কক্সবাজারে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ২০২৪ উপলক্ষে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বক্তারা
কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর তাগিদ
নারী সহায়ক কর্মপরিবেশ তৈরি করে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এর পাশাপাশি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে নারীদের জন্যে পরিবার থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি স্তরে সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
গত মঙ্গলবার (১০ই ডিসেম্বর ২০২৪) তারিখে কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজে আয়োজিত এক বিতর্ক অনুষ্ঠানে বক্তাদের কাছ থেকে এই অভিমত উঠে আসে। নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ছাড়া বৈষম্যহীন সমাজ গঠন সম্ভব নয়’ শীর্ষক এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের ইমপ্রুভিং স্কিল্স অ্যান্ড ইকোনমিক অপরচুনিটিজ ফর কক্সবাজার (আইএসইসি-ISEC) প্রকল্প।
নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ১৬ দিনব্যাপী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতায় কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেনীর বিজ্ঞান বিভাগ বিপক্ষ দল হিসেবে জয় লাভ করে। তাদেরকে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট ও প্রশংসাপত্র প্রদান করা হয়।
বিতর্ক প্রতিযোগিতা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) রুবাইয়া আফরোজ।
কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ অহিদুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের আইএসইসি (ISEC) প্রকল্পের প্রজেক্ট লিড খন্দকার ফখরুল আলম, একই সংস্থার জেন্ডার জাস্টিস এন্ড ডাইভার্সিটি প্রকল্পের লিড মাহবুবুল আলম, ইউপিজিপি’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ কায়সার পারভেজ, কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান মোঃ শহিদুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের প্রধান মোঃ সাকিহ উদ্দিন কাদের, ব্র্যাকের কক্সবাজার জেলা সমন্বয়কারী অজিত দে ও ব্র্যাকের আইএসইসি প্রকল্পের কর্মকর্তাবৃন্দ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের আইএসইসি প্রকল্পের ডেপুটি প্রজেক্ট লিড মোঃ সেলিম উদ্দিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুবাইয়া আফরোজ বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি। তিনি নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে সমাজে সামগ্রিক বৈষম্য দূর করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
খন্দকার ফখরুল আলম বলেন, নারীর মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করা ও অর্থনৈতিক সুযোগ বৃদ্ধি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের অন্যতম চাবিকাঠি। আইএসইসি প্রকল্প কক্সবাজারের ৯টি উপজেলায় নারীদের জন্য এই সুযোগ তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে।
মাহবুবুল আলম বলেন, পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নারীদের মাত্র ৩ শতাংশ সম্পত্তিতে প্রবেশাধিকারের সুযোগ পান এবং কর্মক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহণ ৪০ শতাংশের নীচে। তিনি যোগ করেন, পরিবার থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি স্তরে সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। তাতে বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে দেশ অনেকটাই এগিয়ে যাবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ অহিদুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতার জন্য শুধু পুরুষ নয়, বরং অনেক ক্ষেত্রে নারীরাও দায়ী। তবে তাঁরা (নারীরা) যদি তাঁদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে এগিয়ে যান, তাহলে এই সহিংসতা কমিয়ে আনা সম্ভব।
বক্তারা নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সামাজিক ও পারিবারিক সচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠান শেষে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ অহিদুল ইসলাম নারীর প্রতি সহিংসতারোধে একযোগে শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান।
,
পাঠকের মতামত