২৫ বছরের সংগীত ক্যারিয়ারে ধারাবাহিকভাবে অনেক জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন রবি চৌধুরী। তবে এতটা পথ পাড়ি দেয়ার পরও এতটুকু ক্লান্ত নন তিনি। বরং, আগের চেয়ে আরো দুরন্ত গতিতে সংগীতে পথ চলছেন। অনেকের অনুসরণীয় শিল্পীতে পরিণত হয়েছেন। অ্যালবাম, চলচ্চিত্র ও স্টেজ- এ প্রতিটি ক্ষেত্রেই আগের মতোই সরব রবি। এতটা বছর ধরে সফলতা ও জনপ্রিয়তা ধরে রাখাটা সত্যিই কঠিন। এর পেছনের রহস্য কি? রবি চৌধুরী বলেন, কোন রহস্য নেই। গানের প্রতি ভালোবাসা থেকে গাইতে শুরু করেছিলাম। ভালোবাসাটাই পরে পেশায় পরিণত হয়। যেকোনো কাজেই ভালোবাসা না থাকলে তাতে সফল হওয়া যায় না। এটা আমার বিশ্বাস। আর গান ছাড়াতো নিজেকে কল্পনাই করতে পারি না। আমি একদিক দিয়ে সৌভাগ্যবানও। এত বছর ধরে শ্রোতারা আমার গান শুনছেন, আমাকে ভালোবাসছেন। সব সময় তারা আমাকে উৎসাহ দিয়ে গেছেন। এটা কয়জনের ভাগ্যেইবা জোটে! সেজন্য শ্রোতাদের প্রতি অসংখ্য ধন্যবাদ জানাতে চাই। এদিকে এই সময়ে স্টেজ ব্যস্ততাতেই বেশি সময় কাটছে রবি চৌধুরীর। সর্বশেষ ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজের সঙ্গে চট্টগ্রামের বোট ক্লাবে একটি জমকালো কনসার্টে অংশ নিয়েছেন তিনি। এরপর ঢাকায় ফিরেও টানা শো করে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে রবি চৌধুরী বলেন, স্টেজ শোতে আমি সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। সারা বছরই আমার স্টেজ ব্যস্ততা থাকে। আর আমি বড় শোগুলো বেশি পারফর্ম করি। এখনও টানা ব্যস্ততা যাচ্ছে শো-র। চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শো করছি। দেশের বাইরেও যাওয়ার কথা রয়েছে সামনে। এদিকে এরই মধ্যে রবি চৌধুরী নিজের ৬২তম একক অ্যালবামের কাজও শেষ করেছেন। তবে বিভিন্ন কারণে অ্যালবামটি প্রকাশ হতে বিলম্ব হচ্ছে। তার এ অ্যালবামের গানগুলোর কথা ও সুর রচনা করেছেন ওপার বাংলার স্বনামধন্য শিল্পী-সুরকার নচিকেতা। এ বিষয়ে রবি চৌধুরী বলেন, নচি দা অনেক যত্ন করে গানগুলো তৈরি করেছেন। আমিও শতভাগ উজাড় করে গানগুলো গেয়েছি। তবে বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে একটু বিলম্ব হয়ে যাচ্ছে অ্যালবামটি প্রকাশ করতে। খুব শিগগির এটি শ্রোতাদের হাতে তুলে দেবো। বর্তমানে অডিও ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কেমন? রবি চৌধুরী বলেন, এখন অডিও ইন্ডাস্ট্রি আগের মতো নেই। আগে শিল্পীরা প্রতিটি উৎসবে সরব থাকতো অ্যালবাম নিয়ে। কোম্পানিগুলোও ঈদ কিংবা পূজায় অনেক আগে থেকে অ্যালবাম প্রকাশের প্রস্তুতি নিতেন। উৎসবগুলোর আগেই বিভিন্ন সিডির দোকানে নতুন গান বাজতো। শ্রোতারা সেগুলো কিনতো নিয়মিত। কিন্তু সেই রমরমা বিষয়টি এখন আর নেই। এখনতো সিডির দোকানই রয়েছে হাতে গোনা। এখন সবাই অনলাইনে গান শুনছেন। তবে অডিও ইন্ডাস্ট্রি নিয়মের মধ্যে নেই। যে যেভাবে পারছে গান প্রকাশ করছে। বিভিন্ন বিষয়ে শিল্পীরাও একতাবদ্ধ না। আবার সিনিয়রদের সঙ্গে জুনিয়রদের একটা গ্যাপ রয়ে গেছে। আর মোবাইল কোম্পানি যদি ঠিকমতো রয়্যালিটি দিতো, তাহলে কিছুরই দরকার ছিল না। অন্যান্য দেশে একটি জনপ্রিয় গানের রয়্যালিটি দিয়ে একজন শিল্পী সারা জীবন চলতে পারেন। কিন্তু আমাদের দেশে সেই নিয়মের বালাই নেই। এ প্রজন্মের তরুণরা কেমন করছে সংগীতে? রবি বলেন, তরুণরা অনেক ভালো করছে। অনেক বাধা বিপত্তি আসবে। তবে তার মধ্যে থেকেই নিজেকে এগিয়ে নিতে হবে। হতাশ হলে চলবে না। সবচেয়ে বড় কথা হলো গানতো ভালো অনেকেই গায়। একজন ভালো শিল্পী হতে গেলে আগে ভালো মানুষ হতে হবে। এবার ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। সংসার কেমন চলছে? রবি চৌধুরী বলেন, খুব ভালো। স্ত্রী আমার কাজে শতভাগ সহযোগিতা করছে। আর মেয়ে রায়ানা চৌধুরী রোজাকে নিয়েই আমার অবসর সময় কেটে যায়। ও এখন আমার গানও গাইতে চেষ্টা করে। এটা খুব ভালো লাগার একটি বিষয় আমার কাছে।