সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে আফগানিস্তানকে ১৪১ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ ও শততম জয় নিশ্চিত করলো বাংলাদেশ। আর শততম জয় এলো বাংলাদেশের সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার হাত ধরে।
শনিবার টাইগারদের দেয়া ২৮০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৩৮ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ এ জিতে নিল স্বাগতিকরা।
হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি মাশরাফি।
নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৭৯ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
দলের পক্ষে তামিম ইকবাল সর্বোচ্চ ১১৮ রান করেন। এছাড়া সাব্বির রহমান ৬৫ ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৩২ রান করেন।
এদিন ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বাজেভাবে আউট হন ওপেনার সৌম্য সরকার। ইনিংসের ৬ষ্ঠ ওভারে ব্যক্তিগত ১১ রান করে সাজঘরে ফিরে যান তিনি।
সৌম্য ফিরে যাওয়ায় সাব্বিরকে প্রমোশন দিয়ে ওয়ানডাউনে আনা হয়। ওয়ানডাউনে এসেই তামিমের সঙ্গে নিজেকে মেলে ধরেন সাব্বির। তাদের জুটিতে আসে ১৪০ রান।
সাব্বির তুলে নেন নিজের তৃতীয় অর্ধশতক। ৭৮ বলে ৬৫ রান করে আউট হন সাব্বির। ৩টি ছয় ও ৬টি চারে সাজানো ছিল তার ইনিংসটি। সাব্বির ফিরলেও প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরির কাছ থেকে ফিরে আসা তামিম এবার আর ভুল করলেন না। ব্যক্তিগত ৭ম সেঞ্চুরি করে ইংল্যান্ডকে বার্তা দিয়ে রাখলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১১৬ বলে ১১৮ রানে আউট হন তামিম। ১১টি চার ও ২টি ছয়ে সাজানো ছিল তার ইনিংসটি।
তামিম ও সাব্বিরের ভালো জুটির কারণে একসময় মনে হয়েছিল ৩শ বা তারও বেশি রান হবে স্বাগতিকদের। কিন্তু সাব্বির ও তামিমের বিদায়ের পর যেন ব্যাটিংয়ে ছন্দপতন হয় বাংলাদেশের।
তামিম আউট হলে উইকেটে টিকতে পারেননি সাকিব আল হাসান। তিনি ৩৫ বলে মাত্র ১৭ রান করে আউট হন। এরপর দ্রুতই সাজঘরে ফেরেন মুশফিকুর রহিম ও মোসাদ্দেক সৈকত। মুশফিক ১২ ও মোসাদ্দেক ৪ রান করেন। প্রথম বলে ৪ মেরে ভালো কিছু করারই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মোসাদ্দেক। কিন্তু রশিদ খানের বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এ অলরাউন্ডার।
৮ বছর পর জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নামা মোশাররফ হোসেন রুবেলও হতাশ করেন। ১৪ বলে করেন মাত্র ৪ রান।
শেষ দিকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২৭৯ রান তোলে টাইগাররা। রিয়াদ মাত্র ২২ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন।
আফগানিস্তানের হয়ে রশিদ খান, মোহাম্মদ নবী ও মিরওয়াইজ আশরাফ। ২টি করে এবং রহমত শাহ ও দৌলত জাদরান ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
২৮০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৫ রানেই ওপেনার মোহাম্মদ শেহজাদকে বোল্ড করেন টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। নিজের দ্বিতীয় ওভারেই সাফল্য পান মাশরাফি।
শুরুর বিপর্যয় সামাল দেন নওরজ মঙ্গল ও রহমত শাহ। তাদের জুটিতে আসে ৪৭ রান। এরপরই ৮ বছর পর জাতীয় দলে ফেরা স্পিনার মোশাররফ হোসেন রুবেলের জোড়া আঘাত।
নিজের তৃতীয় ওভারে ক্রমেই বিপদজ্জনক হয়ে ওঠা ওপেনার নওরজ মঙ্গলকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলার পর ওই ওভারেই হাসমত উল্লাহকে আউট করেন রুবেল।
নওরজ ৩৩ রান করেন। তবে হাসমত কোনো রান করতে পারেননি। নওরজ ও হাসমতের পর দ্রুতই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন অধিনায়ক আসগার স্টানিকজয়।
তাকে রান আউট করেন সাকিব আল হাসান। মাত্র ১ রান করেন আসগার। এরপর উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টা করেন সামিউল্লাহ। তাকে ব্যক্তিগত ১৩ রানে মুশফিকের ক্যাচে পরিণত করেন তাসকিন আহমেদ।
রহমত শাহ নিজেকে উইকেটে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনিও ৩৬ রানে তাসকিনের বলে নাসিরের (বদলী খেলোয়াড়) হাতে তালুবন্দী হন।
নিজের দ্বিতীয় স্পেলে এসে আবারও আফগান শিবিরে আঘাত হানেন স্পিনার রুবেল। নবীকে মাত্র ৩ রানে ফিরতি ক্যাচে প্যাভিলিয়নে পাঠান এ বামহাতি স্পিনার।
শেষদিকে জাদরান ও রশিদ খান কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তবে তা পরাজয়ের ব্যবাধানই শুধু কমায়। জাদরানকে ফেরান মোসাদ্দেক। রশিদকে রান আউট করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
শেষ উইকেট দৌলত জাদরানকে ফেরান শফিউল ইসলাম।