দুশ্চিন্তা দূর করে সুখী হওয়ার জন্য হয়তো অনেকে আপনাকে অনেক ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন। কেউ বলেছেন ব্যায়াম করতে। কেউ আবার বলেছেন মন খুলে হাসার কথা। অনেকে পরামর্শ দেন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করতে। কিন্তু সুখী মানুষেরা কী করেন না, বা কেমন কাজ থেকে নিজেদের দূরে রাখেন তা তেমন কেউ বলে না।
জেনে নিন যে পাঁচটি কাজ থেকে সুখী মানুষেরা নিজেদের বিরত রাখেন। এ নিয়ে লিখেছেন তালহা বিন জসিম
১. অনবরত ফেসবুকিং করেন না
সুখী মানুষরা অনবরত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে থাকেন না। এমনকি কোন কারণ ছাড়া ফেসবুকে সময় ব্যয় করেনই না। কেননা এই ধরনের কাজ প্রচুর কর্মঘণ্টা ও বিশ্রামের (যেমন ঘুম, বিনোদন) সময় নষ্ট করে। অপরদিকে সুখী মানুষরা নিজের সৃষ্টিশীল কাজে বেশি মনোযোগী থাকেন। নিজের বিকাশে বেশি সময় ব্যয় করেন। গবেষণায় দেখা গেছে , যারা ফেসবুক ব্যবহার করেন তাদের ৩৯ শতাংশ অসুখী। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে বেশি সময় ব্যয় করাটা অনেক সময় নিজেকে পরিচর্চার সময়টা নিয়ে নেয় যা আপনাকে কোন না কোন সময় অসুখী-হতাশ করবে।
২. বিশ্রাম নিতে ভুলেন না
সুখী মানুষেরা খুব চাপের মধ্যে থাকলেও নিজেকে কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম দিয়ে থাকেন। সুখী মানুষেরা জানেন আজ তার কাজে চাপ থাকবে, তখন তিনি কোনটা বেশি ও কোনটা কম গুরুত্বপূর্ণ তা বাছাই করে কাজের তালিকা করে নেন। এভাবে নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে দুশ্চিন্তা ছাড়াই কাজ করেন। অপরদিকে অসুখীরা নিজের কাজের বোঝা নিয়ে হা-হুতাশে সময় নষ্ট করেন বেশি।
৩. নেতিবাচক লোকদের সাথে বন্ধুত্ব রাখেন না
সুখী মানুষেরা তাদের বন্ধুত্ব করে থাকেন যাচাই-বাছাই করে। নেতিবাচক লোকদের সাথে সময় ব্যয় করেন না, কেননা তারা জানেন নেতিবাচক মন্তব্য ইতিবাচক চিন্তাকে নষ্ট করে দেয়। ইতিবাচকভাবে না ভাবতে পারলে সুখী হওয়া যায় না। সব কাজে কোন কোন না অভিযোগ তুলে নেতিবাচক মন্তব্য করা অনেককে সাময়িক ভালো লাগা দিলেও এটা দীর্ঘ সুখী জীবনের জন্য ক্ষতিকর। সুখী মানুষদের বেশিরভাগ বন্ধু ইতিবাচক ও সুখী মানুষ হয়ে থাকে। হতাশাবাদী মানুষদের এড়িয়ে চলেন তারা। এমনকি আড্ডায় কারো নামে পরনিন্দা করেন না।
৪. পরিস্থিতি নিয়ে পর্যলোচনা করে কাজ করেন, আগেই অনুমান নয়
সুখী মানুষেরা কখনই আগে অনুমান করে কথা বলেন না, যেমন- এই কাজ করবো না, এটা আমার দ্বারা সম্ভব না- এমন কথা তারা বলেন না। বরং সুখী মানুষেরা সবসময় এক ধরনের উৎসাহী মনের হয়ে থাকেন। নিজের ইতিবাচক বিকাশে ভিতরে তাড়না থাকে। সুখী মানুষেরা নিজেদের প্রশ্ন করেন, কেনো এটা ঘটলো?। সবসময় এক ধরনের যৌক্তিক উত্তর আশা করেন। এমনকি কেউ যদি তার ক্ষতিও করে তাহলে সে ইতিবাচকভাবে ভেবে থাকেন, যেমন- নিশ্চয়ই ঐ ব্যক্তির কোন টানাপোড়েন আছে তাই তিনি এভাবে কাজটি করেছেন। কিভাবে তাকে সাহায্য করা যায়। সুখী মানুষেরা রাগ কম করেন, সবসময় বাস্তবতা দিয়ে বিচার করার চেষ্টা করেন।
৫. অন্যের সফলতায় ঈর্ষাকাতর হন না
সুখী মানুষেরা অন্যের সফলতায় ঈর্ষাকাতর হয় না। বরং প্রাণবন্তভাবে সফলতার উদযাপন করেন। শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান সবার আগে। সুখী মানুষেরা অন্যের সফলতাকে নিজের প্রেরণা হিসেবে নিয়ে থাকে। সফল ব্যক্তিকে কখনও নিজের প্রতিপক্ষ ভাবেন না। অন্যের সফলতাকে সহজভাবে নিয়ে থাকেন। অপরের ভালো হয়েছে এজন্য মন খারাপ করেন না। বরং অন্যকে সফল হতে সহায়তা করেন।
পাঠকের মতামত