প্রকাশিত: ১৭/০৫/২০২০ ১১:৩২ এএম

ইউছুফ আরমান::
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে গত ডিসেম্বর মাসে চীনের উহান প্রদেশে প্রথম করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত করে, যার ফলে বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ দেশ সেই সংক্রমণের ছোবলে আজো জর্জরিত।

এই রোগের যন্ত্রণায়!
জানিনা আর কতো স্বজন তাঁর আপনজনকে হারাতে যাচ্ছে। কেউ কারো নয় এই মরণব্যাধিতে, না জানি কতো লোক এই রোগের যন্ত্রণায় বিছানায় কাতরায়! এই দু-পাঁচের মাসের মাথায় বিশ্বের হাতে গুনা কয়েকটি দেশে তিন লক্ষের অধিক লোকের প্রাণহানি এই মহামারীতে চলে গেছে। কোনো দিন ভাবেনি কারণ এটি কোনো যুদ্ধ নয়। এটি নিরব ঘাতক মরণ ব্যাধি।

পুরা পৃথিবী স্তব্ধ
আজ পুরা পৃথিবী স্তদ্ধ। চলছে লকডাউন, হাজার হাজার পরিবারে চলছে অর্থ সংকট, কেউ বা দিন অতিবাহিত করছে বার্ধক্যে-কেউবা পঙ্গুত্বে-কারো যায় রোগে-কারো যায় দুশ্চিন্তায় এত্তো কিছু সামাল দেওয়া বস্তুত অসম্ভব তারপরও নিজেকে আর পরিবার বাঁচাতে সবকিছু মেনে নিয়ে যাচ্ছে দিন।

সহযোগিতা নয় বরং শপিং মল খোলে দিন
ক্ষুধার্ত মানুষ মুখে এক মুঠো খাবারের জন্য হাহাকার। ত্রাণের জন্য ছুটছে দিকবিদিক। ঘুম নাই চোখে। সরকার, জনপ্রতিনিধি ও বিত্তবানদের কাছে হাত পেতে বসে আছে অসহায় দুঃস্থ মানুষ। তাতে কি আসে যায়। গরীব বলে ঈদে নতুন জামা কাপড় গায়ে দেব না? যাদের পেটের খাবার যোগাতে ছুটতে হয় অবিরাম তারই শপিং মলে শপিং করায় ব্যস্ত সময় পার করছে। এই সব মানুষ কে ত্রাণ নয়, সরকারি সহায়তা নয় বরং শপিং মল খোলে দিন যা সময়ের দাবী। দেখা যাক কার কত অর্থ যোগান আছে। মধ্যবিত্ত অর্থ সংকটে আর সচেতনতার দোহায় দিয়ে ঘরে বসে পেটে ভাতে কোন মতে খাবার চলছে। বিত্তশালী সচেতনা আর সর্তকতা অবলম্বন করে যাচ্ছে।

লাশের মিছিল
আমরা সচেতন হয় বা না হয় তাতে কি? সুযোগ সন্ধ্যানী করোনা ভাইরাস মানুষের আত্মার ইন্দ্রে ইন্দ্রে প্রবেশ করবে। খোঁজবে না সচেতন ও অসচেতন মানুষের পরিচিতি। ঘটিয়ে দেবে ভাইরাসের বিস্তার। আক্রান্ত হবে হাজার হাজার মানুষ। পরিণত হবে ইতালি, কানাডা, স্পেনের মত লাশের মিছিল। কেউ পারবে না থামাতে। চোখের জল হবে একমাত্র সম্বল। তখন কোথায় যাবে ঈদের আনন্দ! কোথায় যাবে নতুন জামা কাপড়! পরিধান করা হবে সাদা কাফনের কাপড়। দয়া করে ঈদের খুশিতে নতুন জামা কাপড় নয়, মহামারীতে জীবন বাঁচান। বেঁচে থাকলে ঈদ পাবেন কিন্তু জীবন চলে গেলে ফিরে পাওয়ার সুযোগ নাই। কাজেই সচেতন হয়, শপিং করা পরিহার করি। ঘরে থাকি, নিরাপদে থাকি।

নিয়মনীতি আর সাবধানে দিন কাটায়
সুতরাং আমাদের এইবারের ঈদ হয়তো সেই আগেকার মতো অতি উৎসাহের মধ্যে বিভিন্ন নামীদামী শপিংমল হতে করা হবেনা, হয়তো দূরদূরান্তের পথ পাড়ি দেওয়া যাবেনা, উচ্ছ্বসিত হয়ে বিনোদনের জন্য বিভিন্ন পর্যটনে ঘুরাও হবেনা। না হোক তবুও আমরা সবার সাথে সবার মুখখানি দেখে বাঁচতে চাই। আল্লাহর ইবাদতে মশগুল হয়ে, সচেতন-নিয়মনীতি আর সাবধানে থেকে ঘরে বসে দিন কাটায়।

পরিশেষেঃ- করোনাভাইরাসের মহামারী চলতে থাকলে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে আসন্ন ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়া উচিত। সচেতনতা বৃদ্ধির অভাবে শপিং মলে চলছে ঈদের আমেজ। এর প্রভাবে করোনা থাবায় আক্রান্ত হবে হাজার হাজার মানুষ। তা নাহলে যেভাবে মৃতের সংখ্যা আর আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলছে সেটা আমাদের জন্য কখনো মঙ্গল হতে পারে না।

লেখকঃ-
ইউছুফ আরমান,
কলামিষ্ট, সাহিত্যিক, শিক্ষানবিশ আইনজীবী, ফাজিল, কামিল, বি.এ অনার্স, এম.এ, এলএল.বি। দক্ষিণ সাহিত্যিকাপল্লী, বিজিবি স্কুল সংলগ্ন রোড়, ০৬নং ওয়ার্ড, পৌরসভা, কক্সবাজার। ০১৬১৫-৮০৪৩৮৮
ই-মেইলঃ[email protected]

পাঠকের মতামত

আসলে কি বয়কট করছি!

আমরা বাঙালি নতুন ইস্যু পেলে দৌড়ে তা দেখার জন্য উৎকণ্ঠা প্রকাশ করি। আজ বয়কট নিয়ে ...