উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
শাহ পরীর দ্বীপে বাঁধ সংস্কারে ১০৬ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। এটি বাস্তবায়িত হলে জোয়ারের পানি বা ঢেউয়ের আঘাতে সৃষ্ট ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে এলাকার খাদ্য নিরাপত্তা ও সামাজিক প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হচ্ছে।
অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০১৮ সালে জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এ বিষয়ে কৃষি পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য এ এন সামসুদ্দিন আজাদ চৌধুরী পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় জোয়ারের পানি ঢেউয়ের আঘাত হতে সৃষ্ট ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে এলাকার খাদ্য নিরাপত্তা ও সামাজিক প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করাসহ প্রকল্প এলাকার উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে তাই প্রকল্পটি অনুমোদনযোগ্য। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় এ প্রকল্পের অনুকূলে এমটিবিএফ বরাদ্দ নিশ্চিতের প্রত্যয়নপত্র উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) সংযুক্ত করা হয়েছে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগর হতে লবণাক্ত পানি রোধকল্পে এবং নিস্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে ১৯৬৮ থেকে ৭০ সালে পোল্ডার ৬৮ নির্মাণ করা হয়। পোল্ডারটি নির্মাণের পর হতে বড় ধরনের কোনো পুনর্বাসন কাজ হাতে নেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলশ্রুতিতে দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে বাঁধটি ক্ষীণ ও দূর্বল হয়ে পড়েছে। এছাড়া ১৯৭০, ১৯৯১ সালে সাইক্লোন ও ২০০৯ সালের আইলা এর মতো প্রাকৃতিক দূর্যোগে পোল্ডারের অনেক স্থান ভেঙ্গে যাওয়াসহ আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০১২ সালের জুন মাসে সৃষ্ট নিম্নচাপের ফলে উদ্ভুত ভারিবর্ষণ এবং সাগরের তীব্র ঢেউয়ের আঘাতে টেকনাফস্থ শাহপরীর দ্বীপের এ পোল্ডারে সী-ডাইক অংশে প্রায় দুই কিলোমিটার ভেঙ্গে যায়।
ভেঙ্গে যাওয়া অংশ দিয়ে ক্রমাগত সাগরের লোনা পানি পোল্ডারের অভ্যন্তরে প্রবেশ করার ফলে প্রকল্প এলাকায় ফসল, রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়ি, চিংড়ি চাষসহ লবণ চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানির প্রবল চাপে টেকনাফ ও শাহপরীর দ্বীপের একমাত্র সংযোগ সড়কটির অংশবিশেষ ভেঙ্গে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণের জোর দাবির মুখে এই এলাকার সী-ডাইক অংশের বাঁধের ডিজাইন এবং বাস্তবায়ন কাজের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়। এই কারিগরি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এই প্রকল্পটি গ্রহনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম, বাঁধ পুন:নির্মাণ ২ দশমিক ৬৪৫ কিলোমিটার এবং বাঁধের ঢাল সংরক্ষণ ২ দশমিক ৬৪৫ কিলোমিটার।
পাঠকের মতামত