উখিয়া নিউজ ডটকম
প্রকাশিত: ০২/০৩/২০২৪ ১০:৫১ এএম , আপডেট: ০২/০৩/২০২৪ ১১:০৯ এএম

রাজধানীর বেইলি রোডের ‘কাচ্চি ভাই ভবনে’ লাগা আগুনে স্ত্রী ও সন্তানসহ প্রাণ হারিয়েছেন এনবিআরের কাস্টমস বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহজালাল উদ্দিন।

অথচ বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে খাগড়াছড়ি ও সাজেক ভ্যালী ঘুরতে যাওয়ার উদ্দেশ্য বাসা থেকে বেরে হয়েছিলেন তারা। রাজারবাগ থেকে বাসে উঠবেন এমন পরিকল্পনায় বাসের টিকিটিও কেটেছিলেন এই রাজস্ব কর্মকর্তা। বাসে চড়ার আগে ওই ভবনে কোনো একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে উঠেছিলেন তারা। সেখানেই আগুনে পুড়ে তাদের সবার মৃত্যু হয়েছে।

যদিও তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। তবে গতকাল শুক্রবার (১ মার্চ) রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে থাকা ৩ জনের মরদেহ শনাক্ত করেন শাহজালালের শ্বশুর মুক্তার আলম হেলালী। তারা হলেন শাহজালাল উদ্দিন, তার স্ত্রী গৃহিণী মেহেরুন্নেছা জাহান হেলালী (২৪) ও তাদের সাড়ে ৩ বছর বয়সী মেয়ে ফায়রুজ কাশেম জামিরা।

এ বিষয়ে শাহজালালের সহকর্মী সাব্বির বলেন, ‘শাহজালাল স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে কেরানীগঞ্জের বসুন্ধরা রিভারভিউ এলাকায় বসবাস করতেন। তিনি সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হিসাবে ঢাকার কেরানীগঞ্জের পানগাঁওয়ে কর্মরত ছিলেন। কক্সবাজার উখিয়া থানার পূর্ব গোয়ালিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবুল কাশেমের ছেলে শাহজালাল।’

‘আমি যতটুকু জানি তিনি অফিস থেকে তিন দিনের ছুটি পেয়েছিলেন। ছুটি কাটাতে পরিবার নিয়ে খাগড়াছড়ি ও সাজেক ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল তার। খবরটা শুনে আমরা বাকরুদ্ধ। কি বলব বলেন, এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি।’

বৃহস্পতিবার রাত রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে ভবনটিতে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভানোর পর হতাহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। আগুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। দগ্ধ ১২ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ভবনটিতে দুটি লিফট ও একটি সরু সিঁড়ি ছিল। তবে জরুরি ফায়ার এক্সিট ছিল না। ভবনে অগ্নিনিরাপত্তা ও লোকজন বের হওয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় বেশি প্রাণহানি ঘটেছে।

বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লেগেছে, সেটি সাত তলা। ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামে খাবারের দোকান ছিল। তৃতীয় তলায় একটি পোশাকের দোকান ছাড়া উপরের তলাগুলোতেও ছিল খাবারের দোকান। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে এগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় হতো। অনেকেই পরিবার নিয়ে সেখানে খেতে যেতেন।

পাঠকের মতামত