প্রকাশিত: ০৫/০৬/২০২০ ৭:৪৭ এএম

সুজাউদ্দিন রুবেল :
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে পুরো কক্সবাজার জেলাকে রেড, ইয়েলো ও গ্রীন জোনে ভাগ করা হচ্ছে। এর মধ্যে কক্সবাজার পৌর এলাকায় সংক্রমণের হার বাড়ায় রেড জোনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এছাড়াও ৮টি উপজেলায় করোনা সংক্রমণের হার বিবেচনা করে রেড, ইয়েলো ও গ্রীন জোনে ভাগ করা হবে। এরপর ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা কেন্দ্রিক ৩টি জোনে ভাগ কঠোরভাবে লকডাউনের আওতায় আনা হবে। এটি আগামীকাল শনিবার থেকে এই জোন ভিত্তিক লকডাউন কার্যক্রম শুরু হবে।

বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশরাফুল আফসার ও পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (০৪ জুন) সকালে ও রাতে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন নেতৃত্বে ভিডিও মিটিং এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এব্যাপারে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, জেলায় করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় তারজন্য একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই কমিটির বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই কমিটি করোনা সংক্রমিত এলাকা চিহ্নিত করবে এবং ওইসব এলাকাকে রেড, ইয়েলো ও গ্রীন জোনে ভাগ করবে। এই কমিটির রিপোর্ট দেয়ার পর করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কার্যক্রম শুরু হবে।

তিনি বলেন, প্রথমে রেড জোনগুলোকে দু’সপ্তাহের জন্য লকডাউন করা হবে। যদি সংক্রমণ কমে তাহলে লকডাউন তুলে ফেলার চিন্তা করা হবে। যদি না কমে তাহলে ওইসব এলাকা লকডাউনের মেয়াদও বাড়ানো হবে। লকডাউনের ক্ষেত্রে রেড জোন এলাকায় শুধুমাত্র একটি সড়ক চালু থাকবে; বাকি সব সড়ক বন্ধ করে দেয়া হবে। যে একটি সড়ক চালু থাকবে তাতে শুধুমাত্র জরুরি প্রয়োজনীয় গাড়ি চলাচল করতে পারবে। এছাড়াও কিছু মুদির দোকান ও ফার্মেসী খোলা থাকবে; বাকি সবকিছু বন্ধ রাখার ব্যবস্থা হবে।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, রেড জোন চিহ্নিত এলাকায় লাল পতাকা টাঙ্গানো হবে। এরপর এলাকায় পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনী কঠোর অবস্থান নেবে। আইন অমান্যকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর হবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। কারণ মানুষ সচেতন নয়; এই সচেতনতা না থাকার কারণে কক্সবাজারে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। ফলে আমরা চাই; দ্রুত যাতে কক্সবাজারে করোনার সংক্রমণ কমে যায়। তাই সবার সহযোগিতা কামনা করছি।

এদিকে জানা যায়, কক্সবাজার পুরো পৌরসভা রেড জোন, তাছাড়া কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড রেড় জোনের আওতায় আসছে। এই সব রেড জোন কে লকডাউন ঘোষণা করা হবে ১৪ দিনের জন্য। সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ, ঔষুধ ও মুদির দোকান ছাড়া সকল দোকান পাঠ বন্ধ থাকবে। কাঁচা বাজার খোলা থাকবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। প্রসাশনের পাশাপাশি ওয়ার্ড কমিশনারদের আহ্বায়ক করে রাজনৈতিক, সামাজিক নেতৃবৃন্দের সমন্বয় এ স্থানীয় লকডাউন বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হবে। সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে। প্রথমে সতর্ক, না মানলে কঠোর হবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশরাফুল আফসার বলেন, কক্সবাজারে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ৩টি জোন; যেমন রেড, ইয়েলো ও গ্রীন জোনে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে আগামীকাল শনিবার থেকে জোন ভিত্তিক লকডাউন কার্যক্রম শুরু হবে। কক্সবাজার পৌর এলাকায় করোনার সংক্রমণ বাড়ায় পুরো পৌর এলাকাকে রেড জোনের আওতায় আনা হচ্ছে। এরপর ৮টি উপজেলায় যেখানে সংক্রমণের বেশি সেখানে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ভাগ করে রেড জোন, যেখানে একটু কম সেখানে ইয়েলো জোন ও যেখানে সবচেয়ে কম সেখানে গ্রীন জোনে ভাগ করা হবে। এরপর সেখানে কঠোরভাবে লকডাউন করে করোনা সংক্রমণ ঠেকানো হবে। এক্ষেত্রে সবারই সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও তিনি।

গত ৬৩ দিনে মোট ৭৩৫১ জন সন্দেহভাজন রোগীর করোনা ভাইরাস টেষ্ট করা হয় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে স্থাপিত ল্যাবে। তারমধ্যে ৯৫৮ জনের রিপোর্ট করোনা পজেটিভ পাওয়া গেল। এতে কক্সবাজার জেলার রয়েছে ৮৭৭ জন। এর মধ্যে মহেশখালীতে ৩৪ জন, টেকনাফে ৪১ জন, উখিয়ায় ১১০ জন, রামু ৫৩ জন, চকরিয়ায় ১৮৯ জন, কক্সবাজার সদরে ৩৬৪ জন, কুতুবদিয়ায় ৩ জন এবং পেকুয়ায় ৪৭ জন রয়েছে। এর সাথে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৩৫ জন রোহিঙ্গা। অন্যান্যরা কক্সবাজার জেলার নিকটবর্তী বান্দরবান জেলার বাসিন্দা এবং চট্টগ্রামের চাঁদগাঁও, সীতাকুঞ্জ, লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ার বাসিন্দা।

পাঠকের মতামত

টেকনাফের দুই কিশোরকে আরাকান আর্মি থেকে ফেরত আনলো বিজিবি

মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মি’র হাতে আটক কক্সবাজারের টেকনাফের দুই কিশোরকে ফিরিয়ে এনেছে বর্ডার ...

মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপে ম্যানগ্রোভ নিধন বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ

মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া দ্বীপে রয়েছে বিস্তৃত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট। ১৯৯৯ সালে সরকার সোনাদিয়া দ্বীপকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন ...