রিদুয়ানুল হক সোহাগ, উখিয়া::
শীতের স্নিগ্ধতায় ভোরে উদিত লাল সূর্য, অতিথি পাখির বিচরণ, লাল শাপলার মেলা যেন প্রকৃতির ঢেলে দেয়া এক সৌন্দর্যের ক্যানভাস।
প্রকৃতির এই নিখাদ সৌন্দর্যটি উখিয়ার মাছকারিয়া বিলের। এখানে সবুজ পাতায় ঢাকা জলে, ফুটে আছে শাপলা ফুল। চকচকে নিষ্পাপ পানির উপর ভাসতে থাকা লাল শাপলার ঝিলিকে পুরো এলাকা এখন অনিন্দ্য অপরূপ।
মাছকরিয়া বিলে সূর্যোদয়ের আগে থেকে ফুটতে শুরু করা শাপলা থাকে বেলা ১১ টা পর্যন্ত। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ঝিমিয়ে পড়ে ফুটন্ত শাপলা।
এখানকার শাপলা ফুলের খবর এখন সবাই জানেন। সবাই প্রকৃতির টানে ছুটে আসেন শাপলা দেখতে। নৌকায় চড়ে জলে ভাসা শাপলার সাথে নিজেদের মেখে ছবি তুলেন। বলেন, এই সৌন্দর্যকে সংরক্ষণ করা দরকার। কিন্তু অনেক ভ্রমণ পিয়াসী শাপলা ফুলগুলো ছিঁড়ে ফেলে সাথে করে নিয়ে যেতে চান। কেউ বারণ শুনতে চান না। মানা করলে রাগ করেন।
শাপলা ফুলের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে আসা রিতু বড়ুয়া বলেন, উখিয়ার মাছকারিয়া বিল অসাধারণ। না দেখলে বিশ্বাস হয় না। কাছের জলরাশিতে ফুলের সমাহার। সবুজ পাতার ভাঁজে ভাঁজে লাল পাঁপড়ির স্নিগ্ধতা। ঐশ্বরিক এই সুনীপূণ চিত্রকর্ম চোখ জুড়ানো, মন ভুলানো।
স্থানীয়রা বললেন, সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মাছকারিয়া বিল হবে কক্সবাজারের পর্যটনের নতুন সংযোজন। দর্শনার্থীর ভীড়ে যেনো এই প্রাকৃতিক বিলটির পরিবেশগত ক্ষতি না হয়, তাই রক্ষনাবেক্ষনের দাবী জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয় আবুল হাসান জানান, মাছকারিয়া বিলে শাপলা ফুল গুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা হলে বড় পযর্টন কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে ঐতিহ্যবাহী মাছকারিয়া বিলটি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যের কারণে অবহেলিত মাছকারিয়া বিলের সৌন্দর্য ঘিরে ৫০ টি পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। যারা নৌকা ভাড়া দেয়।
স্থানীয় তরুণ ইয়াছিন জানান, পানিতে ভাসমান শাপলাপাতার মধ্যদিয়ে ছোট ডিঙ্গি নৌকা চলছে। স্থানীয় মানুষের মৌসুমী কর্মসংস্থান চাঙা হয়ে উঠেছে। চারদিকের শাপলাফুল যেন দর্শনার্থীকে স্বাগত জানাচ্ছে। তবে খারাপ লাগে, যখন দর্শনার্থীরা বেশি বেশি করে শাপলা ফুল তুলে নষ্ট করে। তাই আমাদের অনুরোধ ফুল নষ্ট না করার। একইসঙ্গে বেড়েছে উখিয়া উপজেলার সুনাম।
জানা যায়, এক সময় এই বিলে পাওয়া যেতো প্রচুর মাছ এবং সে মাছ মাছরাঙা পাখি খেতো যার কারনে এটির নাম মাছকারিয়ার খাল বা বিল নামে পরিচিত। গেল বছর থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উখিয়ার মাছকরিয়া বিল শাপলা বিল হিসাবে পরিচিত পাই।