শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন ইরানের নার্গেস মোহাম্মদি। শুক্রবার বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করে নরওয়ের নোবেল কমিটি।
ইরানে নারীদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে এবং সবার জন্য মানবাধিকারের পক্ষে সোচ্চার থাকার জন্য তাকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।
এবার এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৩৫১ জন। এখন পর্যন্ত প্রতি বছর মনোনীত সংখ্যার ক্ষেত্রে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ সংখ্যা ছিল ৩৭১।
চলতি বছর মনোনীতদের মধ্যে ২৫৯ ব্যক্তি ও ৯২টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। টানা অষ্টম বছর এ পুরস্কারের জন্য মনোনীতের সংখ্যা ছিল ৩ শতাধিক।
নার্গেস মোহাম্মাদি একজন মানবাধিকারকর্মী। বাকস্বাধীনতা ও স্বাধীনতার অধিকারের জন্য লড়াই করতে গিয়ে ব্যাপক নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তিনি। ইরান কর্তৃপক্ষ তাকে অন্তত ১৩ বার গ্রেপ্তার করেছে। দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিয়েছে পাঁচ বার। বর্তমানে মোট ৩১ বছরের দণ্ড নিয়ে কারাগারে আছেন তিনি।
চলতি বছর ২ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ধাপে ধাপে ঘোষণা করা হচ্ছে নোবেল বিজয়ীদের নাম।
গত সোমবার (২ অক্টোবর) চিকিৎসাবিজ্ঞানে, মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) পদার্থে, ৪ অক্টোবর রসায়নে ও বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।
শুক্রবার শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হলো। দু’দিন বিরতি দিয়ে ৯ অক্টোবর ঘোষণা করা হবে অর্থনীতিতে নোবেলজয়ীর নাম।
২০০৩ সালে শান্তিতে নোবেলজয়ী আরেক ইরানি নারী শিরিন এবাদির নেতৃত্বাধীন এনজিও ডিফেন্ডার্স অব হিউম্যান রাইটস সেন্টার-এর উপ-প্রধান তিনি।
১৯তম নারী হিসেবে মোহাম্মদী ১২২ বছর পুরনো নোবেল শান্তি পুরস্কারটি পেলেন।
২০০৩ সালে শান্তিতে নোবেলজয়ী আরেক ইরানি নারী শিরিন এবাদির নেতৃত্বাধীন এনজিও ডিফেন্ডার্স অব হিউম্যান রাইটস সেন্টার-এর উপ-প্রধান তিনি।
১৯তম নারী হিসেবে মোহাম্মদী ১২২ বছর পুরনো নোবেল শান্তি পুরস্কারটি পেলেন।
২০২২ সালে শান্তিতে নোবেল পেয়েছিলেন বেলারুশের মানবাধিকার আইনজীবী আলেস বিলিয়াতস্কি, রাশিয়ান মানবাধিকার সংস্থা মেমোরিয়াল এবং ইউক্রেনীয় মানবাধিকার সংস্থা সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিজ।
২০২১ সালে শান্তিতে নোবেল পান ফিলিপাইনি বংশোদ্ভূত মার্কিন সাংবাদিক মারিয়া রেসা এবং রাশিয়ার সাংবাদিক দিমিত্রি মোরাতোভ। মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় নিজেদের ভূমিকার কারণে মারিয়া রেসা এবং দিমিত্রি মোরাতোভকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
২০২০ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পায় জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গড়ার লড়াইয়ে অনন্য ভূমিকার জন্য সংস্থাটিকে এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। আর ২০১৯ সালে এ পুরস্কার জেতেন ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ। ইথিওপিয়া ও ইরিত্রিয়ার সংঘাত নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায় বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাবান পুরস্কার ভূষিত হন তিনি।
এর আগে নেলসন ম্যান্ডেলা, মাদার তেরেসা ও বারাক ওবামার মতো ব্যক্তিত্বরা নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ডিনামাইট আবিষ্কারক সুইডেনের বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের ১৮৯৫ সালে করে যাওয়া একটি উইল অনুযায়ী নোবেল পুরস্কার প্রচলন করা হয়। প্রথম পুরস্কার দেওয়া শুরু হয় ১৯০১ সালে।
সেসময় পৃথিবীর বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে সফল, অনন্যসাধারণ গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানবকল্যাণমূলক কার্যক্রমের জন্য পাঁচটি বিষয়ে পুরস্কার প্রদান করা হয়। বিষয়গুলো হলো পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাশাস্ত্র, সাহিত্য ও শান্তি।
রসায়নে নোবেল পেলেন তিন গবেষকরসায়নে নোবেল পেলেন তিন গবেষক
অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয় ১৯৬৯ সাল থেকে।
এ বছর অর্থমূল্য বেড়েছে নোবেল পুরস্কারের। গতবারের চেয়ে এ বছরের বিজয়ীরা ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা বেশি পাবেন।
নোবেল ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, ২০২৩ সালে নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য বাড়িয়ে ১ কোটি ১০ লাখ ক্রোনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি ৯০ লাখ টাকা।