দীর্ঘ ১০ বছর পর নিজের এলাকা কক্সবাজারে ফিরছেন বিএনপি'র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ। এ নিয়ে কক্সবাজার জেলার নেতাকর্মী সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। জেলার সর্বত্র সাজ সাজ রব। প্রিয় নেতাকে বরণে একের পর প্রস্তুতি সভা করে যাচ্ছেন বিভিন্ন উপজেলার নেতৃবৃন্দ। এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে উখিয়া উপজেলা বিএনপি।
এতে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ২৮ আগস্ট বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদের আগমন উপলক্ষে আমরা উখিয়া উপজেলা বিএনপি আমার নেতা শাহজাহান চৌধুরীর নির্দেশনায় কক্সবাজার জেলা বিএনপি'র নির্দেশনায় যৌথ সভা করেছি উখিয়া আবুল কাশেম চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে। ইউনিয়ন পর্যায়েও প্রস্তুতি মিটিং হবে। আমার নেতা সালাউদ্দিন আহমেদের আগমন উপলক্ষে কক্সবাজারে উখিয়া থেকে বিপুল জনসমাগম নিয়ে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য।
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে উখিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরওয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, কেন্দ্রীয় নেতা সালাউদ্দিনর জন্য আমরা অনেক আন্দোলন করেছি, সংগ্রাম করেছি। আমিই সর্বপ্রথম ওনার ছবিসহ পোস্টার দিয়েছিলাম। সে পোস্টার লাগানোর সময় কক্সবাজার জেলা আদালত ভবন থেকে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। অনেক কষ্ট আমরা সবাই করেছি ওনার জন্য। সারা বাংলাদেশের মানুষ যারা গুম খুনের বিরুদ্ধে ছিল তারা সবাই উনার জন্য দোয়া করেছে। আল্লাহ সবার দোয়া কবুল করেছেন। সালাউদ্দিন আহমেদকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিয়েছেন। ২৮ আগস্ট তিনি কক্সবাজারে আসছেন। সকাল ১১ টায় বিমান থেকে তিনি কক্সবাজারের নামবেন। উনার কর্মীদেরকে, কক্সবাজারের জনগণকে দেখার জন্য উনি আসবেন। আমরা সেদিন উখিয়া উপজেলা বিএনপি ২০০ গাড়ি বহর নিয়ে উখিয়া থেকে সকাল আটটায় কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেব। উখিয়া থেকে প্রায় সাত হাজার নেতাকর্মী সমর্থক যোগ দেবে সালাউদ্দিনের কক্সবাজার আগমন উপলক্ষে।
আমরা আশা করছি সালাউদ্দিন আহমেদের কক্সবাজারে প্রত্যাবর্তনকে ইতিহাসে স্মরণীয় ফলক হিসেবে রাখবে উখিয়ার জনগন।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিতি ছিলেন বিএনপি নেতা দলিলুর রহমান শাহিন, জামাল মাহমুদ,সাইফুর সিকদার সহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বিএনপি সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের জুনের ১৪ তারিখে কক্সবাজারে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিয়েছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ। উদ্দীপনায় ভরা সেই বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, 'আজকের পর হয়তো আমি আপনাদের মাঝে না-ও ফিরতে পারি! যদি আমি না ফিরি, আমি যদি নির্দেশনা না-ও দিতে পারি, আন্দোলন শুরু হলে আপনারা সবকিছু অচল করে দেবেন। সরকার বিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।’
সেই বক্তৃতার পর সত্যিই তিনি ফিরতে পারেননি। সরকার বিরোধী আন্দোলন চলাকালে, বিএনপির মুখপাত্রের দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০১৫ সালের ১০মে রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি ভবন থেকে সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ‘গুম’ হন তিনি। দুই মাস একদিন পর ‘গুম রাজ্য’ থেকে মুক্ত হয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং শহরের গলফ কোর্স ময়দানে নিজেকে আবিষ্কার করতে পারলেও ফিরতে পারেননি নিজের মাতৃভূমিতে।
তারপর কেটে গেছে অনেকদিন, অনেক বছর। দশবছর পর ২৮ আগস্ট তার আগমনকে ঘিরে ঢাকঢোল বাজিয়ে প্রস্তুতি চলছে সালাহউদ্দিন আহমদকে বরণে। তিনি কক্সবাজার থেকে ফিরে গিয়েছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব হিসেবে। এবার ফিরে আসছেন বিএনপির সেচছ নীতিনির্ধারণী ফোরাম ‘জাতীয় স্থায়ী কমিটি’র সদস্য হয়ে। তাই আয়োজনও তেমনই করার উদ্যোগ চলছে।