মুহাম্মদ হোসাইন:
কক্সবাজারের কৃতিসন্তান উপমহাদেশের শক্তিমান সংগীত তারকা সমরজিৎ রায় প্রথমবারের মত চট্টগ্রামের একটি আঞ্চলিক গানে কন্ঠ দিয়েছেন। “এতোদিনে বুঝিলাম আঁই তোঁয়ার হথার বিশ্বাস নাই…” গানটি লিখেছেন কক্সবাজারের ভাবসন্তান শেকড় সন্ধানি কবি সিরাজুল হক সিরাজ। ইতোমধ্যে গানটি ঢাকার বিখ্যাত সংগীত প্রযোজনা সংস্থা dhooli “ড্যুলি” র ইউটিভ চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে। গানটির সঙ্গীতায়োজন করেছেন জে কে মজলিশ, বাঁশি বাজিয়েছেন জালাল এবং ভিডিওটি নির্মাণ করেছেন ইয়ামিন ইলান সমরজিৎ রায়ের পরিচিতি: ভারত এবং বাংলাদেশের সঙ্গীত জগতের জনপ্রিয় ও গুণী শিল্পী সমরজিৎ রায়।
করিয়ার সর্বজন শ্রদ্ধেয় গুণী শিক্ষক শ্রী নেপাল চন্দ্র রায় এবং রত্না রায়ের তৃতীয় সুপুত্র তিনি। ২০০০ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে দিল্লীর গান্ধর্ব মহাবিদ্যালয় থেকে সঙ্গীতে মাস্টার্স ডিগ্রী নেন এবং সঙ্গীত বিশারদের চূড়ান্ত পরীক্ষায় সারা ভারতবর্ষে প্রথম স্থান অধিকার করে অর্জন করেন বেশ কিছু সাম্মানিক এওয়ার্ড যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পন্ডিত ডি.বি পলুস্কর এওয়ার্ড, হরি ওম ট্রাস্ট এওয়ার্ড, সঙ্গীতা বসন্ত বেন্দ্রে এওয়ার্ড, বাসুদেব চিন্তামন ওয়াগমারে এওয়ার্ড, নলিনী প্রতাপ কানবিন্দে এওয়ার্ড সহ মোট ৭টি এওয়ার্ড। গানের পাশাপাশি সমরজিৎ ভারতের চন্ডীগড়ের প্রাচীন কলাকেন্দ্র থেকে তবলায়ও সঙ্গীত বিশারদ ডিগ্রী অর্জন করেন। শিল্পী সমরজিৎ যে বিখ্যাত গুনীদের সঙ্গে গাওয়ার সুযোগ এবং একান্ত সান্নিধ্য পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মান্না দে, মৃণাল চক্রবর্তী, অনুপ জলোটা,পন্ডিত যশরাজ,পন্ডিত শিবকুমার শর্মা,পন্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাশিয়া,ওস্তাদ জাকির হোসেন,জগজিৎ সিং,কবিতা কৃষ্ণমূর্তি,অনুরাধা পাডোয়াল,হরিহরণ, কুমার শানু, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, নির্মলা মিশ্র, অজয় দাস, বটকৃষ্ণ দে, শ্রাবন্তী মজুমদার, কুমার বিশ্বজিৎ, সুবীর নন্দী, সৈয়দ আব্দুল হাদী প্রমুখ। ভারতের সরকারিভাবে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দীর্ঘ সময় ধরে নিয়মিতভাবে অংশ নেন সমরজিৎ, যেসব অনুষ্ঠানে ভারতের বিভিন্ন সময়ের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, সোনিয়া গান্ধীসহ সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগণ অংশ নেন।
তাছাড়া ভারতের ভূতপূর্ব রাষ্ট্রপতি প্রয়াত আব্দুল কালাম আজাদের আমন্ত্রণে ৩ বার রাষ্ট্রপতি ভবনে মধ্যাহ্নভোজন এবং সঙ্গীত আসরে অংশ নেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে সমরজিতের। ভারতের অন্যান্য চ্যানেলের পাশাপাশি জনপ্রিয় চ্যানেল MH1 এর একটি রিয়েলিটি শোতে বিচারকের দায়িত্বও পালন করেন সমরজিৎ যেখানে অন্য বিচারকের সঙ্গে ছিলেন শিল্পী অনুরাধা পাডোয়াল স্বয়ং। ভারতের দূরদর্শন চ্যানেলে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। ‘ডিডি ভারতী’ চ্যানেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি সঙ্গীত পরিবেশন করেছিলেন কবিতা কৃষ্ণমূর্তির সঙ্গে। দিল্লীতে গান্ধর্ব কয়ারের অন্যতম সদস্য হিসেবে বেলজিয়ামের বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে ইউরোপের প্রখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক ডির্ক ব্রুসির সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পান সমরজিৎ। ভারতের মৈথিলী ভাষার ছবি ‘মুখিয়া জী’ তে সমরজিৎ প্রথম প্লেব্যাক করেন। বিভিন্ন সময়ে ভারত, বাংলাদেশ, জার্মানী, বেলজিয়াম সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অনেক সাম্মানিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। তাছাড়া চ্যানেল আই, আরটিভি, এনটিভি, দেশ টিভি, বাংলাভিশন, মাছরাঙা, এসএ টিভি,এটিএন বাংলা, মাই টিভি সহ দেশের প্রায় প্রতিটি টিভি চ্যানেলে নিয়মিত ভাবে অনুষ্ঠান করে যাচ্ছেন শিল্পী সমরজিৎ রায়। এই পর্যন্ত হিন্দী ও বাংলা মিলিয়ে মোট ৮টি এলবাম প্রকাশিত হয়। প্রথম বাংলা দ্বৈত এলবামে উপমহাদেশের প্রখ্যাত শিল্পী অনুপ জলোটা গান করেন সমরজিতের সুর ও সঙ্গীত পরিচালনায়। ভারতের মিস্টিকা মিউজিকের ব্যানারে প্রথম হিন্দী এলবাম ‘তেরা তসব্বুর’ প্রকাশিত হয় ২০১০ সালে যা ২০১১ সালে ভারতের জিমা এওয়ার্ডের জন্য ‘সেরা জনপ্রিয় এলবাম’ হিসেবে মনোনয়ন পায় ভারতের সমস্ত জনপ্রিয় শিল্পীদের সঙ্গে। বিভিন্ন এলবামে সমরজিৎ এর সঙ্গে দ্বৈত কন্ঠে গান করেন ভারতের জনপ্রিয় শিল্পী অন্বেষা, রূপরেখা , সঞ্চিতা সহ আরো অনেকে। সমরজিৎ এর গাওয়া জনপ্রিয় হিন্দী ও বাংলা গানগুলোর উল্লেখযোগ্য হলো: ‘ও রূপসী চাঁদ’/’ভুলে যেতে বোলোনা’/’বালম মোরে’/’দেখ ওনকো’/’তুম বিন’ প্রভৃতি। গান গাওয়ার পাশাপাশি দিল্লীর গান্ধর্ব মহাবিদ্যালয়ে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে দীর্ঘ ১২ বছর শিক্ষকতা করে সমরজিৎ সঙ্গীত শিক্ষক হিসেবেও ভীষণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ২০১৬ সালে বাংলাদেশে সেরা শিল্পী হিসেবে ‘লাক্স আরটিভি স্টার এওয়ার্ড’ এর সম্মান পান তিনি।
জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সাবেক সভাপতি শমী কায়সারকে ...
পাঠকের মতামত