পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশে সৌদি আরবে আসা হাজিরা বৃহস্পতিবার (১১ জিলহজ) ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে উদ্দেশ্য করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করেছেন। তাঁরা আগামীকাল শুক্রবারও (১২ জিলহজ) ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে উদ্দেশ্য করে ২১টি পাথর ছুঁড়ে মারবেন। প্রতিটি শয়তানকে উদ্দেশ্য করে সাতটি করে পাথর নিক্ষেপের বিধান রয়েছে।
হাজিরা আজ সৌদি আরবের মিনার জামারায় (শয়তানের উদ্দেশে পাথর ছোঁড়ার স্থান) জোহরের নামাজ আদায় করার পর থেকে পর্যায়ক্রমে ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানের উদ্দেশে সাতটি করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করেন। এ সময় হাজিদের হৃদয়ে ধর্মীয় আবেগ ও অনুভূতি সৃষ্টি হয়। শয়তানকে পাথর মারার সময় বেশিরভাগ হাজিই আবেগ ধরে রাখতে পারেন নি। হাজিরা শয়তানের কবল থেকে রক্ষা পেতে মহান আল্লাহর দরবারে অঝোরে কেঁদেছেন।
এদিন হাজিরা মহান আল্লাহর অশেষ রহমত ও নৈকট্য লাভের আশায় প্রায় সার্বক্ষনিক জিকিরে মশগুল থাকেন। নামাজ আদায়ের পাশাপাশি অন্যান্য ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এ ছাড়াও নিজেদের আত্মশুদ্ধি ও পাপমুক্তির আকুল বাসনার পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় মহান আল্লাহর কাছে অঝোরে কেঁদে বুক ভাসান। সবার মুখে উচ্চারিত হয় মহান আল্লাহর বাণী। সে এক অভাবনীয় দৃশ্য।
ওই সময়ে তাঁদের মুখে উচ্চারিত হয়েছে, ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা, ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক’ ধ্বনি। অর্থাৎ ‘আমি উপস্থিত হয়েছি হে আল্লাহ। আমি উপস্থিত হয়েছি তোমার সমীপে। তোমার কোনো শরিক নেই। পুনরায় আমি উপস্থিত হয়েছি। নিশ্চয়ই সব প্রশংসা ও সকল নিয়ামত শুধু তোমারই জন্য। সব সাম্রাজ্যও তোমার এবং তোমার কোনো শরিক নেই।’
শয়তানকে উদ্দেশ্য করে পাথর ছুঁড়ে মারার আগে হজের তৃতীয় অর্থাৎ শেষ রুকন আদায়ের জন্য মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে সুবহে সাদিকের পর থেকে কাবা শরীফ তাওয়াফ করেন হাজিরা। এরপর তাঁরা কাবা শরীফের সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় সাতবার ‘সাঈ’ (দৌঁড়ানো) করেন। সেখান থেকে তাঁরা আবার ফিরে যান মিনায়, নিজেদের তাঁবুতে।
আগামীকাল ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে ২১টি পাথর নিক্ষেপের পর সন্ধ্যার আগে হাজীরা মক্কার উদ্দেশে মিনা ত্যাগ করবেন। মক্কায় তাঁরা কাবা শরীফকে ফরজ তাওয়াফের মধ্য দিয়ে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন।