# মেয়র-চেয়ারম্যানের মোবাইলের ওটিপি-পাসওয়ার্ড ব্যবহার
# জড়িত কম্পিউটার অপারেটর, ফ্রিল্যান্সার
# ৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় চুক্তি
# ৬ মাসে কয়েকশ রোহিঙ্গাসহ ৫ হাজার সনদ সরবরাহ
নাগরিকত্ব প্রমাণ করা, টিকা দেওয়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, বিদেশযাত্রা, চাকরিতে নিয়োগসহ ১৯টি কাজে প্রয়োজন পড়ে জন্মসনদের। কেউ মারা গেলে মৃত্যু নিবন্ধনের জন্যও লাগে জন্মসনদ। এছাড়া উত্তরাধিকার নিশ্চিত করা যায় না। সবমিলিয়ে জন্মনিবন্ধন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল নথি।
ঘরের শত্রু বিভীষণ বলে একটা প্রবাদ আছে। বাংলাদেশের জন্ম নিবন্ধনের তথ্য যেসব সার্ভারে থাকে সেটি হ্যাক করে নানা মাত্রায় জাল-জালিয়াতির খবর হয়েছে গণমাধ্যমে। তবে গত ছয় মাস ধরে এই জালিয়াতি নতুন মাত্রায় হচ্ছে, যা উদ্বেগজনক। কারণ, মিয়ানমার থেকে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নাগরিকদের অনেকে বাংলাদেশিদের সহযোগিতায় পাচ্ছেন ভুয়া জন্মসনদ। মাত্র ৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় রোহিঙ্গারা জন্মসনদ নিয়ে বাংলাদেশি পরিচয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট তৈরি করছেন।
পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন সচিবের আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট অফিসের কম্পিউটার অপারেটর, ফ্রিল্যান্সার ও অন্যান্য সহযোগীদের সহায়তায় এই জালিয়াতি হচ্ছে বলে তথ্য মিলেছে। ভুয়া জন্মসনদ ব্যবহার করে বাংলাদেশে জমি ক্রয়, চাকরি ও বিদেশ গমনের তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুর জেলার বিরল পৌরসভার কম্পিউটার অপারেটর মো. আব্দুর রশিদ। একই জেলার বিরলের ১০নং রাণীপুকুর ইউনিয়নের কম্পিউটার অপারেটর সোহেল চন্দ্র। নিয়মানুযায়ী সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ও পৌরসভার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জন্ম নিবন্ধনের কার্যক্রম চলমান ছিল। যেটির কাজ করে আসছিল এই দুই অপারেটর।
মাস ছয়েক আগে একটি চক্রের সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। পরিচয় সূত্র ধরে সংঘবদ্ধ সাইবার অপরাধী চক্রের মাধ্যমে তারা হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ও ফেইসবুক গ্রুপে যুক্ত হন। আরও আগে এসব গ্রুপ জন্মসনদ, এনআইডি ও পাসপোর্টসহ বিভিন্ন জাল-জালিয়াতির বিষয়ে চক্রের মধ্যে কথোপকথন ও যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল।
চক্রের প্রলোভনে পড়ে চাহিদা অনুযায়ী, রশিদ ও সোহেল চন্দ্র টাকার বিনিময়ে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া জন্মনিবন্ধন সম্পন্নের পর সনদ সরবরাহ করে আসছিল। গত ছয় মাসে কয়েক শ’ রোহিঙ্গাসহ অন্তত পাঁচ হাজার ভুয়া জন্ম নিবন্ধন তৈরির পর তা সরবরাহ করেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের(ডিএমপি) সাইবার ক্রাইমের পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, শুধু এই ইউপি ও পৌরসভায় নয়, চাহিদা ও গুরুত্ব অনুযায়ী টাকার বিনিময়ে দেশের আরও বেশ কয়েকটি জেলার ইউপি ও পৌরসভা হতে কম্পিউটার অপারেটরদের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধনের পর সনদ পেয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গা নাগরিকরা। এ বাবদ লেনদেন হচ্ছে বিকাশ, রকেট ও নগদসহ মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেলে।
তারা বলছেন, এসব জালিয়াতিতে ইউপি চেয়ারম্যান, সচিব, পৌরসভা মেয়র ও নির্বাহী কর্মকর্তারা দায় এড়াতে পারেন না। কারণ, জন্মনিবন্ধনের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল নথির বিষয়টি দেখভাল, অনলাইনে এন্ট্রির প্রক্রিয়ায় পিনকোড, পাসওয়ার্ড তাদের কাছে। তাদের অজ্ঞাতসারে এ ধরনের ঘটনা ঘটা সম্ভব নয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের(ডিএমপি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের এডিসি (অর্গানাইজড অ্যান্ড ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম) মো. সাইফুর রহমান আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনলাইনে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড (সাইবার ক্রাইম) নজরদারি করার সময় দেখা যায়, NID HELP DESK GROUP এবং NID online service (এনআইডি অনলাইন সেবা) নামক ফেসবুক গ্রুপে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা কললিস্ট, এসএমএস লিস্ট, নাম্বার টু এনআইডি, এনআইডি টু নাম্বার, লাস্ট কল লোকেশন, রেডিও লোকেশন, কোন সিম নাম্বার হতে তার রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত তথ্যাদি, নগদ/বিকাশ, এনআইডি সার্ভার কপি, এনআইডি (সাইন কপি), সার্টিফিকেট (সাইন কপি), বিভিন্ন নাগরিক তথ্যাদি, জন্ম-নিবন্ধন (সাইন কপি), জন্ম নিবন্ধন সংশোধনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনিভাবে প্রবেশ করে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের তথ্য সংগ্রহ করে, তার অনুলিপি টাকার বিনিময়ে সরবরাহ করার পোস্ট করছেন। এছাড়া এ সংক্রান্ত হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম গ্রুপের সন্ধান মেলে।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও তথ্যের ভিত্তিতে স্বপ্রণোদিতভাবে এ সংক্রান্ত একটি মামলা দায়েরের পর তদন্ত শুরু করে ডিএমপির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম(দক্ষিণ) বিভাগ। এরপর তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে গেলো সপ্তাহে বাগেরহাট, নারায়ণগঞ্জ এবং দিনাজপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ভুয়া জন্ম নিবন্ধন এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্ম নিবন্ধনকারী চক্রের ৫ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- দিনাজপুরের বিরল পৌরসভার কম্পিউটার অপারেটর আব্দুর রশিদ, একই জেলার বিরলের ১০ নং রাণীপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের কম্পিউটার অপারেটর সোহেল চন্দ্র এবং তাদের সহযোগী মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া সরবরাহকারী শহিদুল ইসলাম মুন্না ও রাসেল খান। এ দুজন বাগেরহাট এবং নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা।
প্রতারক চক্রে যেভাবে জড়াল তারা
দিনাজপুর বিরলের শহিদুল ইসলাম মুন্না ও বাগেরহাটের রাসেল খান পড়াশুনার পাশাপাশি এই জালিয়াতিতে জড়িত। আর নারায়ণগঞ্জের রাসেল খান স্থানীয় একটি গার্মেন্টসের কাজে নিয়োজিত। অনলাইনে যোগাযোগ থেকে মোস্তাফিজুর রহমানের মাধ্যমে গ্রেপ্তার আব্দুর রশিদ ও সোহেল চন্দ্রের সঙ্গে পরিচয় হয় বাকি দুজনের। হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম গ্রুপে তাদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ হতো। ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি, বিশেষত রোহিঙ্গা জনগণের জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরিতে ব্যাপক লাভ দেখে তারা কাজে জড়িত হয়ে পড়ে। বহু রোহিঙ্গা জনগণ গ্রেপ্তারদের মাধ্যমে ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করে নিয়েছে। এ কাজে তারা সবাই আনুপাতিক হারে লাভ পেত। শুধু বিরল নয়, কুষ্টিয়া, বি-বাড়িয়াসহ দেশের অন্যান্য পৌরসভা ও ইউনিয়নে তাদের লোকজন রয়েছে। যারা ৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে হাজার হাজার মানুষের ভুয়া জন্ম নিবন্ধন করে দিয়েছে।
ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের উপ-কমিশনার(ডিসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এ সব জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করে অনেক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী অবৈধভাবে দেশের নাগরিক হয়ে যাচ্ছে, অনেক অপরাধী অপরাধ করে নিজ এলাকার বাইরে আরেকটি জন্ম নিবন্ধন করে তাদের পরিচয় গোপন করে নতুন করে অপরাধ শুরু করছে। অনেকে ভুয়া পাসপোর্ট তৈরিতে এই জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করেছে। যেন ব্যাংক লোন ও অনলাইন অপরাধে পুলিশকে ফাঁকি দিতে পারে। এছাড়া ভুয়া জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করছে। এ সব জন্ম নিবন্ধন দিয়ে অনেক দাগি/কুখ্যাত খুনি, ডাকাত এবং রাষ্ট্ররিরোধী অপরাধী চক্র নিজেদের পরিচয় গোপন করে ফেলতে সক্ষম হয় অথবা নতুন পরিচয়ে আবার অপরাধ শুরু করতে পারছে।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার(ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, রোহিঙ্গারা ভুয়া জন্ম নিবন্ধন, ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র এমনকি পাসপোর্টও বানাচ্ছেন। এতে সহযোগিতা করছেন দেশের বিভিন্ন এলাকার মেয়র, নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান-সচিবের কম্পিউটার অপারেটর। এর ফলে রোহিঙ্গারা খুব সহজেই জন্ম নিবন্ধন পেয়ে যাচ্ছে। জন্ম নিবন্ধন করার সময় স্থায়ী ঠিকানা দেয় যে এলাকা থেকে নিবন্ধন করা হচ্ছে আর বর্তমান ঠিকানা দেয় কক্সবাজার। বর্তমান ঠিকানা কক্সবাজার দিয়ে মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদের কম্পিউটার অপারেটররা শত শত জন্ম নিবন্ধন করে দিচ্ছে রোহিঙ্গাদের। জন্ম নিবন্ধনের পরে সহজেই রোহিঙ্গারা পাসপোর্ট বানাচ্ছে। পাসপোর্ট বানিয়ে কেউ বিদেশে চলে যাচ্ছে আবার জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকের ঠিকানা দিয়ে দেশের মধ্যে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এ চক্রের আরও ২০-২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তারা কীভাবে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট তৈরি করে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশ দিন দিন ব্যাপকভাবে ডিজিটালাইজড হচ্ছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে প্রতিনিয়ত তথ্য, উপাত্ত এবং অর্থ লেনদেন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে জন্ম নিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র প্রত্যেকের জন্য আবশ্যক হচ্ছে। তাই ব্যক্তিগত তথ্য, উপাত্ত এবং অর্থের লেনদেনে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা এবং সুরক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সাধারণ মানুষের ডিজিটাল লিটারেসি এবং সাইবার সিকিউরিটি অ্যাওয়ারনেস গুরুত্বপূর্ণ।
পুলিশের ছয় সুপারিশ
ছয়টি করণীয় ও সুপারিশ তুলে ধরে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার(ডিবি) হারুন অর রশীদ বলেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো ব্যবহারকারী সবাই তাদের আইডি পাসওয়ার্ড অধস্তনদের কাছে দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। শক্তিশালী প্রযুক্তি দল এবং ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সার্ভারসহ গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোতে দুর্বলতা থাকলে দ্রুত সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। যথাযথ কর্তৃপক্ষ ব্যতীত ভুয়া জন্ম নিবন্ধন করা থেকে বিরত থাকা। নিবন্ধনকারী কর্তৃপক্ষের মনিটরিং জোরদার করা এবং এ রূপ কোন চক্রের সন্ধান পেলে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবগত করা।
চেয়ারম্যান মেয়রদের বিরুদ্ধে আগে ব্যবস্থা নিতে হবে
লুঙ্গি খুলে গেলে অসম্মানের দায় নিজেকেই নিতে হবে উল্লেখ করে তথ্য প্রযুক্তিবিদ তানভীর হাসান জোহা ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত বছর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সার্ভার হ্যাক করে জন্ম নিবন্ধন সনদ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছিল। রেজিস্টার জেনারেলের কার্যালয়ের সার্ভার হ্যাক করে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ অন্তত ৮টি জেলার অসংখ্য জাল জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করা হয়েছিল তখন। পরবর্তীতে আসলে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল? আমরা জানি না।
ঘরের শত্রু বিভীষণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের নাগরিক না হওয়া সত্ত্বেও এনআইডি, পাসপোর্ট তৈরির মূলে হচ্ছে ভুয়া জন্ম সনদ। যে সকল জনপ্রতিনিধিদের ওটিপি চুরি হয়েছে বা তাদের পিন পাসওয়ার্ড ব্যবহারে ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি বা জালিয়াতি করা হয়েছে তাদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক। জালিয়াতি যারাই করুন তাদের দায়টা বেশি। কেন ওটিপি ফাঁস হয় বা বেআইনি পন্থায় সরবরাহ করে। এই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, আইসিটি বিভাগ যে ওয়েবপোর্টাল দিল, সেখানে যারা কাজ করেন তাদের কোনো প্রকার ডিজিটাল সিকিউরিটি লিটারেসি শিক্ষা না দিয়ে হস্তান্তর করাটাও দুর্বলতা ও সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল না। কারণ, সাইবার সিকিউরিটি ও ডিজিটাল মাধ্যম সম্পর্কে তাদের লিটারেসি না জানা থাকলে কীভাবে হ্যান্ডেল করবে? শুধু সিস্টেম বানালেই বা চালু করলেই হবে না, সিকিউরিটি ও নজরদারি গুরুত্বপূর্ণ।
কিছুই জানেন না বিরল পৌর মেয়র
দিনাজপুর বিরল পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব সবুজার সিদ্দিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার অফিসের একটি ছেলেকে সন্দেহজনকভাবে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে ডিবি পুলিশ। কিন্তু কেন, কি কারণে, কি অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা আমাকে জানানো হয়নি। যদি সে কোনো অপরাধ করে থাকে তাহলে আমাকে জানানো হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার স্বাক্ষরে, পিন কোড ওটিপি ব্যবহারে আট শতাধিক ভুয়া জন্মসনদ সরবরাহ করা হয়েছে— এমন তথ্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তো কিছু জানি না। আমাকে ডিবি কিছু বলেওনি, ডাকেওনি।
রাণীপুকুর চেয়ারম্যান জন্মসনদ জালিয়াতির দায় দিচ্ছেন সেক্রেটারিকে
বিরলের রাণীপুকুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল্লামা আজাদ ইকবাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, সোহেল চন্দ্র জালিয়াতি করে আমার নাম পর্যন্ত বদলে ফেলেছিল। ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। তথ্য ও আইন মোতাবেক ওর শাস্তিতে আমার কোনো আপত্তি নেই।
তবে চেয়ারম্যানের অজ্ঞাতসারে কোনোভাবে জন্মসনদ জালিয়াতির সুযোগ আছে কি না— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি এসব জানি না। আমি তো কম্পিউটারও চালাতে পারি না।
জন্ম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারির মোবাইলে ওটিপি যায়, পিন কোড দিতে হয়, এরপরও প্রিন্ট কপিতে স্বাক্ষরও করতে হয়; এতো এতো জালিয়াতি তো কম্পিউটার অপারেটর একা করতে পারে না— এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এসব আমি বুঝি না। সব কিছু ইউপি সেক্রেটারি জানে।
সুত্র : ঢাকাপোষ্ট
পাঠকের মতামত