নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় দেশের বেসরকারি একটি টেলিভিশনের জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসার ১৮৫৯তম পর্বে হজরত ঈসা (আ.)-এর আবার পৃথিবীতে আগমনের বিষয়ে ঢাকার লালবাগ রোড থেকে চিঠিতে জানতে চেয়েছেন মো. জাহিদুল হাসান। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন: আমি শুনেছি যে হজরত ঈসা (আ.) আবার পৃথিবীতে আসবেন এবং তিনি মৃত্যুবরণ করার পর তাঁকে রাসূল (সা.)-এর পাশে দাফন করা হবে। এ কথাটি কতটুকু সত্য?
উত্তর: হ্যাঁ, এ কথা সত্য যে ঈসাকে (আ.) আল্লাহ সুবানাহুতায়ালা পৃথিবীতে কেয়ামতের আগে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ করে দেবেন এবং তিনি প্রত্যাবর্তন করবেন। তার পর আবার তিনি ইসলাম অনুযায়ী, মুহাম্মদ (সা.)-এর শরিয়ত অনুযায়ী সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবেন। অর্থাৎ ঈসা (আ.) যে শরিয়ত অনুসরণ করেছিলেন সেটি নয়, মুহাম্মদ (সা.) যে শরিয়তের প্রবর্তন করেছেন অথবা ইসলামের যে দিকনির্দেশনা আছে, সে দিকনির্দেশনা অনুযায়ী তিনি মানুষের মধ্যে বিচার-ফয়সালা করবেন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবেন।
ঈসা (আ.) সুশাসন দিয়ে গোটা পৃথিবীকে ভরপুর করে দেবেন। ক্রুসেড বা আজকের এই ক্রসকে তিনি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে দেবেন এবং খ্রিস্টান ধর্মের মধ্যে আজ শূকরের যেই সম্মান ও মর্যাদার বিষয় আলোচনা করা হচ্ছে, মদের যেই বরকতের কথা উল্লেখ করা হচ্ছে, এগুলোকে তিনি আবার সম্পূর্ণরূপে গর্হিত বলে প্রমাণ করে দেবেন।
এভাবে ঈসা (আ.) পৃথিবীতে আবার আগমন করে একটি সময় কাটাবেন। তার পর তাঁর মৃত্যু হবে। কিন্তু ঈসাকে (আ.) যে দাফন করা হবে, এ দাফন কি আদৌ নবী (সা.)-এর সঙ্গে তাঁর কবর যেখানে আছে সেখানে করা হবে, নাকি অন্য কোথাও তাঁকে দাফন করা হবে, এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো সহিহ হাদিস পাওয়া যায়নি। যে হাদিসটি উল্লেখ করা হয়ে থাকে, এটিকে ইসরায়েলি বর্ণনা বলা হয় এবং আমার গবেষণা বা পড়া অনুযায়ী ইসরায়েলি বর্ণনা হওয়ারই কাছাকাছি মনে হয়েছে।
বনি ইসরায়েলে যেসব রেওয়াত পাওয়া যায়, সেগুলোর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। তবে তাঁর আগমনের বিষয়টি সহিহ সনদে সাব্যস্ত হয়েছে এবং কেয়ামতের উল্লেখযোগ্য যে বড় আলামতগুলো রয়েছে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে ঈসা (আ.)-এর অবতীর্ণ হওয়াটা। তিনি বর্তমান সিরিয়ার বাব-এ-লুদে অবতরণ করবেন। এই মর্মে সহিহ হাদিস সাব্যস্ত হয়েছে। তবে সিরিয়া থেকে তিনি আদৌ মদিনায় আসবেন কি না বা মদিনায় তাঁকে দাফন করা হবে কি না, এই মর্মে যে বর্ণনাগুলোর উল্লেখ করা হয়ে থাকে, সেগুলো সহিহ বা বিশুদ্ধ কোনো বর্ণনা নয়। তাই এ বিষয়টি বিতর্কিত হওয়ার কারণে গ্রহণযোগ্য হবে না।
বিডি২৪লাইভ/
পাঠকের মতামত