যমুনা::
আমরা অনেক ইনস্টিটিউট করি, দেশে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। কিন্তু কোয়ালিটি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউট একটিও নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
সকালে বিপিএমআই (বাংলাদেশ পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট) দ্বিতীয় বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। ৫০ দিনব্যাপী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নেবেন ঢাকা ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ৫৭ জন প্রকৌশলী।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, কার্যকর কোর্স যদি করতে না পারি, তাহলে এটির (বিপিএমআই) প্রয়োজন নেই। কোর্সের মডেল হতে হবে আধুনিক এবং বিশ্বমানের।
তিনি বলেন, আমরা অনলাইনে গেলে অনেক সমস্যা কমে যাবে। আমার নিজেরও অভিজ্ঞতা রয়েছে, পিএস’র রুমে গিয়ে বসে থাকতাম। পরে পিএস বলতো স্যারতো চলে গেছেন, আজকে দেখা পাবেন না, অন্যদিন আসতে হবে। ফোন দিলে বলেন সাহেবতো নামাজে রয়েছে পরে ফোন দিয়েন। সরকারি মানে ভালো সর্ভিস না, প্রাইভেট মানে ভালো সার্ভিস এই বক্সের মধ্যে ঢুকলে চলবে না।
আমরা যখনই চাকরিতে ঢুকি এই বক্সের মধ্যে ঢুকে যাই। ইঞ্জিনিয়ারদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই ডেসকো সার্ভিস ওরিয়েন্টেড। সেবাটা সবচেয়ে বড় জিনিস। ট্রেনিংয়ের মধ্যে সবেচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে সেবাকে। ভুল হবে আবার উঠে দাঁড়াবেন। ভুল না করলে কিন্তু শিখতে পারবেন না। সামনের বাংলাদেশ একটি চমৎকার বাংলাদেশের দিকে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট মিটার স্থাপনের কাজ দেরি করছেন, অনেক আগে শুরু করেছি কিন্তু এখন ৫০ শতাংশ কভার করতে পারিনি। স্মার্ট মিটার থাকলে আজকে বিল নিয়ে এই সমস্যা হতো না। এক সময় ডিস্ট্রিবিউশনে আর বিলের কাগজ আসবে না। অফিস ম্যানেজমেন্ট ভবিষ্যতে অনলাইন হয়ে যাবে। আপনারা ধীরে যাচ্ছেন বিরক্ত হচ্ছেন। কাজ কিন্তু থেমে থাকবে না।
প্রশিক্ষণার্থী ৫৭ জনের মধ্যে মাত্র ৩ জন মহিলা, নারী পুরুষ সমান সমান নয় কেনো। বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য লক্ষ্য রাখতে হবে, মেয়েদের সুযোগ বাড়ানোর তাগিদ দেন প্রতিমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন, বিশাল পরিবর্তন হচ্ছে। আমরা এক সময় গাদাগাদি করে সভা করতাম, বক্তব্য শুনে হাততালি দিতাম। টেকনোলজির মাধ্যমে যে পরিবর্তন এসেছে। আজকে যারা ডেসকোতে যাত্রা শুরু করছেন তাদের পুর্বসূরিরা ভালো একটি স্ট্রাকচার করে রেখেছেন। এটি আপনারা ধরে রাখবেন নাকি নষ্ট করবেন? নিশ্চয় আরও ভালো করবেন বলে আশা করি।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. সুলতান আহমেদ বলেন, ট্রেনিংটাকে সিরিয়াস নিলে অনেক কিছু বুঝতে পারবে। একাডেমিক শিক্ষা ও ট্রেনিংয়ের মধ্যে বিশাল ফারাক রয়েছে। ট্রেনিংয়ে যা শিখছ সেটি তোমাকে প্রয়োগ করতে হবে। কোনো প্রশ্ন থাকলে ক্লাসে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবে। এখানে তোমাকে বিজনেস ল্যাঙ্গুয়েজ শিখতে হবে। সর্বোত্তম সেবা প্রদান করা তোমাদের নৈতিক দায়িত্ব। মানুষের সঙ্গে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত দেখা হবে। সাধারণ মানুষ বারবার আসতে পারে। তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে।
বিপিএমআই’র প্রকল্প পরিচালক ও রেক্টর মাহবুব-উল আলম বলেন, এখানে ইঞ্জিনিয়ারিং কিছু শেখানো হবে না। এখানে ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবান্বিত ইতিহাস শেখানো হবে। দেশের আইন, সংবিধান, পররাষ্ট্রনীতি ও বিদ্যুৎ খাতের সার্বিক পরিকল্পনা ও অগ্রগতি বিষয়ে অবগত করা হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ডেসকো বোর্ডের চেয়ারম্যান মাকছুদা খাতুন, আমাদের মনে রাখতে হবে জনগণ সর্বময় ক্ষমতার মালিক। একজন বস আমার অফিসে গেলে যেভাবে সম্মান ও মর্যাদা দেই একজন লুঙ্গিপরা নাগরিককেও সেভাবে সম্মান দেখাতে হবে। বিদ্যুৎ বিল নিয়ে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, আমরা তদন্ত করতে গিয়ে দেখেছি আচরণগত কারণেই এই ক্ষোভটা বেশি।
ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আমির আলী বলেন, শিক্ষাজীবনের জ্ঞান এবং কর্মজীবনের কারিগরি বিষয়ে বিস্তর ফারাক রয়েছে। যে কারণে চাকরি জীবনের শুরুতে এই বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ খুবই জরুরি। মনে রাখতে হবে গ্রাহক সেবা এই কর্মকর্তাদের মূল লক্ষ্য হবে।
ভার্চুয়াল এই সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিপিএমআই’র এমডিএস গোলাম রব্বানি। এতে বিভিন্ন কোম্পানি ও দপ্তর পরিদপ্তরের কর্মকর্তারা অংশ নেন।