লেবুর গুণাগুণ সম্পর্কে কমবেশি সকলের জানা থাকলেও লেবুর খোসার গুণাগুণ সম্পর্কে খুব কম মানুষই জানেন। লেবুর মতোই চমৎকার সকল স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে লেবুর খোসাতেও। অনেকেই লেবু খেতে পারেন না গ্যাস্ট্রিক অথবা অন্য সমস্যার জন্য। তারা নির্দ্বিধায় খেতে পারবেন লেবুর খোসা। স্বাদ তিতকুটে হলেও, লেবুর খোসার দারুণ সকল স্বাস্থ্য উপকারিতা জানার পরে সেই স্বাদটাও ভালো লাগতে বাধ্য!
হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো করতে সাহায্য করে
লেবুর খোসাতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-সি। যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও, লেবুর খোসা হাড়ের সমস্যা যেমন: অস্টিওপোরোসিস, রিউমাটিক আর্থ্রাইটিস এবং অন্যান্য প্রদাহ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে থাকে।
শরীরের ক্ষতিকর পদার্থ বের করতে সাহায্য করে
শরীরে থাকা বিভিন্ন ধরণের ক্ষতিকর ও বিষাক্ত পদার্থ অসুস্থতা তৈরির জন্য ও শরীরকে দুর্বল করে তোলার জন্য দায়ী। এই ক্ষতিকর ও বিষাক্ত পদার্থ শরীরে প্রবেশ করতে পারে কোমল পানীয় অথবা ফাস্টফুড খাওয়ার ফলে। লেবুর খোসাতে থাকে সাইট্রাস বায়োফ্ল্যাভনয়েড উপাদান। যা শরীর থেকে ক্ষতিকর ও বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে।
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে
খুব কম মানুষই জানেন যে, লেবুর খোসা ক্যান্সার প্রতিরোধে এবং ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। লেবুর খোসাতে রয়েছে Salvestrol Q40 এবং Limonene. যা শরীরের ক্যান্সার কোষের বিপক্ষে কাজ করে থাকে।
কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে
শরীরের জন্য ক্ষতিকর কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমাতে লেবুর খোসা খুব ভালো কাজ করে থাকে। যার ফলে শরীর ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকে। লেবুর খোসাতে থাকে পলিফেনল ফ্ল্যাভনয়েড যা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
হৃদযন্ত্রের সমস্যা দূর করে
লেবুর খোসাতে থাকা পটাসিয়াম শরীরে সঠিক ও স্বাভাবিক রক্তচাপ বজায় রাখতে কাজ করে। যার ফলে, নিয়মিত লেবুর খোসা খেলে হৃদযন্ত্রের সমস্যা, হার্ট অ্যাটাক এবং ডায়বেটিস তৈরি হবার সম্ভবনা কমে যায়।
মুখের ভেতরের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে
লেবুর খোসা মুখের ভেতরে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং জীবাণুমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন-সি এর অভাব দেখা দিলে দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। যেমন: দাঁতের মাড়ি থেক রক্তপাত হওয়া সমস্যা দেখা দেওয়া, ফুলে যাওয়া ইত্যাদি। লেবুর খোসা সম্পূর্ণ সাইট্রাস ধরণের একটি উপাদান। যা ভিটামিন-সি এর অভাব পূরণ করতে কাজ করে। যার ফলে মুখের ভেতরের ও দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
যারা ওজন কমাতে চাচ্ছেন তারা লেবুর পাশাপাশি লেবুর খোসাও খেতে পারেন। কারণে লেবুর খোসা ওজন কমানর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে। লেবুর খোসাতে আছে পেকটিন। যা ওজন দ্রুত কমাতে সাহায্য করে থাকে।
ত্বকের সমস্যা দূর করতে কাজ করে
মুখের ত্বকের বিভিন্ন ধরণের সমস্যা দূর করতে ও প্রতিরোধ করতে লেবুর খোসা খুব ভালো একটি উপাদান। মুখের বিভিন্ন ধরণের সমস্যা যেমন: বলীরেখা, ব্রণ, কালো দাগ প্রভৃতি দূর করতে লেবুর খোসা দারুণ উপকারী। লেবুর খোসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস। যা ত্বকের স্বাস্থ্যরক্ষা করতে সাহায্য করে থাকে।
এছাড়াও লেবুর খোসার রয়েছে নানান ধরণের স্বাস্থ্য উপকারিতা। লিভার পরিষ্কার করতে, কানের ইনফেকশন ভালো করতে, রক্ত-চলাচল স্বাভাবিক রাখতে, পেশীর সংকোচন রোধ করতে, স্ট্রোকের সম্ভবনা কমাতে লেবুর খোসা চমৎকার একটি প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে কাজ করে থাকে।
সূত্র: Stylecraze