মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির ফাঁসি কার্যকরের আগে স্বজনদের সঙ্গে শেষ দেখা করার সুযোগ দেয়া হয়। মীর কাসেম আলী রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন না-এটা নিশ্চিত হওয়ার পর তার দণ্ড কার্যকরের আনুষ্ঠানিকতা এখন সময়ের অপেক্ষা।
তবে এই দণ্ড কখন কার্যকর হবে, সে বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ বা সরকার নিশ্চিত করে কিছু বলছে না। তবে মীর কাসেম যেখানে বন্দি সেই কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে এই মানবতাবিরোধী অপরাধীর স্বজনদেরকে বিকালে কারাগারে আসতে বলা হয়েছে।
বেলা ১১টা ১৭ মিনিটে নিজের ফেসবুক ওয়ালে এ বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস আপলোড করেন মীর কাসেমের মেয়ে সুমাইয়া রাবেয়া। তিনি লিখেন, ‘আজকে আবার আব্বুকে দেখতে যাচ্ছি। শেষবারের মত। কাল আব্বু থাকবেনা এ নিয়ে আমরা দুঃখিত নই। শাহাদাতের মর্যাদা কজনের ভাগ্যে জোটে? এ মৃত্যুর জন্যই তো সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন।’
মীর কাসেম আলীর স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুনও ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছেন, ‘আমাদেরকে বিকাল সাড়ে তিনটার মধ্যে যেতে বলা হয়েছে।’
গত মঙ্গলবার মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ড পুনর্বিবেচনা করে করা আবেদন নাকচ করেছে আপিল বিভাগ। এরপর বুধবার তার নয় জন স্বজন কাশিমপুর কারাগারে জামায়াত নেতার সঙ্গে দেখা করেন। সেদিনই কাসেমপত্নী জানিয়েছিলেন, এই দেখাই শেষ দেখা নয়।
রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দুই দিন ঝুলিয়ে রাখার পর শুক্রবার জামায়াত নেতা জানান, তিনি কোনো আবেদন করবেন না। পরদিন সকালে কাসেমের পরিবারকে এই যুদ্ধাপরাধীকে শেষবারের মতো দেখতে কারাগারে যাওয়ার কথা বলে কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ।
একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দোসর মীর কাসেম আলী চট্টগ্রাম অঞ্চলে নৃশংসতার জন্য পরিচিত ছিলেন বাঙালি খান নামে। খান সেনারা যেভাবে অত্যাচার করতো, মীর কাসেমের মতোভাবও একই রকম ছিল বলে এই নাম দেয়া হয়েছিল তখন। তবে কাসেম কন্যা লিখেছেন, ‘আমার আব্বু নরম মনের মানুষ। প্রতিবার বক্তব্য দিতে উঠলে কেঁদে ফেলতেন। এটা সবাই জানেন। এর আগে যখন দেখা করতে গিয়েছিলাম তখন আব্বুর চেহারায় বিন্দুমাত্র বিচলতা দেখিনি, বরং সবার সাথে হাসি খুশি ছিলেন।’
কাসেম কন্যা সুমাইয়া রাবেয়া ইসলামী ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক শিক্ষক। এর পাশাপাশি তিনি মালয়েশিয়ার মার্সি মিশনের স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন।
ঢাকাটাইমস/