মেডিকেল ভিসায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ৪ যুবককে লিবিয়ায় পাঠিয়েছিল স্থানীয় একজন। পরে তাদের মিসরের একটি দালাল চক্রের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এখন ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ওই যুবকদের স্বজনের কাছে পাঠানো হচ্ছে তাদের নির্যাতনের ভিডিও।
এ অভিযোগে বুধবার চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইশতিয়াক ইমনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্বজনরা।
ওই যুবকরা হলেন– রায়পুর ইউনিয়নের গহিরা গ্রামের নুরুল আলমের ছেলে মোহাম্মদ ওয়াসিম (২২), মোজাহের মিয়ার ছেলে বোরহান উদ্দিন (১৮), আব্দুর রহিমের ছেলে জাবেদুর রহিম ঝিনুক (১৯) ও জেবল হোসেনের ছেলে নাঈম উদ্দিন (১৮)। তারা সবাই একই এলাকার বাসিন্দা।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, রায়পুর ইউনিয়নের মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে জহিরুল ইসলাম ওই যুবকদের লিবিয়ায় পাঠাতে ১৮ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। গত মাসের ১৯ তারিখ তারা দেশ ছাড়ে। দুবাই ও মিসর হয়ে ১৫ দিন পর তারা লিবিয়ায় পৌঁছান। সেখানে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার মিজানুর রহমানের তত্ত্বাবধানে ছিলেন তারা। কিছুদিন পর মিজান তাদের মেডিকেল ভিসায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে নিয়ে গিয়ে মিসরের একটি দালাল চক্রের কাছে বিক্রি করে দেন। তাদের পাসপোর্ট ও ভিসাও ছিনিয়ে নেন। এর পর ওই যুবকদের হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করে সেই ভিডিও স্বজনের মোবাইল ফোনে পাঠিয়ে জনপ্রতি ১০ লাখ টাকা করে মুক্তিপণ চাচ্ছে চক্রটি।
বোরহান উদ্দিনের বড় ভাই শাহাবুদ্দিন বলেন, প্রতিদিন নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ পাঠাচ্ছে। বুধবার ৩টার মধ্যে প্রতিজনের জন্য ১ লাখ টাকা করে পাঠাতে বলেছে। বাকি টাকা কয়েক দিনের মধ্যে পাঠাতে হবে। না হলে একজন একজন করে হত্যা করবে বলেছে। আমরা খুবই অসহায়, এত টাকা কীভাবে জোগাড় করব!
জাবেদুর রহিমের বাবা আব্দুর রহিম বলেন, জহিরুলকে ধারদেনা ও স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করে সাড়ে ৪ লাখ টাকা দিয়ে লিবিয়ায় পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে ছেলে এত বড় বিপদে পড়বে কল্পনাও করিনি। এখন প্রতিদিন মুক্তিপণের জন্য নির্যাতন করছে। তাদের উদ্ধারে সরকার ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
আনোয়ারার ইউএনও ইশতিয়াক ইমন সমকালকে বলেন, রায়পুর ইউনিয়নের চার যুবককে লিবিয়ায় অপহরণের ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
পাঠকের মতামত