দীর্ঘ ১১ বছর পর কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমসহ দুই শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় জাফর আলম ছাড়াও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, পৌর মেয়র আলমগীর চৌধুরী, সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীসহ ৮ইউপি চেয়ারম্যানকে আসামী করা হয়েছে।
২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষে মিজানুর রহমান (১৭) নামে এক শিশু নিহত হন।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাতে নিহত মিজানের পিতা মোহাম্মদ শাহ আলম বাদি হয়ে চকরিয়া থানায় এ হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।
গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারত চলে যাওয়ায় নতুন করে হত্যা মামলাটি দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেন নিহত মিজানুর রহমানের (১৭) পরিবার।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, গত ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর কেন্দ্রীয় বিএনপির ডাকা কর্মসূচী ছিলো সারাদেশে। ওইদিন চকরিয়া পৌরশহরে কর্মসূচীতে যোগদান করতে কাকারা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের পুলেরছড়া এলাকায় জড়ো হন চকরিয়া উপজেলা বিএনপি ও কাকারা ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। নিহত মিজান ও তার বাবা মোহাম্মদ শাহ আলম ওই মিছিলে যোগদান করতে উপস্থিত হন। ওইদিন বিকাল সাড়ে তিননটার দিকে হঠাৎ করে সাবেক সাংসদ জাফর আলমের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গাড়ির বহর নিয়ে অর্তকিতভাবে বিএনপি নেতাকর্মীর উপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা হলে মিজানুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
সূত্র জানায়, মিজান মারা যাওয়ার পরপরই তার পিতা শাহ আলম বাদি হয়ে সাবেক সাংসদ জাফর আলম সহ ১১জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে চকরিয়া উপজেলা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। তৎকালিন আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে মামলাটি খারিজ করে দেন আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর অতিবাহিত হলেও আর এগুতে পারেনি মিজানের পরিবার।
গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারত পালিয়ে গেলে হত্যা মামলাটি নতুন করে পূণরুজীবিত করার সিদ্ধান্ত নেন তার পরিবার। এ মামলায় কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক সাংসদ জাফর আলম, চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী সহ ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ সমর্থিত ৮ চেয়ারম্যানসহ ১২৮জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও এজাহারে ৪০-৫০-জন অজ্ঞাতানামা দেখানো হয়েছে।
মিজানুর রহমান হত্যার মামলাটি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনজুর কাদের ভূইয়া।