উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সশস্ত্র রোহিঙ্গা ক্যাডারদের অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে স্থানীয় গ্রামবাসীরা। প্রতিনিয়ত মারধ ও হুমকি-ধমকিতে অনিশ্চত বসবাস সহ দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে শত শত স্থানীয় অধিবাসীর জীবন।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে রাজা পালং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের লম্বাশিয়া ক্যাম্পের অভ্যন্তরে অসংখ্য স্থানীয় পরিবার রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ রোহিঙ্গাদের স্থান দিতে গিয়ে চলাফেরায় প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছেন তারা। প্রতিদিন নানা সমস্যার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের নানান অপরাধ কর্মকাণ্ডে তারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন, কাটাচ্ছেন বন্দি জীবন।
মৃত আলতাছ মিয়ার পুত্র মোঃ আয়াছ (৩৭) জানান, গত ২২ সেপ্টেম্বর রাত ৯ ঘটিকার সময় আমার বোনের জন্য ওষুধ নিয়ে যাওয়ার পথে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী আবুল কালাম মৌলভী জাফর আব্দুল মজিদ ও ফারুক সহ ৮-১০ জন সন্ত্রাসী দল সাদ্দাম হোসেন (১৭) কে মারধর করে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের চেষ্টা করে। চিৎকার শুনে তাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসলে ভগ্নিপতি দিলদার মিয়াকে (৩৭) আক্রমণ করে। স্থানীয় বাসিন্দারা এগিয়ে এসে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের কবল থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে উখিয়া হাসপাতালে ভর্তি করে।ওই সময় তাদের নিকট হতে নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে ৮ জন সশস্ত্র রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় লিখিত সাধারণ ডায়ের করেছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সরওয়ার হোসেন ও কামাল উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন এ ঘটনা কে কেন্দ্র করে সশস্ত্র রোহিঙ্গাদের হুমকি ও ধমকির ভয়ে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে বসবাসরত স্থানীয় গ্রামবাসীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বলতে গেলে রোহিঙ্গা ও গ্রামবাসী মুখোমুখি অবস্থান করছে। গতকাল রবিবার স্থানীয় গ্রামবাসী ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে কথা কাটি সহ বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা দেখা দেয়। এ সময় সশস্ত্র রোহিঙ্গাদের গ্রেফতারের দাবিতে গ্রামবাসীরা যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। দিন দিন পরিবেশ উপ্তত্ত ফুঁসে উঠেছে স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে আরো জানান ‘রোহিঙ্গাদের কারণে আমাদের জীবন বন্দি হয়ে গেছে কাঁটাতারের বেষ্টনিতে। নিজের জমির ফসল আনতে গিয়েও একই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। এছাড়া রোহিঙ্গাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘাত, সংঘর্ষ, হামলা খুন ও গুমের ঘটনায় উদ্বেগ উৎকন্ঠায় থাকতে হয়।একই এলাকার ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রায়হান বলে, রোহিঙ্গাদের প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে স্কুলে যেতে হয়। রাজাপালং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তত চারশ’ পরিবার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাঁটাতারের বেষ্টনিতে বন্দি রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন।
ভুক্তভোগী স্থানীয় গ্রামবাসী ও পরিবারের সদস্যরা সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরআরআরসি সহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট ।
পাঠকের মতামত