ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৭/১০/২০২৪ ৩:৩৭ পিএম , আপডেট: ২৭/১০/২০২৪ ৩:৪০ পিএম

অপেক্ষাকৃত ভালো অবস্থানে থাকলেও সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে নানা অনিয়মে জড়াচ্ছে বেসরকারি পূবালী ব্যাংক। সিন্ডিকেট এতটাই শক্তিশালী যে, একের পর এক ক্ষমতার হাতবদল হয় কিন্তু অনিয়মের মাত্রা একই থাকে। সম্প্রতি ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানসহ একজন পরিচালকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুদকে ডলার কারসাজি, অর্থ পাচার, নিয়োগ বাণিজ্য, ঋণ জালিয়াতিসহ বিশদ অভিযোগ জমা পড়েছে। 

অপরদিকে বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে মামলা চলছে আদালতে। বৈদেশিক মুদ্রার ক্রয়-বিক্রয় এবং বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে রহস্যজনক অর্থ লেনদেন-সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি তদন্তও ক্ষমতার দাপটে বন্ধ হয়ে গেছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা প্রয়াত এইচটি ইমামের ভাগ্নেকে এমডি নিয়োগ দিয়ে অনিয়মের আখড়ায় পরিণত করা হয় ব্যাংকটিকে। জানা গেছে, অনিয়ম ধামাচাপা দিতে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত হন সাবেক ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান।

 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি তদন্তের নথিপত্রে দেখা যায়, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময় যখন দেশে ডলারের বাজারে অস্থিরতা তুঙ্গে, তখন এই সংকটের সুযোগে কারসাজি করে বিপুল অর্থ লুটে নেয় একটি চক্র। কারসাজিতে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেও কোনো শাস্তির মুখে পড়তে হয়নি পূবালী ব্যাংককে। সংশ্লিষ্টরা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তৎকালীন ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমানের কৃপায় বেঁচে যায় ব্যাংকটি।

তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) ঘোষিত দরের বেশি দরে ডলার বিক্রি করে ২৪৮ কোটি টাকা আয় করেছে পূবালী ব্যাংক। একই সময় বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে বেশি দরে ডলার কিনে অতিরিক্ত ২১১ কোটি টাকা ব্যয় করেছে ব্যাংকটি। আয়-ব্যয়ের অতিরিক্ত অর্থের হিসাবায়নের জন্য ব্যাংকটি কয়েকটি সাস্পেন্স অ্যাকাউন্ট (সন্দেহজনক হিসাব) ব্যবহার করেছে। লক্ষ্য ছিল লেনদেন শেষে এ অ্যাকাউন্টগুলো ডিলেট বা মুছে দেবে। কিন্তু তার আগেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন দলের হাতে ধরা পড়ে বিষয়টি।

এরপর পরিদর্শন দল অ্যাকাউন্টগুলোর বিস্তারিত তথ্য চেয়ে চিঠি দিলেও বাধে বিপত্তি। এই বিপত্তি থেকে বাঁচতে ব্যাংকের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ছাইদুর রহমানকে ম্যানেজ করে তদন্ত সেখানেই থামিয়ে দেওয়া হয়। একটি শাখায় অনিয়ম ধরা পড়ার পর ব্যাংকটির অন্যান্য এডি শাখায় পরিদর্শন করতে চাইলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতনরা তা করতে দেননি।

কেঁচো খুঁড়তে সাপ

তখন পরিদর্শন থেমে গেলেও পরবর্তীতে ব্যাংকটিতে আরও অনিয়ম খুঁজে পায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন দল। এ যেন কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হওয়ার মতো অবস্থা। বাণিজ্যের আড়ালে দেশের বিপুল অর্থ পাচার ঠেকাতে যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যতিব্যস্ত, ঠিক তখনই বৈদেশিক বাণিজ্যে বড় জালিয়াতি করে ব্যাংকটি, যা স্পষ্ট অর্থ পাচারকে নির্দেশ করে। পূবালী ব্যাংকের বাণিজ্য প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট থেকে বৈদেশিক মুদ্রার যে হার নির্ধারণ করা হয়েছে, গ্রাহকের কাছ থেকে আমদানির বিল বাবদ তার চেয়ে বেশি টাকা নেওয়া হয়।

এ প্রক্রিয়ায় ঘোষিত হারের চেয়ে অতিরিক্ত ১৪৮ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরপর গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া অতিরিক্ত অর্থ মতিঝিল ফরেন এক্সচেঞ্জ শাখার একাধিক হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। এজন্য বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর অনুমোদন না নিয়েই সাতটি হিসাব খোলা হয়। ঢাকার বাইরে অর্থাৎ বরিশালের একটি শাখার বৈদেশিক বাণিজ্যেও গরমিল খুঁজে পান তদন্ত কর্মকর্তারা। একটি এলসির বিপরীতে নির্ধারিত মূল্যের অতিরিক্ত প্রায় ৫৭ হাজার টাকা মতিঝিল করপোরেট শাখার গ্রাহক শারমীন অ্যাপারেলের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এর সূত্র ধরে ব্যাংকটির সব শাখার এলসি বা ঋণপত্র পরীক্ষার উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক বিভাগ। তদন্ত কর্মকর্তাদের ধারণা, আন্ডার ও ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে বিপুল অর্থ পাচার হয়েছে, যার সঙ্গে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং বোর্ড জড়িত। তবে প্রভাব খাটিয়ে সব ধরনের তদন্ত কার্যক্রম থামিয়ে দেওয়া হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘পূবালী ব্যাংকের এসব অনিয়ম পাওয়ার পর অন্য শাখাগুলোতে বিস্তর পরিদর্শন চায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন টিম। তবে তৎকালীন ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান এই তদন্তকাজ আটকে দেন। একই সঙ্গে সংঘটিত অনিয়মের জন্য ব্যাংকটির বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্টে বলা হয়, এক্সচেঞ্জ হাউসের নামে খোলা পূবালী ব্যাংকের সাতটি হিসাবের মধ্যে চারটির অনুমোদন দিয়েছেন এমডি (চলতি দায়িত্ব)। এ ছাড়া বাকি তিনটি কার অনুমোদনে খোলা হয়ছে তা স্পষ্ট নয়।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, পূবালী ব্যাংক ঘোষিত দরের চেয়ে বেশি দরে এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে ডলার কেনার ক্ষেত্রে উচ্চমূল্য পরিশোধ করে। এর মাধ্যমে সরকারি কোষাগার থেকে ৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়, যা রেমিট্যান্সের প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হয়েছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ‘পূবালী ব্যাংকের শুধু একটি শাখায় এমন অনিয়ম পাওয়া গেছে। ব্যাংকের অন্য এডি শাখাগুলোতে পরিদর্শন করলে আরও কয়েকগুণ অনিয়ম পাওয়া যাবে মর্মে প্রতীয়মান হয়।’

এসব অনিয়মের বাইরে আরও বিপুল কারসাজির অভিযোগ আছে ব্যাংকটির বোর্ড ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) এ-সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়েছে, যা প্রতিদিনের বাংলাদেশের হাতে এসেছে। অভিযোগে পূবালী ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান মঞ্জুরুর রহমান, এমডি ও সিইও মোহাম্মদ আলী, পরিচালক ফাহিম আহমেদ ফারুক চৌধুরী, পূবালী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য হাফিজ আহমেদ মজুমদারের নেতৃত্বে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ, বিদেশে পাচার, ঋণ জালিয়াতি, ডলার ক্রয়ের নামে অর্থ আত্মসাৎ, ভুয়া সনদে নিয়োগ জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগদলীয় সাবেক এমপি হাফিজ আহমেদ মজুমদারের অনিয়ম অব্যাহত রেখেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মঞ্জুরুর রহমানও। এক্ষেত্রে তাদের যোগসাজশ লক্ষ করা গেছে। অনৈতিক সুবিধা পাওয়ার লক্ষ্যে অদক্ষ, অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা এইচটি ইমামের ভাগ্নে মোহাম্মদ আলীকে এমডি ও সিইও হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ফাহিম আহমেদ ফারুক চৌধুরীকে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্যাংকটির পরিচালক করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, পূবালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুর রহমান, এমডি মোহাম্মদ আলী, পরিচালক ফাহিম আহমেদ ফারুক চৌধুরী, পরিচালক রানা লায়লা হাফিজের বাবা সাবেক এমপি হাফিজ আহমেদ মজুমদারের নেতৃত্বে সিন্ডিকেট ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ, বিদেশে ব্যাংকের অর্থ পাচার-সংক্রান্ত বেশকিছু মামলা উচ্চ আদালতে চলমান রয়েছে। বিতর্কিত ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম ও আওয়ামী লীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় উল্লেখিত সিন্ডিকেট প্রায় ১৫ বছর ধরে ব্যাংকটিতে লুটপাট ও জালিয়াতি করেছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে পূবালী ব্যাংকের এমডি ও সিইও মোহাম্মদ আলীর বক্তব্যের জন্য ফোন করা হলে তিনি সাড়া দেননি। পরে তার দপ্তরে গেলে সহকারীর মাধ্যমে লিখিত প্রশ্ন দিতে বলা হয়। গত ১৫ অক্টোবর লিখিত প্রশ্ন পাঠানো হলেও গতকাল শনিবার পর্যন্ত তিনি উত্তর দেননি।

যেসব এক্সচেঞ্জ হাউসের নামে লেনদেন 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে পূবালী ব্যাংকের যে সাতটি অ্যাকাউন্টে ডলারের অতিরিক্ত মূল্য লেনদেন হয়েছে, সেগুলো হলোÑ অ্যারাবিয়ান এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে ১ কোটি ৫২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স কিনেছে পূবালী ব্যাংক। এ সময় বাজারদর ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১১০ টাকা থাকলেও ব্যাংকটি কিনেছে সর্বোচ্চ ১১৭ টাকায়। এতে ব্যাংককে পরিশোধ করতে হয়েছে অতিরিক্ত ৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

এ ছাড়া মার্চেন্টেডকে ৫ কোটি ৫২ লাখ ডলার রেমিট্যান্সে সর্বোচ্চ ১২৩ টাকা পর্যন্ত দর দিয়েছে। এতে অতিরিক্ত পরিশোধ করতে হয়েছে ৪০ কোটি টাকা। গালফ ওভারসিজ এক্সচেঞ্জকে ৪ কোটি ৮৭ লাখ ডলারের বিপরীতে সর্বোচ্চ দর দিয়েছে ১২২ টাকা। এতে অতিরিক্ত পরিশোধ করেছে ২৬ কোটি টাকা। ইউনিভার্সেল এক্সচেঞ্জ সেন্টার থেকে ৭৭ লাখ ডলার কিনেছে সর্বোচ্চ ১২২ টাকা ৫০ পয়সা দরে। এতে অতিরিক্ত পরিশোধ করতে হয়েছে ৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা। এনবিএল মানি ট্রান্সফার থেকে ৪৫ লাখ ডলার কিনেছে সর্বোচ্চ ১১৭ টাকা ৫০ পয়সা দরে। এতে ২ কোটি ৪২ লাখ অতিরিক্ত পরিশোধ করতে হয়েছে। কন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জ সল্যুশনের মাধ্যমে ১০ লাখ ৫৮ হাজার ডলার কিনেছে পূবালী ব্যাংক। এতে সর্বোচ্চ রেট ছিল ১২৩ টাকা ৬০ পয়সা। যার বিপরীতে অতিরিক্ত খরচ হয়েছে ১১০ কোটি টাকা। মাল্টিনেট ট্রাস্ট এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে ৫ কোটি ৮৬ লাখ দিরহাম রেমিট্যান্স কিনেছে। এতে নির্ধারিত রেট ছিল ৩০ টাকা ০৮ পয়সা। যদিও ব্যাংক রেমিট্যান্স কিনেছে সর্বোচ্চ ৩৩ টাকা ২১ পয়সায়। এতে লোকসান হয়েছে ১৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

মঞ্জুরুর রহমানের বিরুদ্ধে আরও যত অভিযোগ

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়Ñ মঞ্জুরুর রহমান ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির ২৫ লাখ গ্রাহকের আমানতের ১ হাজার ১৪১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ইতঃপূর্বেও দুদকের তদন্তে বিষয়টির প্রমাণ মিলেছে। তিনি ডেল্টা লাইফে তার চার সন্তানকে পরিচালক নিয়োগ করেছেন। তার কন্যা আদিবা রহমানকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ দিয়েছেন। ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্সের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের ছত্রছায়ায় পূবালী ব্যাংকে ব্যাপক লুটপাট করেন। তিনি ডেল্টা লাইফের শেয়ারধারী হিসেবে পূবালী ব্যাংকে পরিচালক হয়েছিলেন, যা বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। ডেল্টা লাইফের ২ হাজার ৯০০ কোটি টাকা আত্মসাতের জন্য প্রতিষ্ঠানটির ডেটাবেজ সার্ভারের গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য মুছে ফেলেন।

মঞ্জুরুর রহমান ও মোহাম্মদ আলী চক্র সম্প্রতি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবাসীদের এক্সচেঞ্জ করা শত শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকিং চ্যানেলে না দিয়ে বিদেশে পাচারের অভিযোগ আসে পূবালী ব্যাংক পিএলসির বিরুদ্ধে। দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিমের অভিযানেও এই অর্থ পাচারের প্রমাণ পাওয়া যায়।

হাফিজ আহমেদ মজুমদারের বিরুদ্ধেও অভিযোগের পাহাড়

ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ মজুমদারের বিরুদ্ধেও বিশদ অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও দুদকের অভিযোগপত্রে। তিনি চেয়ারম্যান থাকাকালে অনিয়ম-জালিয়াতির দায়ে ১০ পরিচালককে সরানোর নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকিং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মঞ্জুরুরের আগে প্রায় এক যুগ পূবালী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ আঁকড়ে ছিলেন হাফিজ আহমেদ মজুমদার। আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার জোরে ব্যাংক কোম্পানি আইন আর বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন নির্দেশনাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কয়েকজন পরিচালক দীর্ঘদিন পরিচালক পদে থাকেন। ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান সাবেক এমপি হাফিজ আহমেদ মজুমদার, ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, পরিচালক ফাহিম আহমেদ ফারুক চৌধুরী, পরিচালক মনিরুদ্দিন আহমেদ, রুমানা শরীফ, এম খাবিরুজ্জামান ইয়াকুবসহ কয়েকজন এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে পূবালী ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান মঞ্জুরুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। পূবালী ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিনি দীর্ঘ সময় ধরে অফিস করছেন না। পরবর্তীতে তার মোবাইল ফোনে কল ও মেসেজ করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। তা ছাড়া সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ মজুমদারের মোবাইল ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তিনি দেশ ছেড়েছেন বলে তার ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে। অন্যদিকে সাবেক ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমানের মোবাইল ফোনে অনেকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। সরকার পতনের পর চাপের মুখে পদত্যাগ করে তিনি কোথায় গেছেন তা জানা যায়নি। সূত্র প্রতিদিনের বাংলাদেশ

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জরুরি আন্তর্জাতিক সম্মেলন চান ড. ইউনূস

রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ‘নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ’ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে একটি ...