অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের দায়ে তিন বছরের সাজাপ্রাপ্ত কক্সবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আবদুর রহমান বদিকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাঁকে নিম্ন আদালতের দেওয়া ১০ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ স্থগিত করা হয়েছে।
এ আদেশের ফলে আবদুর রহমান বদির মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী।
আজ বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি রুহুল কুদ্দুসের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আজ বদির পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন মাহাবুবে আলী ও নাসরিন সিদ্দিকা লিনা। আর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার নিম্ন আদালতের সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আবদুর রহমান বদি।
এ বিষয়ে মাহবুবে আলী সাংবাদিকদের বলেন, বদি একজন এমপি। তিনি পালিয়ে যাবেন না। বিচার চলাকালে মামলার নির্ধারিত প্রতিটি দিনে তিনি আদালতে হাজির হয়েছিলেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে আদালত জামিন মঞ্জুর করেন।
তবে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জামিনের বিরোধিতা করে আদালতকে জানান, যেহেতু বদি তিন বছরের সাজাপ্রাপ্ত, তাই সংবিধান অনুযায়ী এ মুহূর্তে তিনি সংসদ সদস্য নন। তাঁকে জামিন দেওয়া হলে বিচারের ওপর প্রভাব পড়বে।
গত ২ নভেম্বর আবদুর রহমান বদিকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, আবদুর রহমান বদি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ১০ কোটি ৮৬ লাখ ৮১ হাজার ৬৬৯ টাকা মূল্যমানের সম্পদ গোপন করে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।
এ ছাড়া অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের বৈধতা দেখানোর জন্য কম মূল্যে সম্পদ ক্রয় দেখিয়ে এক কোটি ৯৮ লাখ তিন হাজার ৩৭৫ টাকা বেশি মূল্যে বিক্রি দেখিয়েছেন।
এসব অভিযোগে দুদকের উপপরিচালক মো. আবদুস সোবহান রমনা থানায় ২০১৪ সালের ২১ আগস্ট মামলা করেন।
এ ঘটনায় গত বছরের ৭ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মঞ্জিল মোর্শেদ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে বদির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে ছয় কোটি ৩৩ লাখ ৯৪২ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে বলা হয়েছে, তিনি দুদকের কাছে তিন কোটি ৯৯ লাখ ৫৩ হাজার ২৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।
মামলাটিতে বদি ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। বিচারক জামিন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন।
পরবর্তী সময়ে ২০১৪ সালের ২৭ অক্টোবর এমপি বদিকে ছয় মাসের জামিন দেন বিচারপতি সৈয়দ এ বি মাহমুদুল হক ও বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ।