বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. জসিম উদ্দিনের মাধ্যমে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বানিয়েছিলেন রোহিঙ্গা আবু সুফিয়ান। তবে সেই এনআইডি কাজ না করায় প্রতারিত হয়েছেন মর্মে অভিযোগ করতে ইউএনওর কার্যালয়ে এসে আটক হয়েছেন তিনি।
রোববার (২১ আগস্ট) বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে আবু সুফিয়ান নিজেকে রোহিঙ্গা দাবি করলে ইউএনও তাকে পুলিশে দেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আবু সুফিয়ান ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের কাইচতলি এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন। তার ছেলেমেয়েকেও ওই এলাকায় থেকেই বিয়ে করিয়েছেন। সেই সূত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মো. জসিম উদ্দিন মেম্বারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়।
বাংলাদেশের নাগরিক না হওয়ায় দীর্ঘদিন বসবাস করেও সরকারি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছিলেন না তিনি। ফলে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেতে জাতীয় পরিচয়পত্র বানাতে তিনি স্থানীয় সুয়ালক ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. জসিম উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেসময় জসিম মেম্বার তাকে দুইটি আইডি কার্ডের জন্য এক লাখ টাকা দাবি করেন। পরে দুইটি এনআইডি কার্ডের জন্য ৮০ হাজার টাকায় তাকে রাজি করান।
টাকা দেওয়ার ৭-৮ মাস পরে দুইটি আইডি কার্ড বুঝিয়ে দেন মেম্বার। ওই আইডি কার্ড দিয়ে মোবাইলের সিম কিনতে গেলে দোকানি ফিঙ্গার প্রিন্ট মিলছে না বলে জানান। তখন সঙ্গে থাকা মেম্বার জসিম উদ্দিন বলেন, কিছুদিনের মধ্যে স্মার্ট কার্ড এনে দিলে সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু এ কথা বলার এক বছর অতিক্রম হলেও এখনো তিনি সুফিয়ানকে স্মার্টকার্ড দিতে পারেননি। তাই ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলে তার বিচারের দাবি জানিয়ে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন আবু সুফিয়ান।
বান্দরবান সদর উপজেলার ইউএনও সাজিয়া আফরোজ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জাগো নিউজকে বলেন, আবু সুফিয়ান নামে এক ব্যক্তি নিজেকে মিয়ানমারের নাগরিক (রোহিঙ্গা) দাবি করে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে দুটি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার অভিযোগ করেন সুয়ালক ইউপি সদস্য মো. জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে। নিজে ভিনদেশি স্বীকার করায় তাকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে এবং আনিত অভিযোগের ভিত্তিতে ইউপি সদস্য মো. জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।