সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলি খান ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
তবে এখনও মরহুমের জানাজা এবং দাফনের বিষয়গুলো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানা গেছে।
আকবর আলি খানের ছোট ভাই কবীরউদ্দিন খান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বাড়িতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে।
আকবর আলি খান ১৯৪৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার পুরো স্কুল জীবন পার করেন ধানমন্ডি গভ: বয়েজ হাই স্কুল এ। তিনি ঢাকা কলেজে ভর্তি হন এবং ১৯৬১ সালে আইএসসি পাশ করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে অধ্যয়ন করেন এবং সেখান ১৯৬৪ সালে সম্মান ও ১৯৬৫ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন দুটিতেই প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে। সরকারী চাকরিতে যোগদানের পূর্বে তিনি কিছু সময়ের জন্য শিক্ষকতা করেন। ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে তিনি লাহোরের সিভিল সার্ভিস একাডেমিতে যোগ দেন। প্রশিক্ষণ শেষে ১৯৭০ সালে হবিগঞ্জ মহুকুমার এস. ডি. ও. হিসেবে পদস্থ হন। তিনি তার এলাকায় সুষ্ঠুভাবে ১৯৭০-এর নির্বাচন পরিচালনা করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি হবিগঞ্জের মহুকুমা প্রশাসক বা এসডিও ছিলেন এবং যুদ্ধকালীন সময়ে সক্রিয়ভাবে মুজিবনগর সরকারের সাথে কাজ করেন। মুক্তিযুদ্ধ কালে পাকিস্তান সরকার অনুপস্থিতিতে তার বিচার করে এবং ১৪ বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে। দেশ স্বাধীন হবার পর তিনি সরকারী চাকরি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার সাথে যুক্ত ছিলেন। ২০০৬ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি রেগুলেটরি রিফর্মস কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন।
তার জনপ্রিয় প্রকাশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে পরার্থপরতার অর্থনীতি, আজব ও জবর আজব অর্থনীতি, অবাক বাংলাদেশ : বিচিত্র ছলনাজালে রাজনীতি, বাংলায় ইসলাম প্রচারে সাফল্য : একটি ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ, দুর্ভাবনা ও ভাবনা : রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে ইত্যাদি।