রোহিঙ্গা সংকট কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি সাবা কোরোসি। জাতিসংঘের সদর দপ্তরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শনিবার (১ অক্টোবর) জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকে জাতিসংঘের বিভিন্ন ফোরামে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ, তাৎপর্যপূর্ণ অবদান ও ফলপ্রসূ নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন সাবা কোরোসি।
বৈঠকের শুরুতে ‘এসডিজি বাস্তবায়ন রিভিউ’ বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের ইভেন্ট আয়োজন এবং সাউথ-সাউথ কো-অপারেশনের আওতাধীন উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থ, পররাষ্ট্র ও উন্নয়নমন্ত্রীদের সমন্বয়ে একটি ফোরাম প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব সাধারণ পরিষদের সভাপতির কাছে পেশ করেন এ কে আব্দুল মোমেন।
এ সময় এসডিজি বাস্তবায়ন, বিশেষ করে করোনা মহামারির মধ্যে এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তহবিল ঘাটতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রস্তাবিত উচ্চ পর্যায়ের ইভেন্টটি আয়োজন করা হলে তা এসডিজির বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করা এবং তহবিল ঘাটতি মোকাবিলায় ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সাউথ-সাউথ কো-অপারেশনের (এসএসসি) আওতায় মন্ত্রী পর্যায়ের ফোরাম এসএসসির বিষয়ভিত্তিক আলোচনাকে আরও এগিয়ে নিতে চমৎকার প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সাধারণ পরিষদের সভাপতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রস্তাব দুটিকে স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে করোনা মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশে জিডিপির উচ্চ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে বলে দাবি করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া, তিনি কোভিড মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। সাধারণ পরিষদের সভাপতি জিডিপির প্রবৃদ্ধি, কোভিড মোকাবিলাসহ বাংলাদেশের অসামান্য অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে আলোচনাকালে রোহিঙ্গা শিশুদের নিজ ভাষায় শিক্ষাদান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোভিড ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার যেসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেছে তা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এখন পর্যন্ত কোনো রোহিঙ্গা নিজ ভূমি মিয়ানমারে ফেরত যায়নি বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। সাধারণ পরিষদের সভাপতি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা দেওয়ায় বাংলাদেশের ভূমিকার উচ্চ প্রশংসা করেন। এ সংকট কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা অর্থাৎ এর প্রশমন ও অভিযোজনের জন্য আরও তহবিলের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন এ কে আব্দুল মোমেন। এ ক্ষেত্রে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি আছে, তা শিগগির বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সাধারণ পরিষদের সভাপতি বিষয়টির প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন।
সুবিধাজনক যেকোনো সময়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি সাবা কোরোসিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এ কে আব্দুল মোমেন