উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯/০৯/২০২২ ২:৪৯ পিএম

সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গৃহবন্দি থাকা মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চিকে আরও ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সামরিক শাসিত মিয়ানমারের একটি আদালত সু চিকে এই কারাদণ্ড দেয়।

এছাড়া সু চির পাশাপাশি এদিন তার সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক শন টার্নেলকেও তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গণতন্ত্রপন্থি এই নেত্রীর কারাদণ্ডের রায়ের ব্যাপারে জানেন এমন একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অং সান সু চি ও তার সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা শন টার্নেলের বিরুদ্ধে সরকারি গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়। এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে মিয়ানমারে সর্বোচ্চ ১৪ ​​বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। তবে অভিযুক্ত উভয়কেই ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। অবশ্য উভয় ব্যক্তিই নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছিলেন।

কারাদণ্ডের বিষয় সম্পর্কে রয়টার্সকে তথ্য দেওয়া ওই সূত্রটি জানিয়েছে, অং সান সু চি ও তার সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা শন টার্নেল; দু’জনকেই তিন বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সাজা ভোগের সময় কোনো কঠোর পরিশ্রম করতে হবে না।

বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় ওই সূত্রটি তার পরিচয় প্রকাশ করতে অস্বীকার করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। বন্দি করা হয় গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি ও তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের হওয়া সবগুলো মামলায় যদি সু চি দোষী সাব্যস্ত হন, সেক্ষেত্রে সবমিলিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রায় ১৯০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ হতে পারে। রাজধানী নেইপিদোর রুদ্ধদ্বার আদালতে সু চির বিরুদ্ধে বিচারকাজ চলছে।

রয়টার্স বলছে, এখন পর্যন্ত রায় ঘোষণা হওয়া বিভিন্ন মামলায় অং সান সু চিকে ১৭ বছরেরও বেশি করাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। সু চি অবশ্য বরাবরই তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে মিথ্যা বলে দাবি করে এসেছেন।

শন টার্নেল অস্ট্রেলিয়ার ম্যাকুয়ারি ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক। সামরিক অভ্যুত্থানের কয়েকদিন পর সু চির পর তিনিও আটক হন।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং এর আগে বলেছিলেন, টার্নেলকে বিচারের বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে ক্যানবেরা।

রয়টার্স বলছে, বৃহস্পতিবার রাজধানী নেইপিদোর একটি রুদ্ধদ্বার আদালতে সু চিকে এই সাজা দেওয়া হয়। আসামিরা ঠিক কিভাবে সরকারি গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘন করেছেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও একটি সূত্র আগে বলেছিল যে, টার্নেলের অপরাধ ‘অভিযোগের সাথে সম্পর্কিত কারণ তার কাছে সরকারি নথি ছিল’।

বৃহস্পতিবারের এই রায় নিয়ে অবশ্য এখনও কোনো মন্তব্য করেনি মিয়ানমারের জান্তা সরকার। তবে জান্তা জোর দিয়ে বলেছে, মিয়ানমারের আদালত স্বাধীন এবং যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা যথাযথ প্রক্রিয়া অনুযায়ী সুবিধা পাচ্ছে।

পাঠকের মতামত

দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রাখাইন, নতুন আশ্রয়প্রার্থীর আশঙ্কায় বাংলাদেশ

নজিরবিহীন সংকটে পড়তে যাচ্ছে প্রতিবেশী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় উন্নতির সম্ভাবনা না থাকায় ...

আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বিশাল সুযোগ’ পেতে যাচ্ছেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা

মিসরের বিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ফুল-ফান্ডেড স্কলারশিপ ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যান্ড ...