সীমান্তে ফেলে রাখা মিয়ানমারের অস্ত্র বাংলাদেশের জন্য হুমকি হতে পারে। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এসব অস্ত্র এ দেশে থাকা রোহিঙ্গাদের হাতে চলে আসতে পারে। এ ছাড়া কক্সবাজারের ৩ থেকে ৫ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ হতে পারে, যা রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি। এ পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়েছে আরাকান আর্মিসহ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। সেই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে পড়ে রয়েছে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ ও অস্ত্র। এসব বাংলাদেশে চলে আসার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের পালংখালী সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে অস্ত্র নিয়ে অনুপ্রবেশের সময় গ্রেপ্তার হয় ২৩ রোহিঙ্গা। এদের সবাই কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরের নিবন্ধিত রোহিঙ্গা।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের ধারণা, হয়তো আরও বেশি অস্ত্র মিয়ানমার থেকে এ দেশে থাকা রোহিঙ্গাদের হাতে এসেছে। যা শুধু রোহিঙ্গা ক্যাম্পই নয়, সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়তে পারে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক আবদুর রশীদ বলেন, আরএসও, আরসা, নবী গ্রুপসহ বিভিন্ন গ্রুপ ওখান থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করার একটা প্রচেষ্টায় আছে। মিয়ানমারের ফেলে যাওয়া বা যুদ্ধে পরিত্যক্ত অস্ত্র যেন বাংলাদেশে প্রবেশ না করে সেটিই আগামী দিনে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। বাংলাদেশে এর প্রভাব মারাত্মকভাবে পড়তে পারে।
এ ছাড়া কক্সবাজারের তরুণ রোহিঙ্গাদের যুদ্ধের মাঠে ভেড়াতে পারে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। এমন শঙ্কায় আশ্রয় শিবিরে নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক আবদুর রশীদ বলেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় তিন থেকে পাঁচ লাখ যুদ্ধ করার মতো সক্ষম ব্যক্তি এখানে আছে। বিভিন্ন শক্তির চোখ পড়েছে এখানে। তারা এই জনবলকে যুদ্ধে যুক্ত করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে। এদের যুক্ত করতে পারলেই বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সংঘাতের একটা সম্পৃক্ততা তৈরি হবে। এটি বাংলাদেশের জন্য একটা বড় ঝুঁকি।
সাবেক পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘যেহেতু রোহিঙ্গাদের আমরা আশ্রয় দিয়েছি, তাই তাদের ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। কারণ, তাদের আমরা লড়াই করার জন্য আশ্রয় দিইনি। এক্ষেত্রে আমি অনেক আগেই পরামর্শ দিয়েছিলাম যে, আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক আছে এমন নেতৃত্ব রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গড়ে তোলা উচিত। কিন্তু সেটা আমরা করিনি। আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখলে উভয়েরই সুবিধা হতো।’
অস্ত্র ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে সীমান্তেও নিরাপত্তা জোরদারের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।ইনডিপেনডেন্ট টিভা