বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির গোলাগুলি বন্ধ হয়েছে। এতে ঘুমধুমের তুমব্রু এলাকার বাসিন্দাদের আতঙ্ক কমেছে। রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। তবে দুপুরে একটি হেলিকপ্টারকে সীমান্তের ওপারে টহল দিতে দেখেছেন স্থানীয়রা।
এর আগে মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) এসে পড়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের তুমব্রু এলাকায়। এতে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ। তিনি বলেন, ‘প্রায় ১০-১২ দিন ধরে সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি চলছিল। প্রায় প্রতিদিন গোলাগুলির শব্দ শোনা গেলেও রবিবার সকাল থেকে শোনা যায়নি। তবে দুপুরে একটি হেলিকপ্টারকে টহল দিতে দেখেছি আমরা। বর্তমানে ঘুমধুম এলাকার বাসিন্দাদের আতঙ্ক কেটে গেছে।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এতদিন তারা আতঙ্কে ছিলেন। রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। এজন্য তাদের আতঙ্ক কেটে গেছে। এখন পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত বলে জানান স্থানীয়রা।
ঘুমধুম এলাকার বাসিন্দা আবদুল হক ও নুরুল ইসলাম জানান, কয়েকদিন ধরে হেলিকপ্টার থেকে গোলাগুলির শব্দে তাদের ভয়ে দিনরাত কেটেছে। সীমান্তের এপারে মর্টারশেল পড়ায় আরও বেশি আতঙ্কগ্রস্ত ছিলেন তারা। এখন আতঙ্ক কেটে গেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হচ্ছে তাদের।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, ‘বিজিবি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। এপারে বিজিবি সতর্ক অবস্থায় আছে। জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের লোকজন স্থানীয়দের আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য বলেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলেও জানিয়েছেন তারা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের রেজু আমতলী বিজিবি বিওপির আওতাধীন সীমান্ত পিলার ৪০-৪১-এর মাঝামাঝি স্থানে মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে সেনাবাহিনীর দুটি যুদ্ধবিমান এবং দুটি ফাইটিং হেলিকপ্টার টহল দেয়। সে সময় তাদের যুদ্ধবিমান থেকে প্রায় ৮-১০টি গোলা ছোড়া হয়। এ ছাড়া হেলিকপ্টার থেকেও আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫টি গুলি করতে দেখা যায়। যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা সীমান্ত পিলার ৪০ বরাবর আনুমানিক ১২০ মিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়ে।
এর আগে রবিবার (২৮ আগস্ট) বেলা ৩টার দিকে মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা দুটি মর্টারশেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় ঘুমধুমের তমব্রু উত্তর মসজিদের কাছে পড়ে।