ঘটনাটি যেন সিনেমার কাহিনীর মত। যে কিশোরী দু’বছর পূর্বে সংবাদপত্রে শিরোনাম হয়েছিল বিয়ের দিনে তার জীবনে আবারো ঘটল এক অনাকাক্ষিত ঘটনা। অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েটি গত দু’বছর আগে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে প্রতিবেশী বখাটে যুবকের ইভ টিজিং এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে মা বাবাসহ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছিল। এতে তার বাবার হাত ভেঙে দিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। বিয়ের দিনেও মেয়েটি শিকার হল এক অনাকাক্ষ্মিত ঘটনার। বিয়ের দিনে বধূ সেজে বসে আছে কনে। বরযাত্রী নিয়ে বর আসার পথে বিয়ের ১০ ভরি স্বর্ণ নিয়ে চম্পট দেয় বরের বড় ভাই। বিয়ের দিনে যাত্রা ভঙ্গ। অবশেষে বরযাত্রী নিয়ে লুণ্ঠিত স্বর্ণ উদ্ধার ও মামলা করতে দুলা গিয়ে হাজির হলেন থানায়। সিনেমার গল্পের কাহিনীর মত এ ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল দুপুরে মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের দেবাঙ্গা পাড়া গ্রামে। প্রত্যক্ষদর্শী ও বরের পারিবারিক সূত্র জানায়, উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের দেবাঙ্গা পাড়া গ্রামের আবু ছিদ্দিকের পুত্র মালয়েশিয়া প্রবাসী আব্দুস ছালামের সাথে একই উপজেলার হোয়ানক বড়ছড়া গ্রামের আজিজুর রহমানের কন্যা জেসমিন আক্তার মুন্নীর বিয়ের দিন ধার্য ছিল গতকাল। আগের দিন বর কনে উভয় পরিবার মেহেদী অনুষ্ঠান পর্ব সারে। গতকাল রবিবার দুপুরে বর আব্দুস সালামের যখন বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়ির উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা করেন ঠিক সে মুহূর্তে তার বড় ভাই ফরিদুল আলম তার অপর বোনের হাতে থাকা স্বর্ণালংকারের ব্যাগ নিয়ে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়। ব্যাগে ১০ ভরি স্বর্ণ, ২ লক্ষ টাকার চেক ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিল বলে জানান বরপক্ষের লোকজন।
জানা গেছে, বড় ভাই ফরিদুল আলম ছোট ভাইয়ের এ বিয়ের সওদা করতে যাওয়ার সময় অভিমান করেছিল। পরে ভাই বোন সবাই মিলে বড় ভাইকে বিয়েতে কেনাকাটা করতে রাজি করায়। এ ঘটনার পর বড় ভাইসহ মিলে বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করে। তারপরও মনের ক্ষোভ মেটাতে ও বিয়ের দিনে ছোট ভাইয়ের ওপর প্রতিশোধ নিতে সে এরকম কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেন বরযাত্রীরা। এ ঘটনার পর বর আব্দুস ছালাম বরযাত্রী নিয়ে সোজা হাজির হন মহেশখালী থানায়। তিনি পুলিশের নিকট লুণ্ঠিত স্বর্ণ উদ্ধারের জন্য সহায়তা চেয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, কনে জেসমিন আক্তার উপজেলার হোয়ানক বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৫ সালে এসএস সি পাশ করে। ২০১৩ সালে প্রতিবেশী জনৈক বখাটে ছেলে তাকে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসীরা তার মা ও তাকে মেরে রক্তাক্ত করে এবং তার বাবার হাত ভেঙে দেয়। এ ব্যাপারে দায়ের করা মামলাটি এখনো বিচারাধীন রয়েছে। সম্প্রতি বখাটেদের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে জেসমিনের পিতা তাকে মালয়েশিয়া প্রবাসী আব্দুস সালামের সাথে বিয়ে দেয়ার জন্য পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেয়। গতকাল থানায় হাজির হয়ে বরের মা নুর জাহান ও বোন মোতাহেরা বেগম দাবী করেন, ফরিদ অভিমানের প্রতিশোধ নিতে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। সে অস্ত্র ঠেকিয়ে তাদের কাছ থেকে স্বর্ণের ব্যাগটি নিয়ে যায় বলে জানান তারা।