দুজনের একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কক্সবাজারের রামুর চেইন্দার হোপ ফাউন্ডেশনের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ করা হয়েছে। গত ১৫ জানুয়ারি দুদকে এ অভিযোগ করেন ওবাইদুল্লাহ আল মামুন নামের এক যুবক।
অভিযুক্তরা হলেন, হোপ ফাউন্ডেশনের চিফ একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসার মো: আরিফুর রহমান ও সিনিয়র একাউন্টস ফিন্যান্স অফিসার মো: শাহনেওয়াজ কবীর।
এই দুজনের একটি সিন্ডিকেট হোপ ফাউন্ডেশন থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটিকে পথে বসিয়েছে বলে অভিযোগে দাবি করেন ওই যুবক।
অভিযোগে বলা হয়, হোপ ফাউন্ডেশন দীর্ঘ বছর ধরে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে কাজ করে আসছে। ফলে সরকারি ও বিভিন্ন এনজিও সংস্থার কোটি কোটি টাকার নানা প্রজেক্ট তাদের দিয়ে থাকে। কিন্তু সম্প্রতি হোপ ফাউন্ডেশন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সেইসব এনজিও সংস্থাগুলো। ফলে ফান্ড ক্রাইসিসে রয়েছে হোপ ফাউন্ডেশন। ইতিমধ্যে দুই শতাধিক কর্মচারী-কর্মকর্তা চাকরি হারানোর পর আরও শতাধিক কর্মী চাকরি হারানোর শঙ্কায় রয়েছে। এইসবের নেপথ্যে রয়েছে হিসাব শাখার ওই দুই কর্মকর্তা।
অভিযোগে আরও বলা হয়, অ্যাকাউন্টের দায়িত্বে থাকা আরিফুর রহমান ও শাহনেওয়াজ কবীরের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। এই সিন্ডিকেট বিভিন্নভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারমধ্যে- ব্লু-মার্ট নামের একটি ভুয়া সাপ্লাইয়ার কোম্পানি তৈরি করে বিগত পাঁচ বছর ধরে বিভিন্ন আসবাবপত্র সাপ্লাই দিয়ে যাচ্ছে। ভুয়া ভাউচার, চেকে ট্র্যাজারার আবুল কালামের ভুয়া সিগনেচার তৈরি করে কর্মীদের ভুয়া খরচের বিল, হাসপাতালের ভবন তৈরিতে ইকুয়েপমেন্ট ক্রয় সব কিছুতে অনিয়ম করে হাতানো হচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
এছাড়াও অনৈতিক কাজ করে পার পেতে আভ্যন্তরীণ অডিট সৃষ্টি করে এবং কাগজ পত্র গায়েব করার অভিযোগও রয়েছে। তাদের এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বলায় মানসিক চাপ সৃষ্টি করে চাকরি হতে অব্যাহতি নিতে বাধ্য করেছে অনেককে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও মহেশখালী উপজেলার ইউএনও হোপ ফাউন্ডেশনের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মহেশখালীর বিভিন্ন এলাকায় প্রজেক্টে ব্যয়কৃত অর্থের কোন সঠিক প্রমাণ না পাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করে চিঠি ইস্যু করেছেন বলেও দাবি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে হোপ ফাউন্ডেশনের অ্যাকাউন্টের দায়িত্বে থাকা অভিযুক্ত আরিফুর রহমান ও শাহনেওয়াজ কবীর এইসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যে ব্যক্তি আমাদের নামে অভিযোগ দিয়েছে তাকে আমরা চিনিও না। হয়ত কোন কারণে সংক্ষুব্ধ হয়ে তিনি আমাদের বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ করছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে হোপ ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর কে এম জাহিদুজ্জামান তার প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের কোন অসংগতি নেই বলে দাবি করে বলেন, হয়ত কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলে ব্যর্থ হয়ে এইসব ষড়যন্ত্র করছেন।
দুদকের সমন্বিত কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক তুষার আহমেদ জানান, কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে হেড অফিসের সাথে সমন্বয় করা হয়। পরে তাদের নির্দেশক্রমে তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেবে দুদক।
সুত্র: বিডিটোয়েন্টিফোর লাইভ ডটকম