হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার, সব মন্ত্রণালয় পরিচালনায় শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত রাখা, দ্রুত সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া, আর্থিক খাতগুলো সক্রিয় করতে নেতৃত্বে পরিবর্তন আনাসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার। গতকাল শুক্রবার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের প্রথম বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। খবর বিডিনিউজের।
বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বেশ সময় নিয়ে আলোচনা করেছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যত দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেটা নিয়ে আলাপ আলোচনা চলছে। আইজিপি মহোদয়ও সেখানে যোগ দিয়েছেন। যত দ্রুত সম্ভব যেন পুলিশ নেমে যায় এবং আমরা সকলেই জন্য তাদের সহযোগিতা করি। কারণ পুলিশের মত একটা বাহিনীর যদি মনোবল ভেঙে যায়, তখন সে অনিরাপদ বোধ করবে। সেজন্য আমাদের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তাদের সঙ্গে কথা বলবেন।
কিছু কিছু জায়গায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর ওপর আক্রমণ হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সাথে নিয়ে আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে প্রতিনিধিত্ব করে বা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব করে, এমন সংস্থাগুলোর সাথে আলোচনা করে আপাতত একটা রক্ষা বলয় করা হবে। এ বিষয়ে আইজিপি মহোদয়ের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে অনেক হয়রানিমূলক মামলা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এর আগেও হয়রানিমূলক রাজনৈতিক মামলা হয়েছে। সেই সব হয়রানিমূলক মামলাগুলো কী করে বন্ধ করা যায়, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিছু কিছু আইন আছে যেটার ভুক্তভোগী আপনারাও যেমন– আইসিটি, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট। আইসিটি ও ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল হলেও সেগুলোর অধীনে অনেকের শাস্তি হয়েছে, অনেকে জেলে আছে, অনেকের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। হয়রানিমূলক মামলার মধ্যে সেগুলোকেও আনা হবে।
কীভাবে পরিবর্তন আনা হলে এই আইনগুলো আর স্বাধীন মত প্রকাশে বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হতে পারবে না বা বিরোধী দমনে ব্যবহৃত হতে পারবে না, সে বিষয়েও আলোচনা করা হবে বলে জানান তিনি।
সব মন্ত্রণালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করা হবে জানিয়ে তিনি রিজওয়ানা হাসান বলেন, কীভাবে তারা সম্পৃক্ত থাকবেন, এটার কাঠামো কী হবে, এটা আমরা পরবর্তীতে চিন্তা করব। দ্রুত সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে বলে জানান রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, এখনো রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ নেই, শিক্ষার্থীরা রাস্তা ম্যানেজমেন্ট করছেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি না যে কালই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেব। শিক্ষক সমাজের সঙ্গে আলোচনা করা হবে, শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে এনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
পাঠকের মতামত