কক্সবাজারসহ দেশের উপকূলীয় এলাকায় মাঠ পর্যায়ে উৎপাদিত লবণের দাম নেই, দেশে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কঠোর ভাবে লবণের দাম নিয়ন্ত্রণ করে নানা প্রক্রিয়ায় বিদেশ থেকে অবৈধ ভাবে লবণ আমদানি করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় চরম সংকটে পড়েছে দেশীয় লবণ শিল্প। এমন পটভূমিতে দ্রুত লবণের মূল্য বৃদ্ধি করে এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদ দিয়েছেন – মহেশখালীতে লবণ চাষি ও ব্যবসায়ী সংগ্রাম পরিষদ।
দেশের সবচেয়ে বেশী লবণ উৎপাদন এলাকা মহেশখালীতে এ সংগঠনের এক সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে নতুন কমিটির পরিচিতি ও মতবিনিময় সভায় সংগঠনের সভাপতি হোবাইব সজীব অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে দ্রুত লবণের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করে প্রান্তিক লবণ চাষিদের বাঁচানোর দাবি জানান। এর আগে সর্বস্তরের লবণ চাষি, লবণ ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও লবণ ভূমির মালিকদের সমন্বয়ে গঠিত এ সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। ন্যায্যমূল্য না পেয়ে দেশে উৎপাদিত লবণের এ ‘সংকটময় পরিস্থিতি’র চিত্র সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করার বিষয়ে তারা ধারাবাহিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন বলে উপরোক্ত কথা বলেন তিনি। প্রয়োজনে এ নিয়ে আন্দোলনেরও ইঙিত দেন।
শুক্রবার বিকেলে মহেশখালী অনলাইন প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে মহেশখালী অনলাইন প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও মহেশখালীতে লবণ চাষি ও ব্যবসায়ী সংগ্রাম পরিষদ
এর সভাপতি হোবাইব সজীবের এর সভাপতিত্বে এ নিয়ে নতুন কমিটির পরিচিতি ও মতবিনিময়
এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সংগঠনটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফোরকান।
এসময় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর মোহাম্মদ জিয়া, সহ-সভাপতি সালাহ উদ্দিন নুরী পিয়ারু, সহসভাপতি আইয়ুব আলী, সহ-সম্পাদক সাহাব উদ্দিন, সহ- সস্পাদক রেজাউল করিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, তৌহিদুল ইসলাম মিশুক।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসাইন দোয়েল, লোকমান হাকিম মনু, (সহ-সম্পাদক) রাব্বাহান উদ্দীন রব্বানী, সদস্য রেসালত কদির,সনেট মাতাব্বার, সাইফুল, হুমায়ুন মোস্তফা, খোরশেদ আলম, মোহাম্মদ আলী, জাফর আলম, সাইফুল ইসলাম প্রমূখ।
নেতৃবৃন্দরা বলেন -চলতি মৌসুমে ১ একর জমিতে লবণ চাষ করতে খরচ পড়ে প্রায় ২লক্ষ টাকা। মাঠ পর্যায়ে উৎপাদিত লবণের মন প্রতি (৪০ কেজি) মূল্য ২০০ থেকে ২২০টাকা। অথচ প্রতি মন লবণ উৎপাদন করতে খরচ পড়ে এর চেয়ে বহু বেশী। এ অবস্থায় খুবই করুণ দিন কাটাচ্ছে এলাকার লবণ চাষিরা। লবণের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে লবণ চাষের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে চাষিরা। এই অবস্থার চলতে থাকলে দেশীয় এ শিল্পী ধ্বংস হয়ে যাবে। অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করবে এ পেশার লোকজন।
লবণ চাষিদের পক্ষে দাবির কথা জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফোরকান বলেন, লবণ আমদানি সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ করতে হবে, দালাল সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে, লবণ চোরাচালান মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কঠোর ভাবে দমন, মাঠ পর্যায়ে লবণের মূল্য কেজি প্রতি ১১ থেকে ১২ টাকায় করা, কক্সবাজারে লবণের স্থায়ী বোর্ড গঠন করা, লবণ ঋণের সহায়তা ও ইতোমধ্যে দেওয়া ঋণ মওকুপ, প্রযুক্তি নির্ভর লবণ উৎপাদনের প্রশিক্ষণ প্রদান, উৎপাদিত লবণ সংরক্ষণ, সরবরাহ, বাজারজাত করণের কার্যকর কৌশল নির্ধারণ করা।
পাঠকের মতামত