পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে কাজ শুরু করার অনুমতি পেল নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি। সোমবার (৪ জুন) প্রতিষ্ঠানটিকে চূড়ান্ত লাইসেন্স দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে নগদ। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে নগদ জানায় সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকে নগদ লিমিটেড-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর এ মিশুকের হাতে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স হস্তান্তর করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক (বিআরপিডি) মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার।
নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি-এর চূড়ান্ত লাইসেন্সের কপি হস্তান্তরের সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার নগদের প্রতি শুভেচ্ছা জানান এবং নতুন এই আর্থিক সেবার সফল্য কামনা করেন। এখন থেকে অন্য সকল তফসিলি ব্যাংকের মতোই কাজ করবে নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি।
লাইসেন্স হস্তান্তরের সময় অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার, নির্বাহী পরিচালক (বিআরপিডি) সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পরিচালক (বিআরপিডি) মনিরুল ইসলাম এবং নগদ লিমিটেডের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আমিনুল হক, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ও চিফ এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স অফিসার শেখ শাবাব আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গতবছর ২৪ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার নগদসহ অন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়ার আগ্রহপত্র হস্তান্তর করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন চূড়ান্ত লাইসেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছিল। নির্ধারিত সেই সময়ের মধ্যে একমাত্র নগদ নির্দেশিত শর্তগুলো পূরণ করে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক নগদকে প্রথম ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স দিয়েছে।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক ডিজিটাল ব্যাংকের নীতিমালা প্রকাশ করলে পাঁচশতাধিক প্রতিষ্ঠান দেশে অত্যাধুনিক এই ব্যাংকিং সেবা চালু করতে ৫২টি আবেদন করে। তবে মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠানকে আগ্রহপত্র দেওয়া হয়।
ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স প্রাপ্তির পর নগদ লিমিটেড-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর এ মিশুক বলেন, “গত কয়েক বছর ধরেই আমরা বলছি, ক্যাশলেস লেনদেন নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট অর্থনীতির দেশে পরিণত করতে ডিজিটাল ব্যাংকের বিকল্প নেই। দেশের সিংহভাগ মানুষ এখনও আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বাইরে রয়েছে। তাদের নিয়ে কাজ করবে নগদ ডিজিটাল ব্যাংক। দেশের প্রথম ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে লাইসেন্স পাওয়াটা একটা ঐতিহাসিক ব্যাপার। এই সময়ে আমি নগদের সাড়ে নয় কোটি গ্রাহকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে শুভেচ্ছা জানাই।”
ডিজিটাল ব্যাংকের প্রস্তুতির বিষয়ে তানভীর এ মিশুক বলেন, “গ্রাহকদের আর ব্যাংকে আসতে হবে না, বরং ব্যাংকই মানুষের হাতে হাতে ঘুরবে। কোনো রকম জামানত ছাড়াই আমরা সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ প্রদান করব। পাশাপাশি ক্ষুদ্র সঞ্চয় স্কিম চালুসহ সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন লেনদেন সংক্রান্ত সকল সমস্যার সমাধান দেবে ডিজিটাল ব্যাংক। এই সব কাজের জন্য আমরা সকল প্রস্তুতি শেষ করেছি। খুব দ্রুত আমরা দেশকে অভিনব এই ব্যাংকিং সেবা দিতে শুরু করব বলে আশা করি।”
নগদ জানায়, মোবাইল আর্থিক সেবায় উদ্ভাবন আর অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা দেখিয়ে মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে নগদ সাড়ে নয় কোটি মানুষকে আর্থিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করে চমক দেখায়। কম খরচে গুণগত সেবা দেওয়ার মাধ্যমে বাজারে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করে প্রতিষ্ঠানটি। দ্রুত এগিয়ে চলার এই পরিক্রমায় দেশের দ্রুততম ইউনিকর্ন হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে স্বীকৃতিও পেয়েছে নগদ।।