সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে দেখা করেছেন পুলিশের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের মা ও বোন।সোমবার সেনাসদরে তাদের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় সন্তান হারানোর বেদনায় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রয়াত মেজর (অব.) সিনহার মা নাসিমা আক্তার। সিনহা হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের আইন অনুযায়ী শাস্তি দ্রুততার সঙ্গে কার্যকরের দাবি জানান তিনি।
ভাই হত্যার বিচার দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস।
সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের যথাযথ আইন অনুযায়ী দ্রুত বিচার নিশ্চিতকল্পে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের অঙ্গীকার করেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এই ঘটনায় ওই বছরের ৫ আগস্ট সিনহার বোন বাদী হয়ে টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ এবং বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আব্দুল্লাহ আল মামুন, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, উপ-পরিদর্শক (এসআই) টুটুল ও কনস্টেবল মোহাম্মদ মোস্তফা।
২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি বিকালে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল মামলার ১৫ আসামির দুজনকে মৃত্যুদণ্ড, ছয়জনকে যাবজ্জীবন ও সাত জনকে খালাসের রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন- টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলী। তাদের ফাঁসিতে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখতে বলেছেন বিচারক।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাগর দেব, রুবেল শর্মা, পুলিশের সোর্স নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দীন। মামলা থেকে খালাস পাওয়া সাতজন হলেন- এপিবিএনের এসআই শাহজাহান আলী, কনস্টেবল মো. রাজীব, মো. আব্দুল্লাহ, পুলিশের কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, লিটন মিয়া ও আব্দুল্লাহ আল মামুন।
সিনহা হত্যা ঘটনার পর চার বছর হয়ে গেলেও রায় কার্যকর হয়নি এখনও। দোষীদের ফাঁসি কার্যকর চান সিনহার মা ও বোন