আমাদের দেশে ছোট বেলা থেকেই শেখানো হয় যে শ্বশুরবাড়ি হচ্ছে মেয়েদের আসল ঘর, সেখানেই জীবন কাটাতে হবে, তাঁদের সবকিছু মাথা পেতে নিতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। বাস্তবতা কিন্তু একেবারেই ভিন্ন! সত্য এটাই যে জীবনের অন্য সব ক্ষেত্রে যেমন ভালোমন্দ মেশানো মানুষ আছে, শ্বশুরবাড়িতেও ঠিক তাই। সেখানে এমন মানুষ পাওয়া যায় যারা সত্যিকার অর্থেই আপন মনে করে। আবার এমন মানুষও মেলে যারা অকারণেই করে শত্রুতা। কিন্তু কীভাবে চিনবেন কে আপন আর কে পর?
শশুরবাড়িতে কে আপন আর কে পর, এটা চেনার সমস্যা হতে পারে নারী-পুরুষ যে কারো ক্ষেত্রেই। জেনে নিন ৫টি আচরণের কথা। এই ৫টি আচরণ কারো মাঝে দেখতে পেলে নিশ্চিত হতে পারেন যে তিনি আপনার মঙ্গল কামনা করেন না। সেক্ষেত্রে দূরত্ব বজায় রাখাটাই একমাত্র সমাধান।
১। তিনি স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া তৈরির চেষ্টা করেন
অন্যের দাম্পত্যে যারা সমস্যা তৈরির চেষ্টা করেন নানা ভাবে, স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া যারা উপভোগ করেন, তারা আর যাই হোক কোনভাবেই আপন মানুষ নন। এদের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে অন্যকে সুখে সংসার করতে না দেয়া। যত দূরে থাকবেন, ততই মঙ্গল।
২। তিনি সকলের সামনে বারবার আপনাকে খাটো করেন
সকলের শ্বশুরবাড়িতে এমন কেউ না কেউ থাকেই, যিনি কিনা বাড়ির বৌ কিংবা জামাইটিকে নানানভাবে অপমান-অপদস্থ করেন। ঠাট্টা করে অপমানসূচক কথা বলা, খোঁচা দেয়া, বিব্রতকর অবস্থায় ফেলা, এমন কিছু করতে দেয়া যা তিনি পারেন না, কোন কিছু না পারা নিয়ে কথা শোনানো, চেহারা বা সামাজিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলা ইত্যাদি সবকিছুই এর অন্তর্ভুক্ত।
৩। তিনি প্রায়ই আপনাকে মিথ্যা বলেন
কেবল শ্বশুরবাড়ি নয়, জীবনের অন্য ক্ষেত্রেও যখন কেউ বারবার আপনাকে মিথ্যা কথা বলছে, তখন তার থেকে দূরে থাকাই সবচেয়ে ভালো। কেননা সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কেউ মিথ্যে বলে না। আজ যিনি অন্যের সামান্য ব্যাপারে মিথ্যা বলছেন, কাল বড় ব্যাপারেও বলবেন। সাবধান থাকাই শ্রেয়।
৪। স্বামী-স্ত্রীর সকল ব্যক্তিগত ব্যাপারে তিনি নাক গলান
তিনি যে-ই হোন না কেন, স্বামী স্ত্রীর ব্যক্তিগত ব্যাপারে নাক গলাবার অধিকার কারো নেই। পিতা, মাতা, ভাই, বোন সকল সম্পর্কই জগতে জরুরী ও ভালোবাসার। কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। স্বামী বা স্ত্রীর সাথে মানুষ সেই সম্পর্ক ও আবেগ বিনিময় করে যা অন্য কারো সাথে সম্ভব না। আমাদের দেশে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ব্যাপারে কথা বলাকে প্রথা মনে করা হয়। যেমন- তারা কবে বাচ্চা নেবেন, কখন ঘুমাতে যাবেন, সঙ্গীকে কী কিনে দিলেন ইত্যাদি ব্যাপারে কথা বলে শ্বশুরবাড়ির লোক, যা সম্পূর্ণ অনুচিত।
৫। তিনি অন্যের কাছে কুৎসা করেন
আপনার অবর্তমানে শ্বশুরবাড়ির কেউ কুৎসা রটিয়ে বেড়ায় আপনার নামে? সেই মানুষদের থেকে শত হস্ত দূরে থাকুন। কাল আপনার স্বামী বা স্ত্রীর কাছেও চলে যাবে এই মিথ্যা কুৎসা।
শ্বশুরবাড়ির সাথে মানিয়ে নেয়া যে কোন মানুষের পক্ষেই পরিশ্রমসাধ্য একটি কাজ। কিন্তু জীবনের নিয়মে মানিয়ে নিতেই হয়। কিন্তু হ্যাঁ, নির্যাতন কখনো মেনে নিতে নেই। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনকে না বলুন, নির্যাতনের সাথে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবেন না। প্রিয়.কম
পাঠকের মতামত