কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩২ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের স্কুলে চাকরিরত হোস্ট টিচারদের বেতন বৃদ্ধিসহ চার দফা দাবিতে কক্সবাজারস্থ শরনার্থী কমিশনের কার্যালয় ঘেরাও করে রাখা হয়েছে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আরআরআরসি কার্যালয়ের সামনে বিভিন্ন স্লোগান এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা আরআরআরসি অফিস ঘেরাও করে রেখেছে। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত রয়েছে।
জানা যায়, উখিয়া টেকনাফে আন্তর্জাতিক এনজিও সংস্থা ইউনিসেফ, ইউএনএইচসিআর ও সেভ দ্যা চিলড্রেন এর অর্থায়নে পরিচালনাধীন ৩২টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৯টি অর্গানাইজেশন শিক্ষা প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ওই ৩২টি ক্যাম্পে প্রায় ৩ হাজারের বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। তারা বিগত ২০১৭ সাল থেকে প্রকল্পে অর্গানাইজেশন কর্তৃক অর্পিত দায়িত্বসহ শিক্ষকতা করে আসছে। এসময়ের মধ্যে দেশে দ্রব্যমূল্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদীর মূল্য বৃদ্ধি পেলেও বাড়েনি শিক্ষকদের বেতন। স্বল্প বেতনে নুন আনতে পান্তা পুরানো অবস্থা। শিক্ষকবৃন্দ বেতন সর্বনিম্ন ২২ হাজার ৫ শত টাকা করার দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে। কিন্তু এতে টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের। ফলে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে শিক্ষকবৃন্দ।
উল্লেখ্য যে, হোস্ট টিচাররা বেতন বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসলেও উল্টো রোহিঙ্গা শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি করে। এ ব্যাপারে শিক্ষকবৃন্দ সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট এর সাথে একাধিকবার আলোচনা করেও সুফল পায়নি ।
হোস্ট কমিউনিটি শিক্ষকদের স্বল্প বেতনে সঙ্গতীপূর্ণ না হওয়ায় পরিবার এবং সন্তান-সন্ততি নিয়ে জীবনযাপনে হিমশিম খেতে হচ্ছে হোস্ট শিক্ষকদের। তাই দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ৩২ ক্যাম্পের শিক্ষকরা আজ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিবাদ সভা ও আরআরআরসি অফিস ঘেরাও করে রাখে। এসময় তারা শরনার্থী কমিশন মিজানুর রহমানের পদত্যাগ দাবি করেন।
দাবিগুলো হচ্ছে, শিক্ষকদের সর্বনিম্ন বেতন ২২ হাজার ৫’শত টাকা, মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং ভাতা প্রদান, ক্লাস্টার সিস্টেম বাতিল এবং বিনা কারণে শিক্ষক-শিক্ষিকা ছাটাই না করা ও প্রতি বৎসর দুই ঈদে উৎসব ভাতা প্রদান করা।
মানববন্ধন এবং ঘেরাও কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, জাদিমুড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প-২৭ এর শিক্ষক মোহাম্মদ ইউনুছ, ক্যাম্প- ২৪ এর হামিদ হোছাইন হেভী, শালবাগান ক্যাম্প ২৬ এর রেজাউল করিম, ক্যাম্প ২৪ এর মাঈন উদ্দীন, আব্দুল আজিজ প্রতিক (ক্যাম্প- ২৬), অণু মারমা- (ক্যাম্প-২৭), মোরশিদা- (ক্যাম্প-২৪), বেলাল উদ্দীন- (ক্যাম্প- ২৬), সাদিয়া আক্তার- (ক্যাম্প-২৫), ইফতেখার উদ্দীন- (ক্যাম্প-২৫), সাজেদা আক্তার- (ক্যাম্প- ২৫), নুরুল আবছার – (ক্যাম্প ২৭), সঞ্চাচলানায় ছিলেন, আফসানা ফাতেমা হোসাইন- (ক্যাম্প- ২৭)।
রেজাউল করিম জানান, আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে আমরা এখানে দিনের পর দিন অবস্থান করবো।
এব্যাপারে জানার জন্য ফোন করার পরও আরআরআরসি অফিসের কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য যে, বর্তমানে শিক্ষকদের বেতন ১৫ হাজার ৫’শত টাকা করে দেয়া হচ্ছে।