লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : সৌদি আরবের রিয়াদে আব্দুল হাই ও জসিম উদ্দিন নামের দুই বাংলাদেশির গলা কাটা লাশ উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ।
এই দুইজন লক্ষ্মীপুর রামগঞ্জ উপজেলার নাগমুদ গ্রামের বাসিন্দা। নিহত আব্দুল হাই ওই গ্রামের আলী আজমের ছেলে ও জসিম একই গ্রামের করিম খলিফার ছেলে।
তবে আব্দুল হাইয়ের পরিবার অভিযোগ করেছে, জসিম আব্দুল হাইকে হত্যা করেছে। অন্যদিকে জসিমের পরিবার বলছে, জসিম মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। আব্দুল হাইকে হত্যা করে জসিম আত্মহত্যা করেছে।
এ দুইজনের নিহতের খবর গণমাধ্যমসহ প্রবাসী স্বজনদের কাছ থেকে জানতে পেরে তাদের গ্রামের বাড়িতে চলছে মাতম।
জানা যায়, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেলে সৌদি আরবের আল সাহাবিয়া মল এলাকা থেকে আব্দুল হাই ও জসিম উদ্দিনের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে সৌদি পুলিশ।
বুধবার দুপুরে আব্দুল হাইদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার পরিবারে চলছে মাতম। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যরা হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন।
আব্দুল হাইয়ের স্ত্রী আলেয়া বেগম জানান, সর্বশেষ গতকাল বিকেল (বাংলাদেশ সময়) ৫টার দিকে স্বামীর সঙ্গে তার কথা হয়েছিল, এর এক ঘণ্টা পর মৃত্যুর সংবাদ পান।
তিনি অভিযোগ করেন, সৌদি আরবে জসিম, আব্দুল হাই ও চট্টগ্রামের এক লোক থাকত। দুপুরে ভাত খাওয়ার পর চট্টগামের ওই লোক নামাজ আদায় করছিলেন। এ সময় জসিম বাহির থেকে এসে হঠাৎ ওই ব্যক্তির মাথায় আঘাত করে। এ সময় বাধা দিতে গেলে আব্দুল হাইকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে জসিম। এর আগে চট্টগ্রামের ওই লোক রক্তাক্ত অবস্থায় রুম ত্যাগ করে। তিনি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন।
আব্দুল হাইয়ের ১৪ বছর বয়সী একমাত্র ছেলে মেহেদী হাসান রাহুল বলেন, বাবার লাশ চাই, হত্যার বিচার চাই, আমরা পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা ঋণগস্ত। এ টাকা কে দিবে এখন।
এদিকে জসিমের ঘরে গিয়ে দেখা গেছে স্বজনদের ভিড়। তার স্ত্রী বিছানায় অচেতন হয়ে পড়ে আছেন। অসুস্থতার কথা বলে প্রতিবেশীরা গণমাধ্যমে কথা বলতে দেননি তাকে।
তবে জসিমের চাচাতো ভাই আব্দুল মন্নান জানান, অল্প কিছুদিন ধরে জসিম মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছিল। তাই আব্দুল হাইকে হত্যা করে সে নিজেও আত্মহত্যা করেছে।
এ দিকে প্রবাসীদের বরাত দিয়ে স্থানীয় কয়েকজন দাবি করেছেন, জসিম এখনো জীবিত আছেন। সংকটাপন্ন অবস্থায় রিয়াদের একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি। তবে এই খবরের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
প্রায় ১৮ বছর ধরে আব্দুল হাই সৌদিতে থাকেন। কিন্তু তিনি ঠিক সুবিধা করতে পারেননি। সর্বশেষ ১ মাস আগে দেশ থেকে ঘুরে যান আব্দুল হাই।
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু ইউছুফ জানান, আমার কাছে কেউ এখনো কোনো আবেদন করেনি। তবে পরিবার চাইলে লাশ ফেরৎ আনাসহ অসহায় পরিবারকে সরকারি সহায়তা করা হবে।