কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরে ৬৪ হাজার ৭৭০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে আরও একটি জাহাজ ভিড়েছে। ইন্দোনেশিয়ার তারাহান বন্দর থেকে আসা বিশাল আকৃতির জাহাজটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে ভেড়ার পরপরই তা থেকে কয়লা খালাসের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এ নিয়ে গত দেড় মাসে প্রায় আড়াই লাখ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ৪টি জাহাজ মাতারবাড়িতে ভিড়ছে। কয়লাবাহী চতুর্থ জাহাজ নোঙর করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন আতাউল হাকিম সিদ্দিকী।
তিনি জানান, বুধবার (১৪ জুন) সকাল ৯টায় গভীর সমুদ্র থেকে পানামার পতাকাবাহী এম ভি জিসিএল পারাডিপ নামের জাহাজটিকে পাইলটিং করে জেটিতে নিয়ে আসেন চট্টগ্রাম বন্দরের পাইলটরা। এরপর সতর্কতার সঙ্গে জাহাজটিকে জেটিতে নোঙর করানো হয়। জাহাজটি লম্বায় ২২৯ দশমিক ৯৯ মিটার ও সাড়ে ১২ মিটার ড্রাপ্টের।
কয়েক দিন আগে ইন্দোনেশিয়ার তারাহান বন্দর থেকে ৬৪ হাজার ৭৭০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে মাতারবাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছিল জাহাজটি। মাতারবাড়ি তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর পর প্রথম ৬৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ২৫ এপ্রিল জেটিতে ভিড়ে এমভি অউসো মারো। এছাড়া ১৯ মে ৬৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ২২৯ মিটার লম্বা ও ১২ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের একটি জাহাজ বন্দরে নোঙর করে। এবার আসা জাহাজটি এ পর্যন্ত আসা জাহাজের চেয়ে সবচেয়ে বড়। আর অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে এসব জাহাজ থেকে কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে মাত্র চার দিনে স¤পূর্ণ কয়লা খালাস করা যায়।
তিনি বলেন, জাপানের সহযোগিতায় মহেশখালীর মাতারবাড়িতে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাস¤পন্ন এই বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। বর্তমানে এর পরীক্ষামূলক উৎপাদন চলছে। আগামী দুয়েক মাসের মধ্যে এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। আর এই বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ঘিরেই মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে তৈরি হয়েছে দেশের সবচেয়ে গভীর কৃত্রিম নৌপথ। একের পর বড় জাহাজ ভেড়ানোর মাধ্যমে এই নৌপথের সুবিধা পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। নতুন উৎপাদনে যাওয়া মাতারবাড়ি তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে দুটি জেটির একটিতে কয়লা খালাস করা হয়। ৩০০ মিটার লম্বা এ জেটিতেই বড় জাহাজগুলো ভিড়ছে। তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের অন্য জেটিটি ১১০ মিটারের, এ তেল খালাসের জন্য এই জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। বন্দর হিসেবে গড়ে ওঠার আগে ১১৫টি জাহাজ ভিড়েছে মাতারবাড়িতে