গতি পাচ্ছে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজারের গুনধুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প। চলতি সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এ রেললাইন ও এর অবকাঠামো নির্মাণের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রেল কর্মকর্তারা। ছয় মাসের মধ্যে দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করতে পারলে আগামী বছরের এপ্রিল-মে নাগাদ নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন তারা। উখিয়া নিউজ ডটকম।এই প্রকল্পের অধীনে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ দশমিক ৮৩১ কিলোমিটার (কিলোমিটার) এবং রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্তের কাছে গুনধুম পর্যন্ত ২৮ দশমিক ৭৫২ কিলোমিটার মিলিয়ে ১২৯ দশমিক ৫৮৩ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ রেললাইন এবং অবকাঠামো তৈরি করা হবে। প্রথম দফায় চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন ও অবকাঠামো নির্মাণ হবে। খবর বিডিনিউজেরএই প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৩ হাজার কোটি টাকা দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। চট্টগ্রামের দোহাজারী-কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মফিজুর রহমান গতকাল বলেন, ‘কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। এ প্রকল্পের অধীনে রেলপথ নির্মাণের জন্য টেন্ডার এ মাসের মধ্যেই আহ্বান করা হবে। দরপত্রের প্রক্রিয়া শেষ হতে ছয় মাসের মতো সময় লাগতে পারে। সব ঠিকঠাক এগুলে আগামী বছরের এপ্রিল বা মে মাসে রেললাইন নির্মাণের কাজ শুরু করা যাবে।’
রেল কর্মকর্তারা জানান, পুরো প্রকল্প শেষ করতে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময় রাখা হলেও সব ঠিকঠাক মতো চললে ২০১৮ সালের মধ্যে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ কাজ শেষ করা যাবে। চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত রেললাইন ব্রিটিশ আমল থেকে থাকলেও কক্সবাজার পর্যন্ত লাইন নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের।
এডিবির অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন ‘টেকনিক্যাল অ্যাসিস্টেন্স ফর সাব-রিজিওনাল রেল ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফ্যাসিলিটি’ শীর্ষক কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের আওতায় প্রস্তাবিত এ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষাও শেষ হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ এডিবির সঙ্গে ঋণচুক্তি হবে বলে আশা করছেন রেল কর্মকর্তারা।
প্রসঙ্গত, ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে করিডোরের সঙ্গে সংযোগ এবং পর্যটক, সাধারণ মানুষের জন্য নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ পর্যটন শহর কক্সবাজারকে রেলওয়ের আওতায় আনতে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার হয়ে গুনধুম পর্যন্ত রেললাইন প্রকল্পের এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।
পূর্ব রেলের কর্মকর্তারা জানান, অর্থের সংস্থান না হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে এ প্রকল্পের কাজ পেছালেও এবারে আর সে সুযোগ নেই। প্রথম দফায় কক্সবাজার পর্যন্ত লাইন ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ হবে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ প্রকল্পের অধীনে রেল লাইনের পাশাপাশি অবকাঠামোর অংশ হিসেবে ৫২টি মেজর ব্রিজ, ১৯০টি মাইনর ব্রিজ ও কালভার্ট, ১১৮টি লেবেল ক্রসিং, দুটি আন্ডার পাস, হাতি চলাচলের জন্য ওভার পাসসহ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় বেশ কয়েকটি নতুন স্টেশন নির্মাণ করা হবে।