাধ্যমে নাফ নদী থেকে বাংলাদেশের পাড়ায় উঠে যায়। পরে সেখান থেকে আসতে আসতে বিভিন্ন জায়গায় চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, আমি অনেক রোহিঙ্গা ধরে দিয়েছি, এখন আমাদের এলাকা থেকে চার দিন ধরে রোহিঙ্গা আসা বন্ধ রয়েছে। প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, টেকনাফের নাফ নদীতে পাশাপাশি দুইটি দ্বীপে মানুষের আনাগোনা না থাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসীরা এগুলোতে অবস্থান করে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। অপহরণ আর রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে সীমান্তে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো জরুরি বলে মনে করেন সচেতন মহল।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সদস্যরা কড়া নজরদারিতে রয়েছেন। তারা অনেক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকিয়েছেন। তবে টেকনাফ উপজেলায় রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশের পরে যে সব লোক রোহিঙ্গাদের বাসা ভাড়া দিয়েছে বা দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে ।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ৭ জুলাই লালদ্বীপে কাঁকড়া শিকার করতে গিয়ে মাইন বিস্ফোরণে একজন নিহত এবং দুইজন আহত হয়েছেন।
পাঠকের মতামত