যত রক্ত প্রবাহিত হলো বাংলার সবুজে সবুজে, যেন তত জল প্রবাহিত হয়নি গঙ্গা-যমুনায়। রক্তে রক্তে এখানকার সবুজেরা রক্তিম সূর্যকেও হার মানিয়েছিল সে বেলায়। রক্ত দিয়েই সীমানা গড়েছিলেন বীর বাঙালি। তাই তো লাল-সবুজের পতাকা ‘রক্তস্নাত বাংলাদেশ’র প্রতিচ্ছবি মেলে ধরে।
১৯৭১। এক বিস্ময়ের নাম। বিশ্ব রাজনীতির এক অবর্ণনীয় ইতিহাস। এর প্রতিটি ক্ষণ যেন ধ্বংস আর সৃষ্টি ইতিহাসের একেকটি পাণ্ডুলিপি। ১৯৭১ সালে আগুনের লেলিহান শিখায় যখন গোটা পূর্বপাকিস্তান পুড়ে পুড়ে ছাই হচ্ছে, ঠিক তখনই নতুনের কেতন উড়িয়ে বাংলাদেশ নামের একটি ভূখণ্ড জন্ম নিচ্ছে। ‘৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের প্রতিমুহূর্ত ‘বাংলাদেশ’ সৃষ্টির কথা বলে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৫১ বছর আগে দীর্ঘ ৯ মাসের মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত হয় একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিকতায় ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে স্বাধীনতাকমী অদম্য বাঙালিদের কাছে। অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়।
১৯৭১ সালের এই মাসে সুদীর্ঘ ২৩ বছরের শোষণ, বঞ্চনা আর অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে ৯ মাস যুদ্ধ করে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয় দামাল বাঙালি। মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯ মাস ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও ডিসেম্বরে এসে পাকিস্তানি বাহিনী এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শেষ করে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতে তৎপর হয়।
বিজ্ঞাপন
তালিকা করে তারা একে একে হত্যা করে দেশের খ্যাতিমান শিক্ষক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, সাংবাদিক বুদ্ধিজীবীদের। শেষ পর্যন্ত ডিসেম্বর মাসেই পর্যুদস্ত হয় হানাদারবাহিনী। রচিত হয় নতুন ইতিহাস। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) তাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বাংলার আকাশে উদিত হয় নতুন সূর্য।
এরপর স্বাধীন ভূমে ফিরে আসে ভারতে শরণার্থী হিসেবে বসবাস করা প্রায় এক কোটি মানুষ। প্রবাসী মুজিবনগর সরকার দেশে ফিরে এসে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। হাজার বছরের শোষণ আর বঞ্চনার ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে জাগ্রত বাঙালি জাগিয়ে তোলে ‘বাংলাদেশ