সুনীল আকাশের সঙ্গে চোখে প্রশান্তি ও মুগ্ধতা এনে দেয়া দিগন্ত-বিস্তৃত নীল জলরাশি, সৈকতজুড়ে সারি সারি কেয়াবাগান, ঝাউগাছ, নারিকেল গাছ, শৈবাল, নুড়ি, পাথর, ঝিনুক আর প্রবালের ছড়াছড়িময় এক মনোরম দ্বীপের নাম সেন্টমার্টিন। দেশের মানুষের কাছে এটি সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য। করোনার কারণে দেশের সব জায়গা পর্যটন শূণ্য হলেও সেন্টমার্টিনে প্রায় আড়াই মাস অবকাশযাপন করেছেন চার ভ্রমণপিপাসু।
১৫ মার্চ সেন্টমার্টিন ঘুরতে গিয়েছিলেন অন্যান্য পর্যটকদের মতো ঘুরতে গিয়েছিলেন তারা। করোনাভাইরাসের কারণে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করতেই অন্য ভ্রমণপ্রেমীরা দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছে। ইচ্ছে করেই ওই চার পর্যটক দ্বীপে থেকে গেলেন। সেখানেই তার কাটিয়েছেন ৮০ দিন। গতকাল মঙ্গলবার তারা ফিরেছেন প্রত্যেকের আপন নীড়ে।
পরিবার-পরিজন কিংবা কর্মস্থল ছেড়ে করোনাভাইরাস থেকে বেঁচে থাকতে এমন উদ্যোগ তাদের। লেখালেখি, বই পড়ে, গান শুনে ও সমুদ্র উপভোগ করে সময় পার করেছেন এ চার পর্যটক। তারা জানিয়েছেন, স্থানীয়দের সহযোগিতায় বেশ ভালো সময় পার করেছেন তারা।
জানা যায়, করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশে পর্যায়ক্রমে লকডাউন ঘোষণা করা হলে সেন্টমার্টিন থেকে সর্বশেষ জাহাজ ফিরে ১৯ মার্চ। তবে এনজামুল, আরশাদ হোসেন ও সালেহ রেজা আরিফ স্বেচ্ছায় সেন্টমার্টিনে থেকে যান। তাদের মধ্যে আনজামুল ট্রাভেল এজেন্সিতে কাজ করে, আশরাফুল ব্যবসায়ী, সালেহ রেজা আরিফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। একটি ভ্রমণ সংগঠনের সদস্য হিসেবে তাদের পরিচয় ও বন্ধুত্ব।
সালেহ রেজা আরিফ বলেন, সেন্টমার্টিন অনেকেরই স্বপ্নের জায়গা। আমার কাছে এটি ভালো লাগার জায়গা। এখানকার সমুদ্রের গর্জন, জ্যোৎস্না রাত, মাছ ধরা, কেয়াবন—এগুলোর মধ্যে থাকলে যে কারো মন ভালো থাকতে বাধ্য। আমি আমার জায়গা থেকে এখন পৃথিবীর সুখী মানুষগুলোর মধ্যে একজন মনে করছি।
ঢেউয়ের গর্জন শুনে ঘুমানো এবং ঘুম থেকে উঠার পাশাপাশি, লেখালেখি, বই পড়ে, গান শুনে ও সমুদ্র উপভোগ করে সোনালী দিন পার করেছেন এ চার পর্যটক। দ্বীপবাসীর মিশে যাওয়া স্থানীয়দের মতো মনে করছেন তারা। তবে মাসের পর মাস তো থাকা সম্ভব নয়, তাই ফিরে আসতেই হলো ইট-পাথরের শহরে।