কক্সবাজার-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমলের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে আরও দুটি মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কক্সবাজার দ্রুত বিচার আদালতে মামলা দুটি করেন স্থানীয় বিএনপি কর্মী মো. জসিম উদ্দিন। মামলা ২টিতে সাইমুম সরওয়ার, ভারুয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিনসহ ১১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গ্যা মামলা দুটি গ্রহণ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত সূত্র জানায়, দ্রুত বিচার আইনে করা একটি মা'ম'লায় সাইমুম সরওয়ার, ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিনসহ ৪৮ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০ জনকে আ'সা'মি করা হয়েছে। মা'ম'লার এজাহারে বলা হয়, ২০১৮ সালে ২৫ ডিসেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার সদরের ভারুয়াখালী বাজারে বিএনপির প্রার্থী লুৎফর রহমান কাজলের ধানের শীষ প্রতীকের কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন আ'সা'মিরা।
অপর মা'ম'লায়ও আ'সা'মিদের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতা-কর্মীদের আক্রমণ, বাসাবাড়িতে হা'ম'লা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়। ওই মামলায় সাবেক হুইপ সাইমুম সরওয়ার, ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিনসহ ৪২ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০ জনকে আ'সা'মি করা হয়েছে।
মা'ম'লার বাদী জসিম উদ্দিন বলেন, আ'সা'মিরা সবাই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী। সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের প্রভাবের কারণে তিনি এ ঘটনায় মা'ম'লা করতে পারেননি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলে সাইমুম সরওয়ারসহ দলের নেতা-কর্মীরা আত্মগোপন করেন। এরপর তিনি মা'ম'লা করার সুযোগ পান।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি রাকিবুজ্জামান বলেন, আদালতের আদেশের কাগজপত্র হাতে পৌঁছায়নি। পৌঁছালে আ'সামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, সাইমুম সরওয়ারের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত কক্সবাজার সদর মডেল থানা ও আদালতে হত্যা, ইটভাটা দখলসহ পাঁচটি মামলা হয়েছে। গত ২৫ আগস্ট ইটভাটা দখলের অভিযোগে সাইমুম সরওয়ারের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে করা ওই মামলায় সাইমুম সরওয়ারের ঘনিষ্ঠজন রামু উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদী কক্সবাজার শহরের গোলদিঘি এলাকার বাসিন্দা ও রামু উপজেলার রশিদনগর ইউনিয়নের মেসার্স জামান ব্রাদার্স নামের ইটভাটার মালিক ওয়াহিদুজ্জামান।
এর আগে সাইমুম সরওয়ারসহ দলের দুই শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় আরও দুটি মা'ম'লা হয়েছে। একটি মা'ম'লা হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গু'লি করে যুবক হ'ত্যা'র অভিযোগে। পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি করে। অপর মামলা হয়েছে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে। বিশেষ ক্ষমতা আইনে এই মা'ম'লা করেন বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম।
মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম বলেন, ৫ আগস্ট সরকার পতনের আগমুহূর্তে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় সাইমুমের নেতৃত্বে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও গু'লি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। গো'লা'গু'লিতে অন্তত দুজনের মৃ'ত্যু হয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানার জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করেও সাইমুম সরওয়ারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। গত ৫ আগস্ট থেকে তিনি আত্মগোপনে আছেন।